গভীর রাত। আকাশে চাঁদ আছে কিন্তু মেঘের কারণে দেখা যাচ্ছে না। অমাবশ্যার রাতের মতো অন্ধকার হয়ে আছে। নিজের হাত টাও দেখতে পারছে না লালমিয়া। থেকে থেকে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, যে কোন সময় বৃষ্টি নামতে পারে।
মায়ের কখা মেনে এই রাতে গৌরীপুর না গেলেই পারতাম.. ভাবছে লালমিয়া। না গিয়েও তো আবার উপায় ছিল না। একমাত্র মেয়েটা নাকি খুব অসুস্থ। সন্ধায় খবর এসেছে। বাড়িতে ফিরেছে লালমিয়া রাত ১১ টায়। বৌ বাড়িতে না থাকলে একটু দেরিতেই বাড়িতে আসে লালমিয়া। তারপর খেয়েদেয়ে বের হতে হতে ১২ টা পার হয়ে গেছে।
এতো রাতে রিক্সা - ভেন কিছু পায়নি লালমিয়া। হেটেই রওনা দিয়েছে। বৌ এর গ্রাম লালমিয়ার গ্রামের এক গ্রাম পরেই।
এতো জেরে জোরে বাজ পরছিল, লাল মিয়া কেঁপে কেঁপে উঠছিল বারবার।
বৃষ্টি ও শুরু হয়ে গেছে এরমধ্যে। একটা অশ্বথ গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছে লালমিয়া। আধাঘন্টা হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টি কমছে না। ভিজেই আবার রওনা দিল লালমিয়া। শ্বশুর বাড়ির গ্রামে পৌছাতে আরও ৩০ মিনিট এর মতো লাগবে। কিছুদূর যেতেই দেখে কেও একজন বসে আছে রাস্তার ধারে। লাল মিয়া ভাবল, যাক একজন সাথি পাওয়া গেলো এই রাতে। আরেকটু কাছে যেতেই দেখে একটা ২২/২৩ বছরের মেয়ে বসে আছে । বৃষ্টিতে ভিজে যুবুথুবু অবস্থা।
- এই যে, আপনি এতো রাতে বৃষ্টিতে ভিজে এখানে বসে কি করছেন?
-এই যে শুনছেন?
( কোনও কথা নেই)
-কি হলো আপনি কি কানে শুনেন না? আপনার বাড়ি কই?
লাল মিয়া কোনো উত্তর না পেয়ে মেয়েটির কাধে হাত রেখেআলতো নাড়া দেয় মেয়েটাকে।
মেয়েটি লাল মিয়ার দিকে মুখ ফিরে তাকায়..................
মেয়েটির চেহেরা দেখে লাল মিয়া ভয়ে জমে যায়। একি........মেয়েটির চেহারায় তো কিছু নেই! শুধু দুটি চোঁখ এর জায়গায় নীলচে আলো জ্বলছে।বাকি চেহারা রাতের মতো নিকোষ কালো অন্ধকার! লালমিয়া যেনো তার পা নাড়াতে ভুলে গেছে। হঠাৎ মেয়েটি খিল খিল করে হেসে উঠলো............লালমিয়া যেনো শরীরে শক্তি ফিরে পেলো। এমন জোরে দৌড় মারলো.......৩০ মিনিটের রাস্তা ৫মিনিটে পৌছালো। শ্বশুর বাড়ির সবাই ঘুমে অচতন। বৌ এর ঘরের দরজায় কড়াঘাত করেছ লালমিয়া আর বৌ এর নাম ধরে ডাকছে। দরজা খুলে এতো রাতে বৌ তো লালমিয়াকে দেখে অবাক। তারাতারি সে তার স্বামী কে শুকনো কাপড় দিল পরার জন্য। লালমিয়া এক গ্লাস পানি চাইলো। কাপা কাপা হাতে পানি পান করছে লালমিয়া। লালমিয়ার বৌ জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোমার ?এমন করে কাপছ কেনো? লালমিয়া তার ভয়াল অভিজ্ঞতার কখা বৌ কে বলে। মেয়েটার কোন মুখ নেই, শুধু চোঁখের জাযগায় নীল আলো বসানো! খিল খিল করে হাসছিল! লাল মিয়ার বৌ বলে দেখতো এমন কিনা.....................বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো................
লিাল মিয়া ২য় বারের মতো অজ্ঞান হয়ে যায়। একটু পরেই লালমিয়ার বৌ এর ঘর থেকে ভেসে আসে আর্তনাদের আওয়াজ……………………………..
শুকুর আলি প্রতিদিনের মতো আজও তার প্রাতকর্ম সারতে জঙ্গলে গেছে। গুণ গুণ করে বাংলা গানের সুর তুলার চেষ্টা করছে সে আনমনে।হঠাৎ সে খেয়াল করলো তার থেকে পাঁচ হাত দূরের ঝোপ থেকে দুটি পা বের হয়ে আছে। ভয় লাগলেও সে কাছে এগিয়ে দেখে একটা লাশ পরে আছে, যার মুখমন্ডলের চামড়া কে যেনো প্রবল আক্রশে চিরে ফেলেছে। লাশের চোখ দুটি বের হয়ে ঝুলে আছে কোটর থেকে। .........................।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৭