
আর সে প্রতিবেশী যদি ভারত হয় তাহলে তা কেমন হয়? যেমন হয়েছে গত ৬৯ বছর। যেমনটা দেখা যায় ভূ-স্বামী মতিন জোয়ার্দারের সাথে প্রান্তিক চাষী ইদ্রিস আলীদের। আজ মুরগীটা ধরে রেখে দেয় তো কাল সীমানা ঠেলে, পরশু গাছের আম পেড়ে নেয় তো তরশু পথ আগলে রাখে।
রাস্ট্র ভারত ও প্রতিবেশীদের দিনকাল তেমনটাই যাচ্ছে। আকার, শক্তি ও মানবতা বিধ্বংসী রাস্ট্রদানবদের সাথে দোস্তির মদমত্ততায় ক্ষুদ্র প্রতিবেশী বাংলাদেশের সাথে আজন্ম খিটিমিটি লেগেই আছে। ১৯৭১ পশ্চিম পাকিস্তানের নাগপাশ থেকে মুক্তির বছর হলেও, কুটিল ভারতীয় পররাস্ট্রনীতির বিরাট অর্জনের বছর অন্য হিসেবে। বড় প্রতিবেশীকে দু'টুকরো করে মারাত্মক দুর্বল করা। বোনাস- শিশু রাস্ট্রটির অর্থ, অস্ত্র, রাজনীতি, পররাস্ট্রনীতি, ব্যবস্থাপনা, ও বাজারের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রন কায়েম করা। হয় বেকুব, নয় দালাল জাতীয় ক্রীড়নক শ্রেনীর লোকের উপর ভর করে স্যাটেলাইট স্টেট রান করা। যেখানকার নাগরিকদের দায়দায়িত্ব ভারত নেবেনা, কিন্তু নানা ভাবে সেখানকার সম্পদ ও বাজারের উপর হিস্যা আদায় অব্যাহত রাখতে পারে। মজার পলিসি!
কংগ্রেস, বিজেপি, বামপন্থী, রামপন্থী, রাবণপন্থী কিংবা এতদ বহু মিশ্রন ভারতের সরকার পরিচালনায় আসলেও তাদের বাংলাদেশ নীতির সামান্যও হেরফের দেখা যায়না। তবে খুবই মজার ব্যাপার হল বাংলাদেশের ও ভারত নীতিতে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি জাপা, লীগ বা দল চালিত শাসনামলে। তর্কের খাতিরে যদি বলি, জামাত আসলে কেমন হত? আমার কনফিডেন্ট উত্তর: একই। ঘরোয়া নির্বাচনী মচ্ছবে মৌসুমী ভারতবিরোধী যে কলরব উঠে তা চড়ুইভাতির ডাল রান্না মাত্র!
তো কেমন সে ধারাবাহিক প্রতিবেশী রাস্ট্রদানব ভারত? গুলি করে, ধরে নিয়ে নির্যাতন করে প্রতিনিয়ত কৃষক হত্যা। নিস্ঠুর মারধর। এমনকি এপারে মাইলখানেক এসেও। জমি জবর দখল। বিশেষ করে নদীর চর। নদীতে গ্রোয়েন দিয়ে এদিকে স্রোত ঠেলে দেয়া। সমুদ্র দখল। সমুদ্রের চর দখল। স্থাবর এসব খুন, জখম, দখল জাতীয় ফৌজদারী অপরাধের বাইরে আছে বাজার দখল (ও উৎখাত)। গোটা বাংলাদেশ ভারতের আদা থেকে ট্রাক সকল পণ্যের অভয়ারন্য। আমদানী, আমদানীর ছদ্মাবরনে চোরাচালান ও খাটিঁচোরাচালান সবই চলছে। বাংলার আকাশ রাখিব মুক্তের গালভরা শ্লোগানসর্বস্ব কিছু খামাকাবাহিনী যেমন আছে তেমনি আছে হিন্দী মুভি, গান, সিরিয়াল, শোর প্লাবন। বিপরীতে ওপারে ঢাকাইয়া টিভি হারাম। ঢাকাইয়া মাল নিয়ে ব্যবসা করাযে কত কঠিন তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। তবে এক্ষেত্রে দাদাদের শক্ত চরিত্র ও আমাদের তরল প্রেমও অনেকখানি দায়ী। প্রচুর ভারতীয় সম্পুর্ন অবৈধভাবে গুলশান বনানীতে চাকরি করছে। সরকার নির্বিকার। আছে পানি প্রত্যাহার। পদ্মা, তিস্তার উপর বাধঁ পড়েছে, পড়ছে সুরমা-কুশিয়ারার উজানে। গ্রীস্মে মরুকরনের পথে বাংলাদেশ, বর্ষায় মহাপ্লাবন। আছে চর লাগিয়ে দলিলপত্র চুরি, গোপন হত্যা ইত্যাদি। তবে মহাক্ষতিটা হয়েছে মগজ চুরির মাধ্যমে। সুশীল, আমলা, কনসালটেন্ট, মন্ত্রী নামধারী কতিপয় জারজের মাধ্যমে দেশীয় শিল্পের বারোটা ও সেইম ভারতীয় শিল্পের পৌষমাস নিশ্চিৎ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ইউএন এ কর্মরত ভারতীয় কিংবা গোত্রভুক্তরা এসব সর্বনাশের বাদবাকিটা সমাপ্ত করেছেন।
তাই কে ভারতের নির্বাচনে জিতল, কে হারল তাতে বাংলাদেশবাসীর কিছু যায় আসেনা। যদিও আবাল পত্রিকাওয়ালারা হেডলাইন করেছে। ঝড় বইছে টক শোর। আমার কাছে ভারত একটি লাউ ছিল, এখন কদু হইল!
পরিবর্তন যা করার নিজেকেই করতে হবে।