এই হেমন্তেও গণি মিয়ার মুখে হাসি নেই
আদি ও অকৃত্রিম দুঃখ নিয়ে বসে আছে
সে পউষের ফসল বিহীন মাঠে।
কোনো দূর গাঁয়ে অবসন্ন সংগীতের মত
মাঝে মাঝে বেজে ওঠা নবান্নের তাল
তার কানে এসে লাগে।
তবুও সে বসেই থাকে নির্বিকার
নাড়ার বিচ্ছেদ বুকে নিয়ে উত্তরের
হিমেল বাতাসে বুক পেতে।
আমরা যারা তার মুখে হাসি ফুটাবো বলে
চেচিঁয়ে হররোজ মাথায় তুলছি পাড়া
তাদের শহরে এমন দিনে বটবৃক্ষ তলে
জমেছে নবান্ন মেলা রকমারী আয়োজনে
আর্কিটাইপ থেকে তুলে এনে নানান উৎসব
যেখানে নগর নারী ও পুরুষ
পোশাকে নবান্ন এঁকে ইতস্তত ঘুরে ফিরে
গান গায় প্রাণের আবেগে আর ভাবে
গ্রামেও বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে খুশি
নবান্নের তাল
ঘ্রাণেন্দ্রিয় জুড়ে পিঠা ও পুলির স্বাদ ধূলার বাতাসে ওড়ে।
শুধু গণি মিয়া জানে !
আসলে কি জানে ?
আবহমান বাংলার নবান্ন উৎসব আজও
নাড়ার বিচ্ছেদ বুকে নগ্ন পড়ে আছে পউষের মাঠে
সেদিকেই অপলক তাকিয়ে আছে সে
পূর্ব পুরুষের স্মৃতি থেকে উঠে আসা নবান্নের তাল
আর্কিটাইপের ধরনে বাজে তার কানে
পরের জমির তরে হাহাকারে ভরে ওঠে বুক
হায় গণি মিয়া কি নিদারুণ
ফসল বিহীন মাঠে স্বপ্নহীন চেয়ে থাকা অপলক।