সম্প্রতি ভারতীয় গোয়েন্দা রির্পোটের ভিত্তিতে ইন্ডিয়ান পত্রিকা টাইমস জানায়, বর্তমান বাংলাদেশের আম্লীগ সরকার জনপ্রিয়তা হারিয়েছে এবং তারা আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারবেনা-যা ভারতীয়দের জন্য খুবই চিন্তার ও মাথা ব্যাথার কারন বলে তারা মনে করেন। আম্লীগ সরকার জনপ্রিয়তা হারিয়েছে এটা দেশে বিদেশে সবাই জানে-এটা নিয়ে গবেষণায় চারআনা খরচেরও দরকার নেই। কিন্তু ভারতের তাতে মাথা ব্যাথার কারণ আছে, যেমন বিগত নির্বাচনে বস্তায় বস্তায় টাকা ও বুদ্ধি পরামর্শ বিনিয়োগ করে ভারত যে দালাল তৈরী করেছে, সেই দালাল ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশের মানুষের কোনো উপকার না হলেও ভারতের অনেক ক্ষতি হবে। ভারত বাংলাদেশের সাথে কোনো কালেই বন্ধুত্বের হাত নিয়ে এগিয়ে আসেনি। এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধেও তারা আমাদের সহায়তা করেছিলো পাকিস্তানকে শায়েস্তা করতে ও বাংলাদেশ নামক একটি নির্ভরশীল ভারতীয় স্বাধীন কলোনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। যার সুস্পষ্ট লক্ষন আমরা দেখেছিলাম ২৫ বছরের মৈত্রীচুক্তির প্রতিটি শর্ত বা ধারায় ধারায়। যদিও আমরা এখনো ভারতের কথিত সাহায্য সহযোগিতাকে মানবিক হিসাবে বিবেচনা করি, কখনোই ভারতীয় বিনিয়োগ হিসাবে দেখিনা। কিন্তু ভারত সব সময়ই ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়েই বাংলাদেশের সাথে আচরণ করে। বাংলাদেশকে নিজেদের পণ্য বিক্রি ও সুবিধা আদায়ের অভয়ারন্য হিসাবে ভারত সব সময়ই চায় একটি দালাল সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসুক-যারা ন্যায্য ফি/শুল্ক চাইতেও লজ্জা পাবে। কারণ দলটির পেছনে তাদের বিনিয়োগ আছে। ভারত বাংলাদেশের বানিজ্য ঘাটতি দেখলে যেকোনো নাগরিক এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারবেন। লুক্কায়িত অর্থনীতি দৃশ্যমান বানিজ্য ঘাটতির চেয়েও তিন গুন বেশী বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের নাগরিকগণই সিদ্ধান্ত নিবেন বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রক্ষমতায় কাদের আসা উচিত, ভারতীয় দালালদের নাকি বাংলাদেশপ্রেমী কোনো রাজনৈতিক শক্তির। ভারতীয় গোয়েন্দারা তিস্তাচুক্তি করতে, অমিমাংসিত সীমানা ঠিক করতে ও বহুবিধ সমস্যা যা ভারত জিইয়ে রেখেছে-সেগুলোর আশু নিষ্পত্তির জন্য ভারত সরকারকে পরামর্শ দিলেও, আমাদের দালালরা এসব না নিয়েও হ্যাপী। সীমান্তে গুলিতে বাংলাদেশী মরলেও হ্যাপী, কাটাতারে ঝুললেও হ্যাপী। দালালী যেখানে অনিবার্য্য, সেখানে ন্যায্য অধিকার তিরোহিত।
বন্ধুহীন বাংলাদেশ, গোলামীতে নিমজ্জিত সরকার:
