ব্লগার সোনাগাজীর সর্বশেষ পোস্টে আমার করা কমেন্ট....
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনারা শুধু আলোকিত অংশটা দেখেন। প্রদীপের নিচে অন্ধকার বুঝতে চেষ্টা করেন না।এই বিজ্ঞানী মোদিজী সময়ে করোনা নির্মুল করতে একঘন্টা আলো না জ্বালানোর,কাসর ঘন্টা বাজানোর, তুলসী পাতা সেবন করা প্রচার করেছিলেন। ওনার ভক্তরা দিল্লিতে প্রকাশ্যে গো চোনা পান করে করোনা নির্মুল করার বাতলা দেন।
আসলে গত দুদুবার মোদিজী পাকিস্তান আক্রমণের গল্প ফেঁদে বৈতরণী পার হয়েছেন। ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাম্প্রদায় মুসলিম নিধনে সাফল্যকে দেশের উন্নয়নের সূচক হিসেবে দেখে ঢেলে ভোট দিয়েছেন মোদিজীকে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে গুজরাট দাঙ্গার নেতা হয়ে দিল্লিশ্বরে পরিণত হয়েছেন সেই পথে হেঁটে বিজেপির একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম নিধন যজ্ঞে মেতেছেন। মজার ব্যাপার এরা আবার দেশের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী।যোগী আদিত্যনাথ মুসলিম নিধনে সর্বাধিক পয়েন্ট গেইন করে মোদিজীর পরবর্তী দিল্লিশ্বর হবার লাইনে বাকিদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন। তুলনায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন হেমন্ত বিশ্বশর্মার মতো নেতারা।প্রতিদিনই একে অন্যকে সংখ্যালঘু নির্যাতনে ছাপিয়ে গিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। (যেমন - রাজপথে মুসলীমদের গুলি করা, বাড়ি ঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া, মাজার- মসজিদ - দরগা- মাদ্রাসা গুড়িয়ে দেওয়া, রাস্তায় নামাজ পড়া দেখলে জয় শ্রী রাম বলিয়ে বা গনধোলায় দেওয়া,লাভ জেহাদি শব্দ আউড়ে দম্পতিকে সামাজিক অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা এবং অবশ্যই দেশের আদালতকে এসবের ক্ষেত্রে নীরব দর্শকে পরিণত করা।)
তবে মোদিজী মুসলিম এবং পাকিস্তানকে সমার্থক শব্দে পরিণত করেও এবার অন্য পথে হাঁটতে চেষ্টা করছেন।আর এরই ধারাবাহিকতায় এরকম কিছু।
আসলে দাঙ্গাবাজ বিজেপির হঠাৎ খেয়াল হয়েছে তারা বিজ্ঞান সচেতন এবং দেশের উন্নয়নের জন্য ভাবিত। দেশের পাঁচটি ব্যঙ্ককে এক করে ছেড়েছেন।আদানী,নিরব মোদী,বিজয় মাল্যদের হাজার হাজার কোটি টাকা নয়ছয়ের সুযোগ দিয়েও ইন্টারপোলের হেলৃপ না নিয়ে বহাল তবিয়তে তাদেরকে লন্ডনে বসবাসেরর সুযোগ করে দিয়েছেন।অমিত শাহের ছেলেকে দুহাজার কোটির হিরের ব্যবসা ও ভারতের ক্রিকেট প্রধানের অনেকটা উচ্চ আসনে বসিয়ে লুটেপুটে খাওয়ার সুযোগ করে গোটা দেশবাসীর নজর ঘোরাতে ৪১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুদিনের মচ্ছব করে জি ২০ বৈঠকে মার্কিন পদমর্যাদার চালকের আসনে বসে ঢেকুর তুলে ২৪ এর লোকসভা তুড়ি মেরে উৎরাতে চাইছে।
এখন দেখুন ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক বিজেপির হাতে দেশের দায়িত্বভার দুবার দিয়েছে, তৃতীয়বার দিতে চলেছে। বাংলাদেশ যদি ভারতকে অনুকরণ করে তাহলে সেদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাম্প্রদায় বিজেপির মতো তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে দেশের দায়িত্বভার তুলে দেয় তাহলে আপনারা আবার রে রে করে উঠবেন না তো? যেন আবার বলে বসেন না, ভারতের হিন্দুদের যে অধিকার আছে, বাংলাদেশের মুসলিমদের সেই অধিকার নেই।
শুনুন সত্তরের দশকে আফগানিস্তান ধর্মের পথে হেঁটেছে। মোদিজীর ভারত একবিংশ শতকের প্রথম দশকে সেই পথ অনুসরণ করেছে। এক্ষেত্রে তাহলে আফগানিস্তানের মতো ধর্মশ্রয়ী রাষ্ট্র ভারতের পথপ্রদর্শক বলতেই হবে। পাকিস্তানও ইতিমধ্যে ধর্মের পথে হেঁটেছে। উপমহাদেশে বাকি বাকি রইল বাংলাদেশ।একা বাংলাদেশ-ই বা আর কাঁহাতক মুখে পুরানো সম্প্রীতির কথা বলবে? মোদিজী দেশের প্রতিটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে এই মূহুর্তে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যদের নিয়োগ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন।আই এ এসে পদে প্রতিবছর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যদের নিয়োগ সম্পূর্ণ করতে চলেছেন। কাজেই ভারতের অলিতে গলিতে শুধু হিন্দু আর হিন্দুত্ব।
তবে আপনার এইসব পোস্ট দেখে ভারতের কিছু হাম্বা ব্লগার আনন্দে গদগদ হয়ে হাম্বা হাম্বা বলে লম্বা ডাক ছাড়লো বলে....
ভারতে ২৪ এর লোকসভা আসন্ন ;একই ভাবে নির্বাচন আসন্ন বাংলাদেশেও। এমতাবস্থায় ব্লগারদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা কী মোদিজী বা হিন্দু সম্প্রদায়িক দল বিজেপিকে নকল করে ঢাকার সিংহাসনে মুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে শাসনভার তুলে দিতে মানসিকভাবে তৈরি আছেন কিনা...
কৃতজ্ঞতা ব্লগার গেঁয়ো ভূত ভাই।
সোনাগাজীর পোস্টে কমেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্ট হলেও কিছু পরিমার্জিত হয়েছে।
আপাতত এই পোস্টে আর কোনো মন্তব্য গ্রহণ করতে পারছিনা।