তারিখ টা মনে নেই তবে সাল টা মনে আছে, ২০০৩ সাল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আম্মাকে সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসে গেছি, কিন্তু কিছুই চিনিনা, ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে যতটুকু চিনেছি। কিন্তু ভর্তি মানে যে এত হ্যাপা তা জানা ছিলোনা, ঘুরতে ঘুরতে দম বের হবার উপক্রম। এমন সময় কালো ছিপছিপে একটি ছেলের সাথে দেখা, সে সাহায্যের হাত বাড়ালো কিন্তু আম্মার তাতে কেন জানি মন সায় দিচ্ছিল না। তারপরও তাার সাথে গিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পাদন হলো, কথায় কথায় জানতে পারলাম সে অন্য এক ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র। তবে মজার ব্যাপার হলো তার সঙ্গে যে টেবিলেই গেছি সেখানে সঙ্গে সঙ্গে কাজ সমাধা হয়ে গেছে। কিন্তু সে কারও সাথে কোন রকম উচ্ছস্বরে কথা পর্যন্ত বলেনি। যাই হোক ভর্তি হয়ে বাসায় এলাম, কিন্তু কেন জানিনা তার কথা শুধু মনে পড়ছিল। দুই তিন দিন পরে আমার এক বড়ভাই যে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাকে ঐ ছেলেটির নাম বলে জানতে চাইলাম বিস্তারিত। উত্তরে সে বললো সেতু ভাইয়া শুধু আমাদের কাছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবার অতি প্রিয়। সবার সাথে খুবই ভাল সম্পর্ক তার, সবাই তাকে যেমন ভালোবাসে তেমন শ্রদ্ধাও করে। উল্লেখ্য আমার সে উপকারী বন্ধুটির নাম সেতু।
যাই হোক, এর কয়েকদিন পরে যখন ক্লাস শুরু হলো তখন ক্যাম্পাসে শুধু তাকেই খুঁজি কিন্তু কোথাও তার দেখা মেলে না। এমন এক পর্যায়ে কিছু সিনিয়র আমাদের Rag দিতে ব্যস্ত, আর তখনি এসে হাজির আমার বন্ধু। এসে বললো (সিনিয়রদের) যা করেছিস ভালো করেছিস, আর যেন কখন ও ওর আশপাশে না দেখি, সিনিয়ররা জ্বি ভাইয়া বলে বিদায় নিলো।
আমি তাকে বললাম, বাড়ি দূরে, এক আত্নীয়ের বাড়িতে অস্থায়ীভাবে থেকে ক্লাস করছি, হলে সিট পেলে সুবিধা হতো। শুনে বললো বেশতো, আপাতত কিছুদিন ডাবলিং করে থাকো, কিছুদিন পরে তোমার সিটের ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে। আমি বললাম কোন সিনিয়রকে তো চিনিনা, কিভাবে ডাবলিং করবো। শুনে সে বললো চলো ক্যান্টিনে যাই দেখি তোমার কোন ব্যবস্থা হয় কিনা। ক্যান্টিনে এসে আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার প্রিয় খাবার আইসক্রিম দিলেন এবং নিজে চা নিলেন। জিজ্ঞাসা করলাম আইসক্রিম যে আমার প্রিয় আপনি জানলেন কি করে। উত্তরে বললো, সে অনুমান করেছে। এরপর তার এক বান্ধবীকে ডেকে আমার আবাসন সমস্যা আলোচনা করে আমার সঙ্গে তাহমিনা আপুর (তার বান্ধবী) পরিচয় করিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন চাইলে আমি এখনই বা যখন খুশী হলে উঠতে পারি।
চলবেঃ