একটা সময় ছিল বাংলাদেশে মাস্তানি করা'র জন্য ভিনদেশী পরিচয় ইংরেজ বা পাইক্যা হতে হতো, স্বাধীন বাংলাদেশে মাস্তানী করার জন্য বন্দুক-পিস্তল দরকার হতো, এখন দিন বদলে গেছে, এখন বাংলাদেশে এসব করতে দরকার হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার!!!
৯০'র দশকে যখন এলাকা ভিত্তিক মাস্তানী তুঙ্গে তখন কেউই বন্দুক-পিস্তলের ভয়ে প্রতিবাদ করতো না, আর এখন করে না নাম কলংকিত হবার ভয়ে!!!
কতটা ভয়াবহ এক সময়ে আছি আমরা, একজন বিশ্বজিতের সচিত্র হত্যা দেখার পরেও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবীদার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলে না, পাছে কলংকিত হই!
আমাদের ভার্চুয়াল জগতেই তো প্রমানিত অপরাধীদের কাছে প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিক্ষা দিতে হয়।
হিন্দুদের লুঙ্গি চেক করার মত করে আমার এই পোস্টে এসে যে কেউ জিজ্ঞেস করতে পারবে, হারামজাদা ৫টা রাজাকারের নাম বল। আমি যদি অপমানজনক সেই প্রশ্নের উত্তর না দেই তবে আমিই হবো অপরাধী। কেউ তো আমার পক্ষে কিছু বলার সাহস পাবেই না, উল্টো অনেকেই বলবে, উত্তর দিতে বাঁধে কেন?
এ কোন বাংলাদেশ???
অস্ত্রের যুগে তো তাও ভাল ছিল, দেশের সুশীল ও শিক্ষিত সমাজ ভয়ে প্রতিহত না করলেও অন্তত প্রতিবাদ করতো! আজকে তো সেই জাতি'র বিবেক নিজেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরনে সামিল!!!
আমার কথা পরিষ্কার, ৯০'র মাস্তানদের তান্ডবের মূলে যেমন থাকতো গডফাদারেরা, বর্তমানে চেতনাধারী মাস্তানদের পেছনে রয়েছে দেশের শিক্ষিত মানুষগুলো। এক ধরনের প্যাসিভ টোনে সাহিত্যিক ঢংয়ে দুঃখ করে বিশ্বজিতের মৃত্যুকে হাল্কা করে দিচ্ছে যারা, ভার্চুয়াল চেতনাধারীদের গালিগালাজ পড়ে বিকৃত আনন্দ পাচ্ছে যারা, তারাই বর্তমান নৈরাজ্যের পেছনে দায়ী।
ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে, পাপিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা দায়মুক্ত হয়েছিল। ৯০'র মাস্তানী বন্ধ হয়েছিল জনগণের চাহিদায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাস্তানদের হত্যা করে। বর্তমানে যেহেতু কিবোর্ডে'র জ্বালানীতে এই মাস্তানী চলছে, এর বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে কি-বোর্ড হাতেই।
আমি আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, ততটুকু প্রতিবাদ করে দায়মুক্ত হবো, আপনিও আপনার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করে দায়মুক্ত হবেন নাকি বহন করবেন সেটা আপনার মনুষত্ব-বিবেক ও শিক্ষাই নির্ধারন করবে।