এই প্যাকেজে যেতে হলে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনি ঘুরতে যাচ্ছেন আরাম আয়েস করতে নয়। আমার প্যাকেজ বুডীমারী সীমান্ত থেকে বুড়ীমারী সীমান্ত পর্যন্ত প্রযেয্য! সাধারনত চারজনের জন্য এই প্যাকেজ বেশী হলে আরো ভালো!!
যাই হোক ইন্ডিয়ার ভিসা রেডী করে বাসে চড়ে বসুন রাতের বেলায় এবং সকাল বেলা বুড়ীমারী এসে পড়ুন। এখানে ট্রাভেল ট্যাক্স+স্থল বন্দর ট্যাক্স+ইমিগ্রেশন ঘুস+ অন্যান্য = ৮৫০ টাকার বেশী লাগবে না। ৫০০০থেকে খরচ হয়েছে ৮৫০ তাহলে আপনার কাছে থাকলো ৪১৫০ টাকা। এখান থেকে ১০০ টাকা দিবেন ইন্ডিয়ান কাস্টম এবং ইমিগ্রেশন এর জন্য ৫০ -৫০ করে। বাসের লোক বেশী দাবী করতে পারে কিন্তু এক টাকাও বেশী দিবেন না!! এবার টাকা ভাঙিয়ে রুপী করে নিন তাতে পাবেন ৩১৬০(+-১০/১২)টাকা।
সব শেষ করে বৈধভাবে আপনি ইন্ডিয়ায় ঢুকলেন। এবার দেখবেন শিলিগুড়ী যাবার অনেক ট্যাক্সি এবং টাটা সুমো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে আপনাকে নিয়ে যাবার জন্য খবরদার ঐদিকে ভুলেও পা বাড়াবেন না। এখানে গেলে একজনে ২০০/৩০০ টাকা খরচ হবে। তা আপনি কিভাবে যাবেন নিশ্চয় হেটে নয়। একটু হাটলে খারাপ কি। ওখানে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন চ্যাংড়াবান্ধা বাজার কোনটা দেখিয়ে দেবে সবাই। হেটে গেলে বড়জোর ৫ মিনিট লাগবে। ওখান থেকে অটোগাড়ী মানে আমাদের দেশের মতো ব্যাটারী গাড়ীতে ১০ টাকা দিয়ে চলে যান চ্যাংড়াবান্ধা বাইপাসে।
এখান থেকে শিলিগুড়ীর বাস খুব সহজেই পাওয়া যায় ভাড়া ৫০ টাকা মাত্র। একটা কথা বলতে ভুলে গেছি টাকা ভাঙ্গানোর পর সব কিছু কিন্তু রুপীতে খরচ করছি যদিও আমি টাকা বলছি। শিলিগুড়ীতে যেতে প্রায় কম বেশী ২.৫ ঘন্টা লাগবে। এখানে নামার সাথে সাথে আপনাকে নিয়ে শুরু হবে টানা হ্যাচড়া!! দালাল আর দালাল এখানে। একটু এদের পাশ কাটিয়ে একটু কস্ট করে কোনো পুলিশকে জিজ্ঞাসা করুন দার্জিলিঙের গাড়ী কোথা থেকে ছাড়ে। দার্জিলিঙে কোনো বাস চলে না সব জীপ টাইপের টাটা সুমো গাড়ী। দার্জিলিঙের স্ট্যান্ডের পাশেই দেখবেন কিছু বাসের কাউন্টার আছে এদের কাছে সরাসরি গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন দার্জিলিঙে কমদামে হোটেল আছে নাকি খাবার সহ। প্রতিদিন ভাড়া ৪০০ টাকা খাওয়া সহ নিবেন। এর বেশী যাবেন না!! এরা বেশী চাইলেও বলেবন আমাদের কাছে টাকা নাই এর বেশী দেওয়া সম্ভব না। আর একটা কথা এইসব কাউন্টারে কোনো দালাল নিয়ে যাবেন না তাহলে কিন্তু হোটেলের দাম বেড়ে যাবে। হোটেলের ঝামেলা শেষ করে উঠে পরুন গাড়ীতে ভাড়া ১৫০/১৮০ টাকার মতো।
এখানে কিছু খেয়ে নিন ৪০/৫০ টাকার মধ্যে। পাশে সবজী দিয়ে ভাত খেতে পারেন ৩০ টাকার মধ্যে পেট চুক্তি। খেতে এই জন্য বললাম কারণ এখান থেকে দার্জিলিঙের রাস্তা প্রায় ৩/৩.৫ ঘন্টার মতো।
এবার হোটেলে চলে যান রাত ঘুমিয়ে সকালে উঠতে হবে। তবে যেই হোটেলে উঠবেন সেই হোটেলের লোকজনের মাধ্যমে সাইট সিনের গাড়ী ভাড়া করে নিবেন পরের দিন ঘুরার জন্য। শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে নিলে একজনের ৩০০ টাকার বেশী পড়বে না। দুপুরের মধ্যে ঘুরে এসে হোটেলে পেট চুক্তি খেয়ে নিবেন। এখানে সাধারনত প্রত্যেকটা হোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যাবস্থা আছে। এতে খরচ অনেক কমে যাবে। একটু চিন্তা করুন ৪০০ টাকা দিয়ে থাকা খাওয়া কিন্তু অনেক কম তাও তিন বেলা।
এবার এখানে দুইদিন ঘুরে হোটেল ছেড়ে চলে আসুন মিরিখে। দার্জিলিং থেকে মিরিখের ভাড়া ৮০ টাকা। যেতে ২ ঘন্টার মতো লাগে। এখানে কিছুক্ষণ ঘুরে দুপুরের খারার ১০০ টাকার মধ্যে সেরে শিলিগুড়ির দিকে রওনা দিন। মিরিখ থেকে শিলিগুড়ির ভাড়া ১০০ টাকা। এবার আবার আগের মতো শিলিগুড়ি থেকে চ্যাংড়বান্ধা চলে যান। সেখানে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রাশন+কাস্টমস=১০০ টাকা এবং এইপাড়ে বাংলাদেশে ১৫০/২০০ টাকার মতো লাগবে।
এবার নিজ দেশে এসে দেখুন কয় টাকা খরচ হয়েছে!!
ব্রিঃ দ্রঃ এই প্যাকেজ শুধু মাত্র আমার মতো কাঞ্জুসদের জন্য!!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৬