কেবল ভারতকে খুশী করতে গিয়ে বাংলাদেশ আজ কার্যত বর্হিবিশ্বে বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে-যার দায় দালালরা ভোগ না করলেও এদেশের জনগণকে বহুভাবেই এর মূল্য দিতে হবে। বিনা ফিতে ট্রানশিপমেন্ট, বিনা শুল্কেই নৌচুক্তি, তিস্তার পানি অপ্রাপ্তি, স্বাধীনতাকামীদের ধরে ধরে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া, সীমান্তে হত্যাকান্ডকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নীরবে মেনে নেওয়া, ভবিষ্যত হত্যাকান্ডকে এখনই বৈধতা দেওয়া, টিপাইবাধঁকে বাংলাদেশের জন্য কল্যাণকর সার্টিফিকেট দেওয়া, সারী নদীতে বাধঁ দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদহীন চেপে যাওয়া, ভৈরব নৌবন্দরকে দান করা, নদীতে বাধঁ দিয়ে ভারতীয়দের গাড়ী পার করে দেওয়া-এসব মহান কর্মে সরকার ব্যস্ত থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা নেওয়ার দায় শোধ করতে গিয়ে পৃথিবীতে আরো যে রাষ্ট্র আছে, তাদের যে অবদান আছে আমাদের অর্থনীতিতে তা সরকার ভুলে গিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলোর সাথে বর্তমান সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যাযে চলে আসলেও সরকার অবিশ্বাস্যভাবে এটাকে অবহেলা করছে। হয়তো আম্লীগ ভাবছে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সংকোচিত হলেও ভারতের আর্শীবাদে ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন তাদের স্ফীত/বাড়বেই!! ক্ষমতা পরিবর্তমনের মালিক জনতা হওয়ায় জনতার ভূমিকাকে হ্রাস করে তারা ইতিমধ্যেই সংশোধনী এনেছে নিজেরা ক্ষমতাসীন থেকেই নির্বাচন দিবে। এই জাতীয় তামাশার নির্বাচনে পাবনার হেমায়েতপুর থেকে ৩০০ পাগলকে এনে নির্বাচন করতে বললেও তারা রাজী না হয়ে আবারো গারদে যেতে চাইবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলতো দূরের কথা।
প্রতিহিংসায় দূর্বিনীত সরকার ব্যাংকলুটের ধারাবাহিকতায় সিদ্ধহস্ত :
ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানলুটের ইতিহাস আম্লীগের ঐতিহাসিক চরিত্র। বাংলাদেশ জন্মের পরপরই ব্যাংকলুটের সাথে এদের সম্পৃক্ততা ব্যাপক জনশ্রুত। তারপর আর পেছন ফিরতে হয়নি। যতবার তারা ক্ষমতায় এসেছে ততবার তারা জনতার অর্থলুট করেছে। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন হয়ে তারা শেয়ারবাজার থেকে কোটি কোটি টাকা লুপাট করে দরিদ্রদেশবাসীকে নিঃস্ব করেছে, নিজেদের করেছে সমৃদ্ধ, অর্থনৈতিক ইতিহাসকে করেছে তারা কলংকিত। যথারীতি এবারও তারা তাদের ঐতিহ্য বজায় রেখেছে, অতীতের চেয়ে বেশী সক্ষমতার সহিত। নিজেদের লোক দিয়ে তদন্ত করে, সেটা প্রকাশ করার রিস্কও তারা নিতে পারেনি, শাস্তির ব্যবস্থাতো পরের কথা। খেটে খাওয়া মানুষ বেচেঁ থাকার অবলম্বন হারিয়ে এখন সন্মানহীন পলায়নপর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে-এই লুটেরাদের কারনে। নিলর্জ্জ রাষ্ট্রব্যবস্থা জনগণকে ফটকাবাজ উপাধিতে সন্মানীতি করেছে, তবুও এরা কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে? সেজন্যই হয়তো নিজেদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার মামাবাড়ীর আব্দার!
৮৩ লাখ দরিদ্রগ্রাহকের ব্যাংক দখল ও অন্তর্জালা মেটাতে বিদায় করে সন্মানিত নোবেল বিজয়ীকে। সর্বোচ্চপর্যায় থেকে মিথ্যাচার শুরু হয়ে সমকামী নেতাদের কোরাসে রূপান্তর হয় ডক্টর ইউনুসের প্রতি বিষোদগার। সকল প্রত্যাশা, অনুরোধ, উপরোধ, পরামর্শকে দুপায়ে মুড়িয়ে তারা সংশোধন করে ব্যাংকের আইন-তবুও ব্যাংকটিকে তাদের দখল করতেই হবে। দলবাজ বুদ্ধিজীবী, মেথর সাংস্কৃতিক জোট, খয়ের খাঁ সম্পাদককের ফতোয়ায় প্রকাশ পায় সরকারের হাতেই নাকি গ্রামীন ব্যাংক ভালো থাকবে!! এই শুয়োদের কানে ইতিমধ্যেই এসেছে সোনালী ব্যাংকের ঋণকেলেংকারীর খতিয়ান। সোনালী ব্যাংকের আম্লীগী পরিচালকরা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক জালিয়াতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। কোনো উপদেষ্টার ব্যাংকে আনাগোনার ফটোও পাওয়া যাচ্ছে। অথচ এই বেহায়ারা গ্রামীন ব্যাংককে সরকারের অধীনে আনতে বলে কোন মুখে? সরকারী ব্যাংক গুলোর মতোই গ্রামীন ব্যাংককে ধ্বংস করার ভয়াবহ মিশনে আম্লীগ এত মরিয়া কেন? সচেতন পাঠক আম্লীগের জ্ঞানপাপীদের কাছে জানতে চাইতে পারেন, সোনালী ব্যাংকের এই হাল করার পর আম্লীগকে বিশ্বাস করলে কি পাপ হবেনা?
একজন রোজিনা আক্তার ও তার চ্যালেঞ্জ:
সরকার গ্রামীন ব্যাংক পরিচালনা করলে ভালো ভাবে চলবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক পরিচালনা পর্যদের সদস্য রোজিনা আক্তার বলেন, ‘‘আমরা সুন্দরভাবে গ্রামীন ব্যাংক চালিয়ে আসছি, সরকারী মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক থেকেই সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের সোনালী ব্যাংক চালাতে দেন, দেখেন, কত সুন্দরভাবে চালাতে পারি ।’’ এটাই সত্য। ধন্যবাদ রোজিনা, আপনাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের মানসকন্যাকে শিখতে হবে কিভাবে লুটপাট না করে ব্যাংক চালানো যায়, কেবল আন্তরিকতা ও দেশপ্রেম থাকলে।
মফিজ জনতার জিজ্ঞাসাঃ সচেতন ব্লগাররা পথ দেখাবেন আশা করি-
--বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনে দিল্লির মাথা ব্যাথ্যা কেন?
--ভারত কেন বস্তায় বস্তায় টাকা ও পরামর্শ বিনিয়োগ করে?
--বন্ধুহীন বাংলাদেশকে গোলামীর শিকল কারা পড়াতে চায়?
--ডক্টর ইউনুস বিতাড়নের মাধ্যমে আম্লীগ কি অর্জন করতে পারবে?
--সোনালী ব্যাংকের লুটপাটের জন্য দলীয়দাসদের বিচার কি ফরজ নয়?
--কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরোদ্ধে সীমাহীন প্রতিহিংসা কি শপথভঙ্গের আওতায় পড়েনা?
আশাহত জনতা শব্দহীন সয়ে যাচ্ছে নির্মম রসিকতা, উদয়াস্ত পরিশ্রম করেও নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। নিরাপত্তাহীনতায় পঙ্গু লিমনের মতোই গগণ বিদারী চিৎকার ছাড়া আর কোনো ক্ষমতা মানুষের নেই। শাসকের প্রতিহিংসায় নুয়ে পড়া সংবিধানের সঙকে চিরতরে বিদায় করতে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত গুমহীন বেচেঁ থাকার স্বপ্নদেখা/প্রত্যাশা করা কি অন্যায় হবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:৪৬