শিবির কিংবা আওয়ামীলীগ মোট কথা কোন দলের প্রতিই আমার কখনো আগ্রহ বোধ ছিলনা। আমার ছিলনা বলেইযে আমার বন্ধুদের থাকবেনা তাতো না। কয়জনকেই পাবেন আপনি দলীয় পরিচয়ের উর্ধে। তদুপরুপ আামার কিছু বন্ধু ছিল শিবির ও ছাত্রলীগ পন্থী। শাহেদ (শিবির) সোহেল, জয়নাল, আরমান (ছাত্রলীগ) ওদের বলতাম কি বালছাল করিস?? পার্টি মার্টি?? ওরা বলতো ধুর তুই একটা গাধা, সারাক্ষন খেলা খেলা আর খেলা। তবে খুব ভালো বন্ধুই বলা চলে ওদের। যদিও তাদের কারো সাথে এখন আর যোগাযোগ হয়না। তাদের নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতার কথাই সেয়ার করবো।
শাহেদ সবসময় চাইতো তাদের সাথে ভিড়াতে। আমাকে ত্যক্ত বিরক্ত করেই ছাড়তো। আমি তার চেয়ে এক ধাপ উপরে গিয়ে বলি, আমাকে রোজ শিঙ্গারা চমুচা খাওয়াতে হবে। রোজ রোজ কি আর খাওয়াইতে পারে?? আর আমি যা খাদক ছিলাম। ১০-১২ টা সিঙ্গারা চমুচা না খাইলে আমার চলেইনা।





একদিন আমরা একটা ফন্দি করে শাহেদকে কলেজের পাশে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলাম। চল দোস্ত আজ কিছু খাই। শাহেদ ভাবলো আমরাই খাওয়াবো। খেয়ে ধেয়ে বিল দেয়ার সময় দেখি কারো পকেটেই টাকা নেই। আসলে ছিলনা তা না। বুদ্ধি করেই আমরা কারো পকেটে টাকা রাখিনি।









এর কিছু দিন পর ঘটলো এক দুর্ঘটনা। কলেজে কিছু উছৃঙ্খল ছেলে (কোন দলেরই না) দু’টি মেয়েকে বার বার উত্তক্ত করায় শাহেদ গিয়ে বাধাঁ দেয়। যে কিনা বাতাসে দোলে সে গেছে বাঁধা দিতে । ফলস্বরুপ রাম ধোলাই। খবর পেয়ে ক্লাসমেটরা এসে আচ্ছামতন ছেলেগুলোকে ডাবল রাম ধোলাই দেয়। ধোলাই খেয়ে কোন রকমে পালিয়ে যেতে যেতে শাহেদকে শাশিয়ে গেল ”তোকে দেখে নেবো” । এসব আমি শুনলাম পরদিন কলেজে গিয়ে। যদিও সোহেল ওদের সাথে ঝামেলা করতে চেয়েছিল, আমরা করতে দিইনাই।
তার কিছুদিন পরে আমরা গেলাম এক মেহেদী অনুষ্ঠানে ব্যান্ড পার্টি দেখতে।




কিরে তুই ওইটা পাইলি কই??

এক বড় ভাই রাখতে দিছিলো।
তো বিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসলি কেন ওইটা ??
কোনদিন হাতে নিইনাইতো তাই ভাবলাম সাথে নিয়ে একটু ঘুরে বেড়াই।
আর গুলি করতে গেলি কেন?? ওইটাতো মনে হয় বাচঁবেনা।
ওর একটাই কথা মরুক শালা, ওকে শুয়োরটা এভাবে মারলো কেন??
তুই জানিসনা ও আমার কতো আপন বন্ধু। আমার জন্ডিস হয়েছিল।


এদিকে শাহেদের অবস্থা বেগতিক। কেমনে কেমনে জানি বেচেঁ যায়। অনেক দিন হাসপাতালে থেকে সুস্থ হয়ে বেরুলেও মাথায় বড় ধরনের আঘাত পাওয়ায় অনেক দিন এ্যাবনরম্যাল ছিলো। আমাদের ছিনতোনা। শালা সোহেলকে ঠিকিই চিনতো। পরে সুস্থ হয়ে উঠলে তার বাবা তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া হয়। সোহেলকেও গোপনে শাহেদের বাবা টাকা পয়সা দিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়। আমি চলে এলাম শহরে। সব এলোমেলো হয়ে গেল। আমাদের হাসিখুশি দিনগুলো হারিয়ে গেল মুহুর্তেই। এক বন্ধুকে বাচাঁতে গিয়ে আরেক বন্ধু হয়ে গেল দাগী আসামী।
সেসব বন্ধুদের একাকী এখন খুব মিস করি।


------------------------------------------------------------------------
ব্লগে আসার পর থেকে একটা জিনিস লক্ষ্য করছিযে, একে অন্যকে উৎসর্গ করে পোষ্ট দিচ্ছে। তাই ভাবলাম আমিও দিয়ে দিই। কিন্তু বিপত্তি হলো কাকে দেবো?? আমারতো এখনো তেমন প্রিয় বলতে কাউকে জানা হয়নি। তাই ভাবলাম যে মানুষটি আমার ব্লগ বাড়িতে প্রথম এসে কমেন্ট করে আমার উৎসাহ দিয়েছিলেন তাঁকেই উৎসর্গ করে দিই। তাই সেই আমার প্রথম ভাললাগার ব্লগারটিকে উৎসর্গ করলাম আমার বন্ধুদের নিয়ে ছোট্ট এই পোষ্ট খানা। আর সেই ব্লগারটি হলো ফাইরুজ মানুষ জীবনের সব প্রথম বিষয়কে খুব ভালো করেই মনে রাখে। আমারও থাকবে মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৮:৩১