সাঁইজি’র একটা গানের বাণী মোটামুটি এ-রকম:
‘‘গেঁড়ে গাঙ্গের ক্ষ্যাপা
হাপুর হুপুর ডুব পড়িলে।
ইবার মজা যাবে বুঝা
কার্তিকের ওলানীর কালে।।
কুঁতপি যখন কফের জ্বালায়
তাবিজ তাগা বাঁধবি গলায়।
তাতে কি হবে ভালায়
মস্তকের জল শুষ্ক হলে।।
বায় চালা দেয় ঘড়িঘড়ি
ডুব পাড়িস কেন তাড়াতাড়ি।
প্রবল হবে কফের নাড়ি
যাতে হানি জীবন মূলে।।
ক্ষান্ত দে রে ঝাঁপই খেলা
শান্ত হও রে, ও মন ভোলা।
লালন কয়, আছে বেলা
দেখলি নারে চক্ষু মেলে।।’’
........................................................................
ওলানী শব্দটিকে অনেকেই কফ-কাশির অনুষঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করেছেন; কিন্তু বিষয়টি ঠিক এরূপ নয়।
হুলো-কুকুর যদি ভাদ্র-আশ্বিনে স্বীয় বরাদ্দের অতিরিক্ত প্রমীলা-কুকুরের সাথে যৌন-সংসর্গে মেতে ওঠে, তখন, কার্তিকে গিয়ে দেখা যায়: তার শক্তিকেন্দ্রের অণ্ড দুটো ফুলে গাভীর ওলানের মতো হয়ে যায়। ওতে রস জমে। মাছি ভনভন করতে থাকে। বিপাকে পড়া হুলো কুকুর, জিহ্বা দিয়ে অণ্ডদ্বয় চাটে, মাছি তাড়ানোর চেষ্টা করে এবং কুঁই কুঁই করতে থাকে। অতিরিক্ত ভোগের কারণে, হুলো-কুকুরের এই যে দুর্দশা; এটাকেই কার্তিকের ওলানী বলে। বিচি ফুলে ওলানের মতে হয়ে যায় বলেই, এই সমস্যাটাকে ওলানী বলা হচ্ছে। কার্তিকে ঘটে বলে: কার্তিকের ওলানী
ডোবার জলে অতিমাত্রায় ডুব পেড়ে মানুষ যদি কফ-কাশি বাধিয়ে ফেলে, তারও ভোগান্তির শেষ থাকে না। কুকুরের ক্ষেত্রে কার্তিকের ওলানী যেরূপ ভোগান্তি আনে, অনেকটা সেরূপ ভোগান্তির তুলনা দিতেই, সাঁইজি দূরান্বয়ী উপমাস্বরূপ, ওলানীর অনুষঙ্গটি প্রয়োগ করেছেন।
এটাই ব্যাপার।
#RahmanHenry; #রহমানহেনরী
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪৮