somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টিবিলাস.....

২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-কি ব্যাপার...তাকিয়ে আছো কেন!....
-দেখছি.....
-কি!!!!....
-বৃষ্টিতে ভিজলে তোমাকে এত সুন্দর লাগে কেন.....!!!
-হু...হইছে.!!!!পাম দিতে হবে না।
-সত্যি.....ঠিক যেন কোন মায়াবী কন্যা....!!!
-তাই.....
বলেই ফিক করে হেসে দিল।সেই কি হাসি!!!!এই হাসি দেখার জন্যও মনে হয় অনন্তকাল বসে থাকি।
ওর সাথে দেখা হইছিল এমন এক বৃষ্টিময় দিনে।আমার বরাবরি বৃষ্টি পচ্ছন্দ নয়।মেইন কারন রাস্তার সমস্যা।দেখা গেল একটু বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা পানি জমে যায়।আর বেশি বৃষ্টি হলেতো কথাই নাই।তারপরো কিছুই করার নাই।কাজ তো করতেই হবে।
টিউশনি তে যাওয়ার আগে ছাতা নেই নি।আমি অনেক দেখলাম যখন ছাতা নিয়ে বের হই,তখন আর বৃষ্টির দেখা পাইনা।যেদিন মিস দেই,সেদিনই আমাকে ভিজিয়ে ছাড়বে।তাই বৃষ্টির প্রতি খানিকটা বিরক্ত আমি।তারওপর তো জ্বর আছেই।
তো সেদিনও টিউশনি থেকে বের হলাম এবং বৃষ্টি শুরু হয় আর ছাতা আনি নি।তাই বিরক্ত হয়ে ছাউনির নিচে দাড়িয়ে থাকলাম।খেয়াল করলাম আমার কিছু দুরেই একটা মেয়ে বৃষ্টিতে লাফালাফি করছে।রাস্তায় তখন তেমন মানুষজন ছিল না।আমি মেয়েটির কান্ড দেখে হেসে ফেল্লাম।
মেয়েটি আপন মনে ভিজতেছে।আমিও আপন মনে তার আনন্দ দেখতেছি।তখন আমারো ইচ্ছা করছিল যে বৃষ্টি তে ভিজি।কিন্তু সল্পক্ষনের আনন্দের জন্য তো আর শরির খারাপ করার মানে নাই।তাই চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম।
এভাবে কতক্ষন পর দেখলাম মেয়েটা একটা রিক্সা নিয়ে চলে গেল।আমিও বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম।কিন্তু বাসায় গিয়ে আর মেয়েটির কথা ভুলতে পারলাম না।
ঠিক তার দুইদিন পর আবারো সেইম জায়গায় মেয়েটিকে দেখলাম।অবশ্য সেদিন ছাউনির সামনে দাড়িয়ে ছিল।তাই ভাবলাম আজ একটু কথা বলি
-আজকে বৃষ্টিতে ভিজবেন না....?
এমন প্রশ্নে হয়তো কেউ অবাক হতে পারে কিন্তু মেয়েটা অবাক হয়নি।বিষন্ন ভাব নিয়ে বল্ল
-নাহ!!!!!শরির খারাপ......
মেয়েটার কথায় মনে হল আমি মনে হয় তার কত পরিচিত।
-আফসোস....!!!আজকের এত সুন্দর বৃষ্টি মিস করছেন।
-কিছু করার নাই।আজকে ভিজলে আম্মু বকা দিবে।বাই দা ওয়ে,আমি কি আপনাকে চিনি......!!!!
-ইয়ে মানে...না.......
-তাহলে....এত প্রশ্ন করছেন কেন......?
-না মানে......সেদিন আপনাকে দেখেছিলাম ভিজতে।আপনার বাচ্চামি দেখে আমার খুব হাসি পেয়েছিল।
-ও হ্যালো......এখানে বাচ্চামির কি হল...!!!!!আর আমার এমন কোন বয়স হয়ে যায় নাই,ওকে......?
-হুম.....আমি নিল....
-তো......?
-আপনার টা......?
-আজিপ....আমার নাম কেন বলবো.......!!!!
-না বলতে চাইলে সমস্যা নাই....
-লামিয়া......
-বাহ!!!!!খুব সুন্দর নাম।বাট নামের থেকে কিন্তু আপনি বেশি কিউট......
-এক্সকিউজ মি....ফ্লাট করছেন.....?
-না......যেটা সত্য তাই বল্লাম।আসি.......
বলেই চলে আসলাম।আমি জানি মেয়েটি অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছে।
মেয়েটিকে কেন যেন খুব ভাল লেগে গেল।আমি চাচ্ছি আমাদের আবার দেখা হোক কোনো এক বৃষ্টিময় দিনে।

.
-কি এত ভাবছো........!!!!!
-হু...!!!!!!!!নাহ.....কিছু না।বৃষ্টি কি থেমেছে.....?
-কেন তোমার চোখ নাই.....?
-আছে তো.....কিন্তু আমার চোখ তো তোমার রুপের কাছে হারিয়ে গেছে।
-ধ্যাত.....
-ধুর......
আমি ভেবেছিলাম তার পরেরদিন হয়তো দেখা হবে।কিন্তু এক বালতি আফসুস....দেখা হয়নি।মেয়েটা কি তাহলে শুধু বৃষ্টির দিন আসে.....!!!!আল্লাহ...তারাতারি বৃষ্টি দাও।
এক সপ্তাহ ওয়েট করলাম।বৃষ্টিও আসে না,মেয়েটাও আসে না।কি যে করি!!!!!!!
ঠিক তারপরের দিন মেয়েটাকে দেখলাম।আমার যেন প্রান ফিরে আসছে।তারাতারি গেলাম মেয়েটার কাছে।
-আপনি কি বৃষ্টি না হলে এখানে আসেন না....!!?(হাপাতে হাপাতে)
-মানে কি...!!!আর আপনি হাপাচ্ছেন কেন.....পুলিশ তাড়া করছে......!!!?
-আজাইরা কথা বাদ দেন।কাজের কথা বলেন...
-এক্সকিউজ মি.....আপনি কে.....?
-ও......!!!!এক সপ্তাহের মধ্যে ভুলেও গেছেন...!!!
-ও...!!!!!! আপনি সেই দিনের পাবলিক!!!!!!
-যাক.......চিনতে পারছেন তাহলে......এবার বলেন....কই ছিলেন এতদিন.....
-সেটা আপনাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করছি না।
-আপনার ব্যবহারে কষ্ট পাইলাম।
-মানে কি!!!!!আপনি কি আমার ফ্রেন্ড,আত্নীয়-স্বজন......?
-কাছের মানুষ....
-মানে.....?
-আমি আপনাকে ভালবাসি....
-হোয়াট!......আপনার সাহস তো কম না....!!!
-আরে প্রপোজ করতে গেলে একটু সাহস দরকার লাগে।আমি ভিতু টাইপের ছেলে না,ওকে....?
-আপনাকে যে কি করতে ইচ্ছে করছে....?
-কিস করবা......?
-আপনার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি।
বলতে বলতেই ফের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল....
-চল.....বৃষ্টিবিলাস করি....
মেয়েটা রাগে কটমট করে তাকালো...
-ও আচ্ছা...আরেকদিন।ওকে।পাওনা থাকলাম।
-আপনাকে আমি দেখে নেব।
-নাম্বার টা দিয়ে যাও।নাহলে খোজ নিবে কিভাবে.....!!!!
মেয়েটা আর দাড়ালো না।ওর যাওয়ার পর আমার হুশ ফিরে এল।আমি বুঝলাম না আমার দ্বারা এত কিছু কেমনে সম্ভব......!!!!!!!!
ভয়ে ওরসাথে ৩ দিন দেখা করিনি।ভাবলাম আমারে হয়তো টাপলাবাজ মনে করছে।কিন্তু হায়!!!!!!৪ দিনের দিন মেয়ের সাথে কেমনে জানি দেখা হয়ে গেল
-এই যে মি.....
