স্লিম হবার অনেক উপকারিতা, আপনার নিজের এমনকি আপনার চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানেরও । কি ? চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের আবার কি লাভ ? তাহলে শুনুন – ভারতের “গো এয়ার (Go Air)” নামক এয়ার লাইন্স প্রতিষ্ঠানটি তাদের এয়ারলাইন্স গুলোতে শুধুমাত্র মেয়ে এটেনডেন্টদের নিয়োগ দিচ্ছে । কারণ মেয়েরা পুরুষদের তুলনায় ওজনে হালকা । আর শুধুমাত্র হালকা ওজনের মেয়ে এটেনডেন্ট নিয়োগ দেবার ফলে তারা বছরে পাঁচ লাখ ডলার মূল্যের ফুয়েল সাশ্রয় করে থাকে ।
বলি, এভাবে চলতে থাকলে হয়ত দেখা যাবে একদিন এয়ারলাইন্সগুলো মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের টিকেটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে । কারণ ? ছেলেদের জন্য বেশী ফুয়েল খরচ হয় যে ভাই !
জাপানী বানর বলে কথা !
অনেক উন্নত দেশ জাপান । জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, আবিষ্কারে, শিক্ষায়, নম্রতায়, ভদ্রতায়, সোজা কথা সবদিক দিয়ে । তো তোমাদের ঐ ম্যাকাক বানরগুলোকে (Macaque monkey) অন্য শিক্ষা তো দিলে । একটু নম্রতা, ভদ্রতা শিক্ষা দিতে পারলে না ? কি বললেন? এরকম কথা কেন বললাম ? তাহলে বলি, শুনেন – ঐ ম্যাকাক বানরগুলো এমন বদমাশ যে, আপনি যখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবেন, আপনার ওয়ালেট বা পার্স কিভাবে চুরি বা ছিনতাই করতে হয় তা ওরা ঠিকই জানে । শুধু জানে বললে ভুল হবে, ওটার মধ্যে রাখা কয়েনগুলো ওরা ঠিকই বের করে নিতে পারে (খেয়াল রাখবেন, শুধু কয়েনগুলো), এবং কয়েনগুলো বের করেই শুধু ক্ষান্ত হবে না, ওগুলো নিয়ে ভেন্ডিং মেশিনে যাবে, আর সেখানে কয়েনগুলো প্রবেশ করিয়ে স্ন্যাক্স কিনে খাবে । এবার আপনিই বলেন, এসব সহ্য করা যায় ?
ভেন্ডিং মেশিনে শুধু বাঁদরই না কিছু মানুষ বাঁদরও যায়
তো ভেন্ডিং মেশিনে শুধু বাঁদর গুলোই যায়, তা না কিন্তু ! ভেন্ডিং মেশিনে কিছু মানুষ রুপি বাঁদরও যায় । আরে বাবা, আমি স্ন্যাক্স এর ভেন্ডিং মেশিনের কথা বলছি না, ওখানেতো আমিও যাই । অন্য ধরণের কিছু ভেন্ডিং মেশিন আছে, যেগুলোতে বিভিন্ন মেয়েদের ছবি আর মোবাইল নাম্বার দেয়া থাকে, সেখানে কয়েন ফেলো আর পেয়ে যাও তোমার কাঙ্ক্ষিত রমণির ছবি আর নাম্বার, আর শুরু করে দাও বাঁদরামি ।
চিন্তা করে দেখুন, ওখানকার বাঁদরই যদি এত বাঁদরামি করতে পারে, তখন কিছু মানুষ কেন পারবে না ?
কি? জাপানে যাবেন?
কি? তাহলে জাপান ঘুরে আসবেন ভাবছেন ? ঠিক আছে ঘুরে আসুন, ফ্যামিলি নিয়ে যান, কমপক্ষে ওরা আপনাকে বাঁদরামোর ভেন্ডিং মেশিন থেকে দূরে রাখবে । আর ওখান থেকে কিন্তু আইসক্রিম খেয়ে আসবেন । ওখানে অনেক ধরণের আইসক্রিম পাওয়া যায়, এই ধরেন – ঘোড়ার কাঁচা গোস্তের আইসক্রিম, স্কুইডের কালো রঙের আইসক্রিম, সয়া সসের আইসক্রিম, ভাজা শামুকের আইসক্রিম, হাঙরের পাখনার আইসক্রিম, সামুদ্রিক শজারুর আইসক্রিম, বিয়ার আইসক্রিম, শুকরের গোস্তের আইসক্রিম, ভাজা চিংড়ির আইসক্রিম, সেদ্ধ ডিমের আইসক্রিম, গরুর জিহ্বার আইসক্রিম, সালাদ আইসক্রিম, বাইন মাছের আইসক্রিম, চিকেন উইংস আইসক্রিম, কাঁকড়ার আইসক্রিম ইত্যাদি ।
কি জিভে পানি এসে যাচ্ছে ? তাহলে গিলে ফেলুন । ব্যাটারা জানতে পারলে হয়ত জিহ্বার জলের আইসক্রিমও বানিয়ে ফেলবে ।
চায়নিজরাও কি কম যায় নাকি?
