আগেও বলেছি, পুনর্ব্যক্ত করছি: কোনও একটি দেশে/ভূখণ্ডে, কোনও বিশেষ একটি দিনে যতজন সংক্রমিত হচ্ছে, তাদের প্রায় ৯০-৯৫% কে শনাক্ত করতে চাইলে, আগেরদিন যতজন সংক্রমিতকে শনাক্ত করা হয়েছে, তার অন্তত ১০গুণ নমুনা পরীক্ষা করতে হয়; সেটা না-করা হলে, অধিকাংশ সংক্রমিত ব্যক্তিই অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে অবস্থান করতে থাকে। বাংলাদেশে, দৈনিক সংক্রমিত মানুষের কত অংশকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে এবং কত অংশ অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে অবস্থান করছে, তার মোটামুটি একটা চিত্র ফুটিয়ে তুলতে নিম্নে ৫টি দিনের প্রকৃত বাস্তবতা নিরূপন করা হলো:
২৫ জুলাই ২০২০:
আগের দিন [২৪ জুলাই] সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিলো ২,৫৪৮টি; কাজেই, পরের দিন প্রায় সকল সংক্রমিতকে [৯০-৯৫%] শনাক্ত করতে চাইলে, নমুনা পরীক্ষা করতে হবে ন্যূনতম ২৫,৪৮০টি; ২৫ জুলাই ১০,৪৪৬টি নমুনা পরীক্ষা থেকে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২,৫২০টি। প্রয়োজনীয় মোট নমুনা পরীক্ষার তুলনায় এদিন পরীক্ষা করা হয়েছিলো ৪১%। এতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২,৫২০টি। অতএব, ওই দিন মোট সংক্রমণ/[সংক্রমণের ৯০-৯৫%] ছিলে = ৬,১৪৬টি। সরলার্থ হলো, ২৫ জুলাই তারিখে, অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাওয়া সংক্রমিতের সংখ্যা ৩,৬২৬।
২৪ জুলাই ২০২০:
একই গাণিতিক হিসাবে, শনাক্ত হয়েছিলো সম্ভাব্য মোট সংক্রমিতের ৪২%। অতএব, সেদিন সম্ভাব্য মোট সংক্রমণ ছিলো = ৬,০৬৭টি।২৪ জুলাই তারিখে, অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাওয়া সংক্রমিতের সংখ্যা ৩,৪৯১।
২৩ জুলাই ২০২০:
একই গাণিতিক হিসাবে, শনাক্ত হয়েছিলো সম্ভাব্য মোট সংক্রমিতের ৪৫%। অতএব, সেদিন সম্ভাব্য মোট সংক্রমণ ছিলো = ৬,৩৪৭টি।২৩ জুলাই তারিখে, অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাওয়া সংক্রমিতের সংখ্যা ৩,৩২৩।
২২ জুলাই ২০২০:
আগের দিন [২১ জুলাই] সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিলো ৩,০৫৭টি; কাজেই, পরের দিন প্রায় সকল সংক্রমিতকে [৯০-৯৫%] শনাক্ত করতে চাইলে, নমুনা পরীক্ষা করতে হবে ন্যূনতম ৩০,৫৭০টি; ২২ জুলাই ১২,০৫০টি নমুনা পরীক্ষা থেকে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২,৭৪৪টি। প্রয়োজনীয় মোট নমুনা পরীক্ষার তুলনায় এদিন পরীক্ষা করা হয়েছিলো ৩৯.৪২%। এতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২,৭৪৪টি। অতএব, সেদিন মোট সংক্রমণ/[সংক্রমণের ৯০-৯৫%] ছিলো = ৬,৯৬১টি। সরলার্থ হলো, ২২ জুলাই তারিখে, অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাওয়া সংক্রমিতের সংখ্যা ৪,২১৭।
২১ জুলাই ২০২০:
একই গাণিতিক হিসাবে, শনাক্ত হয়েছিলো সম্ভাব্য মোট সংক্রমিতের ৪৪%। অতএব, সেদিন সম্ভাব্য মোট সংক্রমণ ছিলো = ৬,৯৪৮টি।২১ জুলাই তারিখে, অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাওয়া সংক্রমিতের সংখ্যা ৩,৮৯১।
এ গাণিতিক চিত্র থেকে, দেখা যাচ্ছে: দেশে মোট সংক্রমণের ৩৯-৪৫% শনাক্ত হচ্ছে; বাকিরা অচিহ্নিত আকারে জনগোষ্ঠীতে থেকে যাচ্ছে। এটাই মহামারী নিয়ন্ত্রণের সবচে ক্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রয়োগের অনিবার্য ফলাফল এই যে, করোনা যতক্ষণ না স্বেচ্ছায় আমাদেরকে ছেড়ে না যাচ্ছে, আমরা মহামারীটিতে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবো না।
বলা ভালো, এটি একটি সম্ভাব্য হিসাব; যা পরিস্থিতি অনুমান করতে সাহায্য করবে। এটি চূড়ান্ত/ প্রমাণিত কোনও পরিসংখ্যান নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫২