লুঠ হয়ে যায় আমাদের ভোরের রোদ, সকালের হাওয়া, মিষ্টি সরের দুধ-চা, বেনিয়া সিগারেট। লুঠ হয়ে যায় অনুভূতি, প্রেম, অধিকার, আর্তচিৎকার। লুঠ হয়ে যায় বানান, উপসর্গ, কর্মধারয় সমাস, চন্দ্রবিন্দু। লুঠ হয়ে যায় রবীন্দ্র, নজরুল, লালন; সরোবর, স্কয়ার, আখড়া। সবশেষে লুঠ হয়ে যায় আমিত্ব।
যারা ফিরে যাবে এসেছিলো, তারাই রয়ে গেছে তলানিতে। যাদের চোখে চউখতারাপাখি নিমন্ত্রিত ছিলো ধানশালিকের, তাদের অন্ন রোজ উড়ে গেছে বাতাসিবনে। সেখানে অনেকদিন ফোটে নি কেওড়াফুল, শালুকফল, গন্ধমরস। সেখানে নেবুর দোলায় যৌবনবতী বাতাসে তিরতির কাঁপে আর অচেনা ছন্দে নাচে সিন্ধুময়ুর। আপনারে সেথায় ভুলে হারিয়ে গেছে অনাবাদী বালিকা, জমিনের মত উর্বরতা নিয়ে নীরবে সরে গেছে অদ্ভুত দেবতার ভোগে। এরই নাম বনপূজা। মনবন্ধী বনপূজা।
তারপর নেমে আসে ঘোমটাপরা বিকেলের ছায়া। ঘুরে ঘুরে ঝালিমেঘের ঝাড়ে পাল্টে ফেলে আকাশ। আঁধারপরীর ঘুম ভাঙে আর শহর ঢাকা পড়ে অদ্ভুত কুয়াশায়। চেয়ে থাকা ক'জোড়া চোখের ভেতর সে কুয়াশা হয়ে উঠে অবাক হলদে।
মেঘের ঘরে মদের গেলাস কে রেখেছে চুপিসারে!
মেঘের বালক হরহামেশা কার হদিস খুঁজে মরে!