জাপানিজরা যদি এত কিছু খেতে পারে, চায়নিজরাও কি কম যাবে?
তাহলে শুনুন, চায়নিজরা প্রতিবছর প্রায় চল্লিশ লাখ বিড়াল খেয়ে ফেলে । কেন জানেন? শুধুমাত্র আভিজাত্যের প্রতীক হিসাবে !
ভ্যানিলা ফ্লেভার
কাষ্টোরিয়াম (Castoreum), যা বিভিন্ন ক্যান্ডি এবং বেকারি আইটেমে ভ্যানিলা ফ্লেভারিং এর কাজে ব্যবহার করা হয়, তা আসলে কি ? জানেন ? বীবরের মূত্রথলি হতে উৎপন্ন এক ধরণের মূত্র বিশেষ, যা এরা নিজেদের এলাকা চিহ্নিত করণের জন্য নির্গত করে থাকে ।
এল-সিস্টিন
কিছু কিছু পাউরুটি নরম রাখার জন্য এল-সিস্টিন (L-cysteine) ব্যবহার করা হয় । এই এল-সিস্টিন তৈরি করা হয় মানুষের চুল এবং হাঁসের পালক হতে ।
পটকা মাছ
প্রায়ই দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন জায়গায় পটকা মাছ খেয়ে বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর খবর দেখা যায় । এই মাছ খেয়ে মৃত্যু হওয়ার মূল কারণ মাছটি সঠিক উপায়ে রান্না না করা । ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে কিছু কিছু পটকা মাছের বিষ সায়নাইডের চেয়েও বারশত গুণ বেশী বিষাক্ত !
বলি, এত মাছ থাকতে ঐ পটকা মাছ খাওয়ার দরকারটা কি শুনি ?
ফ্রুট ফ্লেভারড স্ন্যাক্স
জানেন, গাড়ি চকচকে করার জন্য যে ওয়্যাক্স (Car Wax) ব্যবহার করা হয়, বিভিন্ন ফলের ফ্লেভার সমৃদ্ধ স্ন্যাক্সেও সেই একই ওয়্যাক্স ব্যবহার করা হয় ।
বলি, এই স্ন্যাক্সে লিভারও কি চকচকে হবে ?
হায়রে মধু
এর আগের পোষ্টে মধু নিয়ে লেখার পর একদিন দেখি আমার ছোট বোন খুশী মনে দুই কেজি মধু কিনে নিয়ে আসল । আজকের লেখার ড্রাফট দেখার পর ও সাফ সাফ জানিয়ে দিল ও আর মধু খেতে পারবে না । এদিকে আমিও মধু খাইনা । ওকে বললাম, যত্ন করে রেখে দে, তোর নাতি পুতি খেতে পারবে ।
ও আচ্ছা, কি ড্রাফট, জানতে চাইছেন ? তাহলে শুনুন – মৌমাছি নাকি ফুল থেকে নেকটার (মধুর মূল উপাদান) তার মৌচাকে নিয়ে আসার পর সেটার সাথে তার বমি মিশিয়ে মধুতে রুপান্তরিত করে, এই আর কি । আপনার কি তাতে কোন সমস্যা হবে ? মানে মধু খেতে পারবেন তো ?
আনারসের এ কি গুন ?
আনারসের অনেক গুন, কিছু কিছু ডাক্তারতো জ্বর আসলে রিতীমত আনারস খেতে বলেন । কিন্তু আনারসের ব্রোমেলাইন (bromelain)নামক এনজাইম নাকি আমাদের জিহ্বার টেষ্টবাড গুলোকে (যা বিভিন্ন খাদ্যের স্বাদ বুঝতে সাহায্য করে, এর আগের পোষ্টে টেষ্টবাড সম্পর্কে লিখেছি) নষ্ট করে দেয় । নিন এবার, এখন আনারসকে কি বলবেন ? আমি ভাই এক কথায় বলব – বিশ্বাসঘাতক !
মরিচ খেয়ে জিহ্বা পোড়া
ঝাল মরিচ খেয়ে তো কতবারই জিহ্বা পুড়েছেন, পুড়েছেন না ? সত্যি ? ঠিক আছে, তবে যারা ঝাল মরিচ খেয়ে জিহ্বা পুড়েছেন তারা আমাকে জিহ্বার পোড়া অংশ দেখাতে পারবেন ? আসলে ঝাল খেলে জিহ্বা পোড়ে না, মরিচে ক্যাপসাইসিন (capsaicin) এক ধরণের যৌগ রাসায়নিক উপাদান আছে, ক্যাপসাইসিন সরাসরি মানুষের স্নায়বিক নার্ভ-এর ওপর কাজ করে মস্তিষ্কে ভুল সিগনাল পাঠায় যে আমাদের জিহ্বা পুড়ে গেছে ।
গাজরের আসল রঙ
গাজর দেখেছেন তো ? আচ্ছা চোখ বন্ধ করে বলুন তো গাজরের রঙ কি ? কমলা ? একদম ঠিক । আচ্ছা এবার চোখ বন্ধ করে বলতে পারবেন আগে গাজরের রঙ কি ছিল ? মানে এই সতেরশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত, কি পারছেন না ? ঠিক আছে নিন আমি চোখ বন্ধ করে বলছি – সতেরশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত গাজরের রঙ ছিল “বেগুনি” ।
পনির সাবধানে রাখুন
বিশ্ব কোন খাদ্য টি চুরি হয় সবচাইতে বেশী জানেন ? পনির (Cheese) । সুতরাং, পনির সাবধানে রাখুন ।
এরোপ্লেনের খাওয়া মোটেই ভালো লাগেনা
অনেকি বলেন যে, এ্যারোপ্লেনে ওরা যা খাওয়া দেয় তার স্বাদ নাকি মোটেই ভাল থাকে না । আর আমি কি বলি জানেন ? ভাইজান, ওরা যত সুস্বাদু খাবারই দিক না কেন, আপনার কাছে ভালো লাগবে না । কারণ আপনি যখন এ্যারোপ্লেনে ভ্রমণ করে থাকেন তখন আপনার স্বাদ ও গন্ধ নেবার ক্ষমতা এমনিতেই বিশ থেকে পঞ্চাশ ভাগ কমে যায় । আর গত কয়েক মাস যেভাবে এ্যারোপ্লেন অ্যাকসিডেন্ট করছে তাতে খাবারের স্বাদ নেয়ার কথা মনে হয় কিভাবে, এ্যাঁ ?
নুডলস্ সেদ্ধ হয়ে গেছে ?
নুডলস্, স্প্যাগেটি বা চওমিন, যাই বলেন না কেন, রান্না করার সবচেয়ে ঝামেলার অংশটি হচ্ছে তা সিদ্ধ হয়েছে কিনা বুঝতে পারা । ঠিক কি না ? যদি আপনি এই ঝামেলায় পড়েন আর সিদ্ধ হয়েছে কিনা বুঝতে না পারেন তাহলে পানি থেকে একটি নিয়ে দেয়ালে ছুঁড়ে মারুন, যদি সেটি দেয়ালে লেগে যায় তাহলে বুঝবেন সিদ্ধ হয়ে গেছে ।
রেফ্রিজারেটর লাগবেই
এই এত সব খাবার দাবার সংরক্ষণ করার জন্য রেফ্রিজেরেটরতো লাগবেই, ঠিক না? কত ভাল হত যদি আমরা সাইবেরিয়ায় থাকতাম! ওখানকার ঠান্ডায় অন্তত খাদ্য সংরক্ষণ করার জন্য রেফ্রিজারেটরতো দরকার হোত না, ঠিক না?
যদি ঠিক মনে হয়, তাহলে শুনুন এই ধারণা একেবারেই ঠিক না । এস্কিমোরাও (পূর্ব সাইবেরিয়ার অধিবাসী) রেফ্রিজারেটর কেনে। কেন কেনে, জানতে চাচ্ছেন ? এস্কিমোরা রেফ্রিজারেটর কেনে অতিরিক্ত ঠান্ডায় খাওয়া দাওয়া জমে শক্ত হবার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য । হোলত এবার ? একেই বলে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না ।
এবার খাদ্য সম্পর্কিত একটি হাদিস-
চলবে -
এই সিরিজের অন্যান্য পোষ্টগুলিঃ
১। কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-১
২।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-২
৩।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৩
৪।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৪
৫।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৫
৭।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৭
৮।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৮
৯।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-৯
১০।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-১০
১১।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-১১
১২।কত কিছু জানি নারে ? পাঠক নিজ দায়িত্বে হজম করিবেন-১২
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