ভরসা এন্ড কোং। পাত্রপাত্রী খুঁজে পাওয়ার সর্বোত্তম স্থান।
আমি আসতে চাইনি। বিশ্বাস করুন আসতে চাইনি। কিন্তু না এসে পারলাম না। মুক্তারের ভাষায়—ভরসা ভাই ছাড়া নাকি আমার গতি নাই। আমি আর কি করবো? জীবনে গতি আনা দিয়ে কথা! তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই আসতে হলো।
মালিবাগে অফিস। ভরসা এন্ড কোং। ওরফে ভরসা ভাই।
ব্যাপারটা কবে থেকে শুরু হলো ঠিক মনে নেই। একা ছিলাম। ভালোই ছিলাম। চাকরি করি। নিজেরটা নিজে খাই। আরামে ঘুমাই। বিয়ে শাদির কি দরকার? বিয়ে ব্যাপারটা মোটেই ভালো না। ধরেন আপনে সকালে একটু আরাম করে ঘুমাচ্ছেন তো গেছেন! ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়ে বউ বাজারে পাঠাবে। বিকেলে একটু ঘুমাতে যাবেন কি বউ পার্কে যাওয়ার আবদার ধরে বসবে। সন্ধ্যায় একটু চা খেয়ে খেলা দেখতে বসবেন তো বউ স্টার প্লাস দিয়ে বসে থাকবে। আর রাতে একটু তাড়াতাড়ি কাত হবেন তো বউ ‘ছ্যাত’ করে উঠবে! আর গোটা দুই বাচ্চা কাচ্চা হলো তো সব স্বাধীনতা গেলো! উহু বাবা। এইসব ঝামেলার মাঝে আমি নেই। যা আছি বেশ আছি।
কিন্তু বিধিবাম। আপনে সুখে থাকলে পাড়াপড়শীকে ভূতে কিলাবে—এইটাই স্বাভাবিক। আমার বেলায় ব্যাপারটা আরো বেশি খারাপ। আমার পড়শিদের ভূতে কিলাচ্ছে না, একেবারে খুন করে ফেলার হুমকি দিচ্ছে! ব্যাচেলর বলে একে তো বাসা টাসা পাই-ই না। এক বাড়িওয়ালা শেষে বাসা ভাড়া দিলো। তার মেয়ে পড়ে ক্লাশ নাইনে। সেই কারণে আমার প্রতি বাড়িওয়ালার সন্দেহের অন্ত নাই। তার মেয়েকে কোন এক ছেলে চিঠি দিয়েছে। সেই ছেলে আমি কিনা বুঝার জন্য আমার গুরুত্বপূর্ণ তিন তিনটা খাতা উনি নিয়ে গেলেন। হাতের লেখায় কি মিল পেলেন কে জানে, আমার আর সেখানে থাকা হলো না। আরেক বাসায় উঠলাম। ছাদে রুম মিললো। তাই সই। বাড়িওয়ালার দুই ছেলে। আহা বাঁচা গেলো! মেয়ে তো আর নাই! তাতে কি? ছেলেদের বান্ধবীরা তো আছে, তাই না? আমি ছাদে থাকলে ফষ্টিনষ্টি করতে সমস্যা হয়। তাই আমাকে তাড়াও। এরপর অনেক দেখে শুনে এক লোকের বাড়িতে উঠলাম। লোকের মেয়ে নাই, ছেলেও নাই। আশেপাশের কোন বাড়িতেও মেয়ে নাই। এমনকি বাড়িতে কাজের মেয়েও নাই। শুনলাম তার বাসায় নাকি ভাড়াটিয়া টিকে না। তা না টিকুক, আমার কি? আমার মিলেছে তাই গিয়ে উঠলাম। ওই বাড়িতে উঠেছি শুনে এলাকাবাসি খালি সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়। দিন পনেরো থাকতেই বুঝলাম- বাড়িওয়ালা পুরাই একটা গে। তার মেয়েছেলের দরকার নাই। দরকার ব্যাটাছেলে। মান ইজ্জ্বত নিয়ে কোনরকমে পালায় বাঁচলাম। এরপরই সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ে শাদি করার। শালার যা আছে কপালে।
আমার কপালে ভালো কিছু থাকা অসম্ভব। প্রমাণ পেলাম একেবারে হাতেনাতে। বিয়ে করতে চাই শুনে আমার বাল্যবন্ধু মুক্তার আমাকে নিয়ে গেলো আরেক বন্ধু মজনুর বিয়েতে। ব্যাপারটা হয়ত আগে থেকেই আলোচনা করা ছিলো। তাই আমার বন্ধুরা তাদের বউ ছাড়াও শ্যালিকা, ননদ, ছোটবোন, ফুফাতো, মামাতো, তালতো এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে খালি মেয়ের একটা ছবি নিয়ে হাজির। হঠাৎ বেশি ভাত খেলে কিন্তু পেটে সয় না। আমারো তাই হলো। দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবদি প্রায় ২৭টা মেয়েকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে রাতে ডাইরেক্ট ‘স্বপ্নদোষ’। খেপে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আর বিয়েতে গিয়ে মেয়েই দেখবো না। এরপর-ই মুক্তার নিয়ে এলো ভরসা ভাইয়ের কাছে।
--কি রকম মেয়ে চান কন দেখি?
ভরসা ভাইয়ের ডাকে আমার টনক নড়ে।
-কি রকম আছে?
--তিন রকম। কচি, বুচি, লুচি...
-দাড়ান দাড়ান। কচি, বুচি এইসব কি?
--কচি হলো আঠারর কম। বুচি বাইশের মইধ্যে। আর লুচি... হেহে। লুচি হইলো গিয়া দেখতে খুবই সৌন্দর্য্য মেয়ে। বয়স ব্যাপার না। সৌন্দর্য্যই ব্যাপার। বুঝছেননি?
আমি ভীষণ চিন্তায় পড়ে যাই। আগে ত বিয়ে করিনি। তাই জানিনা কোনটা ভালো! আমার আবার সুন্দরী মেয়ে পছন্দ। আমি প্রায় বলে ফেলেছিলাম লুচি কিন্তু মুক্তার তার আগেই বলে বসলো ‘কচি’।
-ধুর বাল্যবিবাহ করাবি নাকি? আমি প্রতিবাদ করি।
--বিয়ে করবি তো কচিই ভালো। যা বলবি তাই শুনবে।
আমি ভাবনায় পড়ে যাই। কল্পনায় দেখি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননিয় পুলিশবাহিনী আমাকে দড়িতে বেঁধে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। অপরাধ বাল্যবিবাহ। আমি ‘কচি’ মেয়েকে বিয়ে করতে কিছুতেই রাজি হই না। কচিটচি বিয়ে করে শেষে জেলের ভাত খাই! দরকার নেই বাবা। মুক্তার অবশেষে মেনে নেয়। ভরসা ভাই বলে বিসমিল্লাহ্।
তাকাতেই দেখি বিসমিল্লাহ। মানে প্রথম মেয়ের ছবি। ক্যাটাগরি লুচি মেয়ে।
-দেখেন তো কেমন।
--মেয়ে মাশাল্লাহ্ ভীষন সুন্দর। দেখ দেখ। মুক্তার খুশি হয়।
সুন্দর না ছাই। আমি সাফ না করে দেই।
-এইটা?
--আহা আহা কি দারুণ চেহারা! মায়া মায়া চোখ। মুক্তার বলে ঊঠে।
মায়া চোখ! কাজল দিয়ে ভূত বানায় রাখছে। আমি বিরক্ত হই।
-এই ছবিটা দেখেন দেখি।
-- উফ মাইরি কি সুন্দর! কি দারুণ কি দারুণ। মুক্তার উল্লসিত হয়।
সুন্দর? দেখে তো মনে হয় বান্দরের হাড্ডি। আমার মেজাজ খারাপের দিকে যেতে থাকে। মাথা নাড়াই। চলবে না।
-বুঝছি। তাইলে এইটা দেখেন?
আমার মনে হলো অনেকক্ষণ পর একটা মনের মত মেয়ে দেখলাম। কিন্তু মুক্তার গম্ভীর। আমাকে হাত দিয়ে ছবির একটা অংশ দেখিয়ে দিয়ে বললো- বেশি বড়।
-- তো কি হইসে? হইতে পারে না?!
-না। বিয়ের আগেই এই অবস্থা, বিয়ের পর না জানি কি হবে!
ঝাড়া তিন ঘন্টা চলে গেলো। লুচি, বুচি দুই ক্যাটাগরিতে আর মেয়ে বাকি নেই। আমার পছন্দ হয় তো মুক্তারের হয় না। মুক্তারের হয় তো আমার হয় না। দুজনের পছন্দে যে মিলে নাই তা না। একটাকে দুজনেরই ভালো লাগলো। কিন্তু ভরসা ভাই নিজেই ভরসা দিলেন না। মেয়ে নাকি দুইবার পালায় বিয়ে করেছে। এখন বাবা ‘নিজে’ দেখেশুনে বিয়ে দেবেন। এইসব দেখে আমি রণে ভঙ্গ দিলাম। মুক্তারকে বললাম- চল যাইগা। বিয়ার দরকার নাই।
--যাইগা মানে? কচি মেয়ে তো দেখলিই না।
-দরকার নেই দেখার।
--দরকার নেই মানে? এতক্ষণ বসলি। আরেকটু বয়। কাজ ফেলে তোর জন্য এখানে আসলাম। মেয়ে পছন্দ না করে যাচ্ছি না আমি।
-তাই বলে শেষে ষোল সতের বয়সের মেয়ে দেখবি? তোর কি মাথা খারাপ হইসে?
-- মাথা খারাপ হবে কেন? আগে তো মেয়ে দেখ। ভালো লাগলে পরে দেখা যাবে।
আমি ক্ষান্তি দিলাম। ভরসা ভাই বললেন -হ হ ভাই ঠিকই কইছে। বিয়া করবেন ত কচিই ভালা। স্বাদ আহ্লাদ কম থাকবো। নিজের মত বানাই লইবেন।
আমি আর কি বলবো? দুইজন বিবাহিত লোকের পাল্লায় পড়েছি। এরা নিশ্চয়ই নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছে। আস্তে করে মাথা ঝুকিয়ে দিলাম। যা আছে কপালে।
ভরসা ভাই একগাল হেসে কচি মেয়েদের এ্যালবামে হাত দিলেন।
পছন্দ হলো এইবার। একটা না। একেবারে তিনটা। আমি স্বীকার করতে বাধ্য হলাম যে কচি মেয়ের ক্যাটাগরি আসলেই কাজের। তিনটাই ইন্টারে পড়ে। বয়সটা নিয়ে ভিতরে খচখচ করতেই থাকলো। কিন্তু মুক্তার বিজয়ীর হাসি দিয়ে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো। কিছু বুঝার আগেই শালায় বাইক নিয়ে হাওয়া। আমার হাতে গুজে দিয়ে গেলো ওদের নাম ধাম ঠিকানা সবকিছু। বাড়ি ফিরে এলাম।
মুক্তার পইপই করে বলে দিয়েছে রাতে ফোন দিবি। নিজে বিয়ে করবি, মেয়ে একটু নিজে যাচাই করে নিবি না? এদিকে আমি কি করবো বুঝতে পারছি না। হাতে নাম্বার নিয়ে হাবার মত বসে আছি। শেষে ফোন দেওয়াই উচিত বলে মনে হলো। কাকে আগে ফোন দেই। দুইটা আছে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার। একটা ফার্স্ট ইয়ার। আমি ‘বড়’ একটাকে ফোন দিলাম।
-কে বলছেন?
--প্রীতি আছে।
-বলছি।
--আমি রিভান বলছি। ঘটক ভরসা ভাইয়ের কাছ থেকে আপনার নাম্বার পেয়েছি। তাই ভাবলাম একবার ফোন দেই।
-ও তাই? ঘটক ভরসা ভাই আমার নাম্বার দিয়েছে!?
--জ্বি।
-তা আপনার ঘটক ভাই আমার নাম্বার কেন দিলো?
--বিয়ে করবো তাই মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম ওখানে। আপনার ছবি দেখে পছন্দ হলো। তাই নাম্বার দিলো।
-ও আচ্ছা। তাই বুঝি? গুল মারার আর জায়গা পান না, তাই তো?
-- কি আশ্চর্য্য! গুল মারবো কেন?
-হু তা ত বটেই। আজ আপনাকে নাম্বার দিয়েছে। কাল আরেকজনকে দিবে। পরশু সারা বাংলাদেশ থেকে আমাকে মিসকল দিবে। সবাই ঘটক ভরসা ভাইয়ের কাছ থেকে নাম্বার পাবে। তাই না?
--আহা আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন?
- তো কি করবো?
--কথা তো শুনুন।
-তোর কথার আমি গুল্লি মারি।
--প্লিজ রাগ করবেন না। আমার কোন দোষ নেই।
-হারামজাদা ফোন রাখ।
আমি ভয় পেয়ে রেখে দিলাম। আধাঘন্টা পর হাত পা কাপাকাপি বন্ধ হলো। কি সাংঘাতিক মেয়ে মাইরি! আমি পুরো বিষটা নতুন করে ভাবার চেষ্টা করলাম। ভেবে মনে হলো মেয়ের আর দোষ কি? সুন্দরী মেয়ে। কত মানুষে ডিস্টার্ব করে! খেপে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে যে রাগ দেখলাম তাতে কোনভাবে যদি এর সাথে আমার বিয়ে হয়, তাইলেও জীবন একেবারে দফারফা হয়ে যাবে। এই মেয়েকে বিয়ে করা আর একে-৪৭ রাইফেল ঘরে রাখা একই কথা। আমি একটু শান্ত হয়ে ২য় নাম্বারে ফোন দিলাম। এইবার সাবধানে কথা বলতে হবে।
নাম্বার ১৫ মিনিট ধরে বিজি। আমি ১৮তম বার ট্রাই দিয়ে লাইন পেলাম।
-হ্যালো কে বলছেন?
-- ইয়ে রিভান বলছি।
-কোন রিভান?
-- আপনি আমাকে ঠিক চিনবেন না। আমি এক জায়গা থেকে আপনার নাম্বার পেয়েছি। আপনার সাথে একটু পরিচিত হতে চাই।
-কোথা থেকে নাম্বার পেয়েছেন?
--ইয়ে মানে বললে রাগ করবেন না তো!
-রাগ হবো কেন? বলেন শুনি।
--ঘটক ভরসা ভাই।
-হুম। ২৮ নাম্বার।
--২৮ নাম্বার মানে?
-কি করেন, কোথায় থাকেন, বয়স কত... তাড়াতাড়ি বলেন। ২৯ নাম্বার যেকোন সময়ে ফোন দিতে পারে।
--মানে? কি বলছেন এইসব? ২৮/২৯ আবার কি?
-উফ বুঝেন নাই? আপনে ২৮ নাম্বার ব্যক্তি যিনি ভরসা ভাইয়ের কাছ থেকে নাম্বার পেয়ে ফোন দিলেন। এর আগে ২৭ জন গেছে। যা বলার তাড়াতাড়ি বলে ফেলুন। আপনার সময় বেশি না।
আমি ভাষা হারিয়ে ফেললাম। ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চাই ঠিকমত দুধ পায় না। আর আমিতো ২৮ নাম্বার! হারামজাদা ভরসা! তুই আমারে আগে কবি না যে আমি ২৮ নাম্বার!!! আমি হতাশ হই। তবুও কথা চালিয়ে যাই।
--বাকি ২৭ জনের কি অবস্থা? কাউকে পছন্দ হয়নি?
- তা হয়েছে। রাজি থাকলে তিনজন কালকেই বিয়ে করবে বলেছে। দুজন প্যারিসে হানিমুনে নিয়ে যাবে বলেছে। আর বাকিদের মনে তেমন মনে ধরেনি।
--ও আচ্ছা! তাহলে আর দেখার কি দরকার?
-এমনিই দেখছি। আপনার কোন সমস্যা?
--না। কংগ্রাচুলেশন্স। বাই।
আমি ফোন নামিয়ে রাখলাম। মাথা গরম হয়ে গেছে। কচি মেয়ের গুল্লি মারি। ২কাপ চা খাওয়ার পর মাথা একটু পরিস্কার হলো। ভাবলাম আর কাউকে ফোনই দিবো না। কিন্তু কৌতুহল দমাতে পারলাম না। আর একটাই তো বাকি। ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার। তাছাড়া মাথাও গেছে আউলাইয়া। যা হবার সব আজকেই হোক। মাইরধর বকা ঝকা যা খাওয়ার সব আজকেই খাই। পরেরটা পরে দেখা যাবে। ফোন দিলাম। বার তিনেক রিং হতেই ধরল।
-হ্যালো?
-রিমি বলছেন?
- কে বলছেন?
-শুনুন। মন দিয়ে কান খুলে শুনুন। আমার নাম রিভান। আমি তিনবছর হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থে অনার্স করেছি। এখন চাকরি করছি। ব্যাচেলর মানুষ। বাবা মা নাই। আমার বন্ধুবান্ধব পাড়াপ্রতিবেশির মতে আমার বিয়ে করা উচিত। তাই আমি মেয়ে খুজছি। কচি মেয়ে। খুঁজতে খুঁজতে এক ঘটকের কাছে গিয়েছিলাম। সেই ঘটক আপনার নাম্বার দিয়েছে। তাই ফোন দিয়েছি। আপনি আমাকে খারাপ ভাবলে ভাবতে পারেন। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি বিয়ে করবো নিজে যাচাই করবো না? তাই ফোন দিয়েছি। আপনার খারাপ লাগলে স্যরি। প্লিজ মাইন্ড কইরেন না। এইবার বলেন আপনার কি মত?
একদমে কথাগুলা বলে থামলাম। ঐপাশ থেকে কোন সাড়া নেই। মিনিট গড়িয়ে যায়। অবশেষে দীর্ঘ নিরবতা ভাঙ্গে।
-তুমি বরঞ্চ কাল একবার এসো বাবা। বাড়িতে রিমির বাবাও থাকবে। রিমিও থাকবে। তখন না হয় বিস্তারিত আলাপ হবে?
--বাবা! ইয়ে আপনি কে বলছেন?
-রিমির মা। হালকা হেসে ফোন রেখে দেন উনি।
আমি বোকার মত ফোনটা ধরে বসে থাকি। পরদিন রিমিদের বাসায় যাই। লজ্জ্বায় কিছু বলতেই পারি না। কথা যা বলার মুক্তারই বলে। ছয়মাস পর বিয়ে ঠিক হয়। মেয়ের তখন আঠারো পুরা হবে। বিয়ে পাকাপোক্ত করে বেরিয়ে আসতেই মোবাইলে মিসকল। আননোন নাম্বার। কল দিলাম।
-কে বলছেন?
--‘কচি মেয়ে’ বলছি। গাধা কোথাকার। রিমি হাসে।
আমিও হাসি। গাধা বলেই তো এমন মেয়ে কপালে জুটলো, তাই না?