আর যদি আপনি সাধারণ কেউ হন, তবে আপনার সাধারণ মৃত্যুতে কারো কোন মাথাব্যাথা নাই, যদি কোন দুর্ঘটনাতে মারা যান, তবে হয়ত পত্রিকায় আপনার নামটা আসবে সাথে বয়স, অনেক সময় নামটাও আসে না। মৃত্যুটা একটা সংখ্যা হয়ে যায় মাত্র। কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে মারা গেলে ২-১দিন ফলোআপ থাকে হয়ত।
মারা যাওয়ার পর কেউ আপনার নাম মনে রাখে না, কারণ আপনি একজন সাধারণ মানুষ। আগে এসব চিন্তা করতাম না, কিন্তু ইদানিং কেন জানি একটু ভয় লাগে। আজকে সারাদিন বাসাতেই ছিলাম, প্রতিটা ঘন্টার খবর দেখেছি টিভিতে। প্রত্যেক খবরেই দেখানো হচ্ছে মনিরের মৃত্যু সংবাদ।
আমি মোটেও সহ্য করতে পারছিলাম না এই সংবাদটা। বার বার চ্যানেল পরিবর্তন করি। এই খবরটা আমি এখনো পুরোটা দেখি নাই। বুকের ভেতরটা কেমন জানি করছে। বাকী আট-দশটা মৃত্যুর মতো মনিরের মৃত্যুটা শুধু একটা নাম কিংবা সংখ্যায় পরিণত হবে একসপ্তাহ পরেই। ভয় পাই ঐখানেই, এই মনিরের মতো পরিণতি যে কোন সময় আমারও তো হতে পারে। আমার ভাইয়ের কিংবা আমার অতি আদরের ছেলেটারও হতে পারে।
মানুষ মনে হয় পাশাবিক হয়ে যাচ্ছে দিন দিন, আর আমার নিজেরই ঘৃণা জন্মেছে মানুষ প্রজাতির উপর। নিজের উপর।
আমি আর কিছু লিখতে পারছি না, শুধু মনিরের এই পোড়া শরীরটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে, শুধু বলতে ইচ্ছে করছে, এদেশের মানুষগুলো দিন দিন অমানুষ হয়ে যাচ্ছে।
মনির, আমাকে ক্ষমা করো, আমার দেশেরই কিছু অমানুষের জন্য তোমার এই পরিণতি, আমি সমগ্রদেশবাসীর পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী।
এই মনির কোন দলের সাপোর্টার নয়, তাই কোন নেতানেত্রী তাকে দেখতে যাবে না, পরিবারের সদস্যরা ছাড়া মনিরের জন্য কান্না করার কেউ নাই, কিন্তু আমার গুমড়ে কান্না আসছে মনিরের জন্য।
মনির, তুমি আমাদের ক্ষমা করো।
*ছবিসূত্র: ডেইলী স্টার।
*ভিডিও: একুশে টিভি
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৩০