গত কয়েকদিনে অপর বাস্তব বের হওয়া নিয়ে ব্লগে যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া দেখছি, তাতে লেখক না হয়ে পাঠক হওয়ায় নিজেকে ধন্যবাদ না জানিয়ে কোন উপায় নেই। ব্যাপারটা অনেকটা নিরাপদ দূরত্বে বসে অ্যাকশন ছবি দেখার মত উপভোগ্য। শেষ পর্যন্ত চুরির অপবাদ মাথায় নিয়ে প্রধান সংকলকের ব্লগ ত্যাগের মাধ্যমে সে অধ্যায়ের সমাপ্তি হল।
আমার এ পোষ্ট সিনেমা দর্শক হিসেবে পাঠকের ভালোলাগা অনুভূতি থেকে নয়, অপরবাস্তব নিয়ে আমি কোনো পক্ষে নেই, কে কিভাবে বের করেছে জানার দরকারও নেই, ব্লগে যেমন আপনাদের লেখা পড়ি, বইমেলা থেকে এক কপি অপরবাস্তব কিনেও পড়বো। পাঠক হিসেবে আমি সর্বগ্রাসী, খাদ্য-অখাদ্য নিয়ে তেমন মাথাও ঘামাই না। তবে পাঠকের সন্তুষ্টি নয়, অসন্তুষ্টি নিয়েই এ পোষ্ট।
ভার্চুয়াল ব্লগের পরিচিত ব্লগার কালপুরুষকে বাস্তব জীবনেও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। খুবই অমায়িক মানুষ, পরিপাটি, আড্ডাবাজ এবং আন্তরিক। ব্লগে তাকে নিয়ে নানা কথা চালু আছে, তাও অজানা নেই। মেয়ে নিকের ব্লগারদের প্রতি তার বাড়তি আকর্ষন দেখে অনেকে তার সমালোচনা করেন, আমি তাতেও অস্বাভাবিকতার তেমন কিছু দেখি না। এখানে যেমন একে-অন্যকে আক্রমনের মহড়া চলে, তাতে ছেলে ব্লগারদেরকে এড়িয়ে চলাটা তার স্বাধীনতার খেলাপ নয়।
কিন্তু সম্প্রতি এই সজ্জন মানুষটার ব্লগীয় ভাষা দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। মা আমাদের সবারই অতিপ্রিয় মানুষ। তিনি এক ব্লগারের বীর্য আরেক ব্লগারের মায়ের গর্ভে স্থাপন করতে চান, আরেক ব্লগারের মায়ের লকারে তার সব 'আউটপুট' পাঠাতে চান। এখানেই শেষ নয়। শেষ পর্যন্ত নিজের মাকে তার জন্মের জন্য দায়ী করেন। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। একজন মানুষ কিভাবে পারে এভাবে তার জন্মদাত্রীকে অপমান করতে! যে তাকে নয় মাস ধরে গর্ভ ধারন করেছেন, পরম মমতায় স্নেহের আঁচল বিছিয়ে ছোট থেকে বড় করে তুলেছেন, যে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত বলে নবী (সাঃ ) ঘোষণা দেন, সে মা'কে একজন মানুষ এভাবে অপমান করতে পারে!!
আমি মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি। একজন মানুষের কতোটুকু জানি আমরা, বাইরেটা দেখে কতোটাই বা জানা যায়। মুখোশের আড়ালে ঢেকে চলা পশুত্ব নাব্য পরিবেশ পেলে ঠিকই বেরিয়ে আসে।
সামহোয়্যারিন অথরিটিকে এখন আর কিছু বলি না। অনেক সময়ই আমার রিপোর্টে তারা কর্ণপাত করেছেন, ব্লগের পরিবেশ বজায় রাখতে অনেক পোষ্ট, মন্তব্য মডারেট করেছেন, অনেক ব্লগারকে শাস্তিও দিয়েছেন। কিন্তু এসবের মাঝেও আমি একটি প্যাটার্ন লক্ষ্য করেছি। কিছু কিছু ব্লগারের বিরুদ্ধে তারা অভিযোগ নেন না। হয়তো মুখচেনার লজ্জা থেকেই কিছু করার সাহস পান না। যেমন, ব্লগার সারওয়ার চৌধুরী একজনকে ব্লাডি বাস্টার্ড বলে গালি দিয়েও দিব্যি ব্লগিং করে চলেন।
আমার অভিজ্ঞতা বলে, ব্লগার কালপুরুষও তেমন একজন। তিনিও হয়তো 'লাইসেন্স টু অ্যাবিউজ' পেয়েই ব্লগে আসেন।