আমি না শোনার ভান করে চলে যেতে লাগলাম
-এই যে....
-.......
-ওই... ওই....
বলতে বলতে আমার সামনে এসে হাজির
-সমস্যা কি!!!!!!!!"
-কোনো সমস্যা নাই..!.(ভয়ে ভয়ে)
-ডাক দিলাম না শোনার ভান করলেন কেন.......?
-বিশ্বাস আমি শুনি নাই....
-চল আমার সাথে.....
খাইছে....মেয়ে এখন তুমিতে গেছে।এখন নিশ্চয়ই পেদানি দিবে
কিন্তু ধারনা ভুল।আমাকে নিয়ে এল এক লেকের পাশে।
-বস
আমিও সুবোধ বালকের মত বসে পড়লাম।মেয়েটার চেহারা আজকে খুবই মায়াবী লাগছে।কেমন যেন এক বিষন্ন ভাব
-আমাকে এখানে আনার কারন জানতে পারি......?
-কেন খারাপ লাগছে......!!!!!?
-না মানে....
-তাহলে চুপ করে বসে থাক
দুজনেই খানিকক্ষন নিরবতা।আমি পকেট থেকে লাভ ক্যান্ডি বের খেতে লাগলাম।লামিয়া আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো
-ভদ্রতাও শেখো নাই....!পাশে একটা মেয়ে বসে আছে........আর তুমি চকলেট খাচ্ছ.........!!!
-না মানে.....চকলেট দিয়ে সময় পার করি
-ও..তাই না..!!!!!!?
-হুম
-তুমি সেদিন কি বল্লা.....?
আমি জানতাম এই কথাটাই তুলবে
-মনে নাই
-এই কয়দিন কইছিলা.......?
-কেন.....মিস করছিলে.......?
-(মুখ ঘুরিয়ে)নাহ......!!!
বৃষ্টি আসার আবার সংকেত পেলাম।
-আমি কিন্তু কিছু পাওনা ছিলাম...!!!!
-কি!!!!!!!
-বৃষ্টিবিলাস
-ইশ......শখ কত.....?
-ভিজবা না.....?
-নাহ!!!!!!
-তাহলে আমি গেলাম
-এই......!!!!কই যাও......
-.......
-আচ্ছা.....আচ্ছা.....ভিজবো....
-প্রথমে না করছো কেন.....এরজন্য আমাকে কিছু দিতে হবে.....
-আবার কি!!!!!
-কিস......!!!
-কিহ!!!!মাইর খাবা......
আমি আস্তে আস্তে ওর সামনে যেতে থাকলাম
-এই একদম না.......
আমি ওর কাধে হাত রাখলাম।লামিয়া লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেল্ল
-ভালবাসো......?
-জানি না....
-সত্যিই না!.....!!!
-না!...!
-আমি বাসি.......এবার বাসবে.......
-অনেক ভালবাসতে হবে কিন্তু.....
-তুমি যতটুকু বাসবে তার থেকেও বেশি
বলেই আরেকটু সামনে গেলাম শীতল অনুভুতির জন্য....


.
-এই....কি হইলো.....
-একটা দিবা....
-মানে কি!!!!!!!!
-সেদিনের মত
মেয়েটি বুঝতে পেরেছে।হাসি দিয়ে বল্ল
-মাইর খাবা.......
-ওইটা যদি দাও.....মাইর খাইতেও রাজী
-তাহলে চল বৃষ্টিতে ভিজি.....
-দিবা তো.......!!?
-দেখা যাক
ঝুম বৃষ্টি পড়ছে।আমি আর লামিয়া হাত ধরাধরি করে বৃষ্টিতে ভিজছি।মেয়েটার মায়াবী চেহারা আরো মায়াবী হয়েছে।আমি অপেক্ষায় আছি শীতল অনুভুতির জন্য
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×