কানাডা এমন একটা দেশ, যেখানে নাপিতের দোকানে (সেলুন) ও এপয়েন্টমেন্ট নেওয়া লাগে। এত হিসাব করে চুল কাটাতে পারি না। মনেও থাকে না। কাছাকাছি শপিং মলে একটা সেলুন আছে, যেখানে এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া চুল কাটানো যায়। ইচ্ছে ছিল বন্ধের দিনে সকাল সকাল চুল কেটে অন্য কাজ শুরু করবো। ওপেনিং টাইম দেখার জন্য ওয়েবসাইটে গিয়ে মজার জিনিস আবিষ্কার করলাম। ঐ দোকানের সবচেয়ে প্রবীণ নাপিত ৪৯ বছর কাজ শেষ করে রিটায়ার্ডমেন্টে যাচ্ছে। এই উপলক্ষ্যে তারা সবাইকে কফি খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
সেলুনে গিয়ে দেখি এলাহী কান্ড। কেক, কফি, চকলেট, কোক, বেলুন দিয়ে সাজানো সেলুন। আমার ও কপাল ভালো। যে নাপিত রিটায়ার্ডমেন্টে যাচ্ছে, তাকে দিয়ে চুল কাটাতে পারলাম। অনেক মানুষ সেলুনে এসেছে শুধু ঐ নাপিতকে রিটার্য়াডমেন্ট উপলক্ষ্যে শুভ কামনা জানাতে। ৩-৪ জন বয়স্ক মানুষকে দেখলাম, তারা আজীবন ঐ নাপিতের কাছে চুল কাটিয়েছে, তারা খুব আবেগ প্রবণ হয়ে গেল। আমিও চুল কাটানো শেষে নাপিতকে উইশ করলাম, করমর্দন করলাম অবসর উপলক্ষ্যে।
সবাই কাজ থেকে কোন না কোন সময় অবসর নিবে, এটা খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু কেন জানি অন্য রকম লাগলো এই নাপিতের অবসর নেওয়টা সেলিব্রেট করতে দেখে। আমরা আজন্ম দেখে এসেছি, অফিসের বড় অফিসাররাই শুধু অবসর নেয়। অফিসে বসে কাজ করলেই আমরা একে কাজ হিসাবে যতটুকু গুরুত্ব দেই, অন্য কোন কাজ হয়ত অত গুরুত্ব পায় না। দেশে কখনো দেখিনি ঘটা করে কোন রাজমিস্ত্রি, বাস ড্রাইভার, নাপিত কিংবা অন্য কোন কর্মজীবি অবসর নিচ্ছে। ঘরের গৃহিনীরা তো ৯০ বছর বয়সেও অবসর পায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৯