নাগরিক কবিতা- ১
ইট-কাঠের খাঁচায় বাঁধা এ প্রানের সাথে
যদি সন্ধি চাও, তবে এসো
তোমার জন্য জানালাগলা জ্যোৎস্নার ফুল রেখেছি
তুমি আসলেই মালা গেঁথে দেব
আমার ব্যালকনিতে অবহেলায় জন্মানো
আগাছার দলে শিশির জমলে তোমায় নিমন্ত্রন
তোমার নুপুরে বাঁধা খালি পায়ে
তুমি শিশির মেখে যেয়ো
বিকেলের অবসরে পার্কের বেঞ্চির বদলে
আমার ছাদের কার্নিশে পা ঝুলিয়ে বসবো
উষ্ণ কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে
তোমার ঠোঁটের উষ্ণতাটুকু কামনা করবো
সন্ধ্যা পেরোলে তোমাকে নিয়ন আলোয়
জমাটবাঁধা সুখের অশ্রুকবিতা শোনাবো
ইট-কাঠের খাঁচায় বাঁধা এ প্রানের সাথে
যদি সন্ধি চাও, তবে এসো।
কাপুরুষ
নগরে কারা নাকি সন্তান উৎপাদন কেন্দ্র খুলেছে
আমরা বসে আছি, সারি সারি একদল কাপুরুষ
নবাগত শিশুগুলোকে বরন করে নেব-
ওদের কপালে বেজন্মার তিলক পরিয়ে
বালিকার শরীরে চুমু খেয়ে বলেছিলাম-
তোমাকে ঘরনি করে নেব, তুমি আমার হবে
বালিকার সব ঘ্রাণ চুরি করে নিয়ে
বালিকার গলায় বেশ্যার নেমপ্লেট ঝুলিয়েছি
আমাদের সমাজ, আমাদের প্রেমিকারা
আমাদের ভয়ে আকাশ দেখেনা
তবু, দিনশেষে আমরা সব কাপুরুষের দল
মাথা নিচু করেই ঘরে ফিরি।
নাগরিক কবিতা-২
নাগরিক রাতে শুধু আমি একা রাত জাগিনা
পাশের বাড়ির মেয়েটাও রাত জাগে
জানালায় মাথা রেখে হারিয়ে যাওয়া কারো জন্য কাঁদে
একদল পতিতাও রাত জাগে, ক্লেদ আর গ্লানি নিয়ে
নিয়ন আলোয় রাতজাগা একদল পথিক হেঁটে যায়
একা নিঃসঙ্গ একদল পথিক, যারা কেউ কারো নয়
তবু অনুভূতি ভাগ করে চলে, পিচঢালা রাস্তার সাথে
অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা উন্মত্ত যৌনলীলার রাতে
আমি হাঁটি, পেছনে এক খোঁড়া বাদামী কুকুর
আমার পায়ের শব্দে অন্ধ এক ভিক্ষুক জেগে উঠে
ভিক্ষার আশায় দিনের অভ্যাসে আর্তনাদ করে
আমি তাকে পেরিয়ে এগিয়ে যাই, কোলাহলের দিকে।
(আজ ব্লগের প্রিয় এক কবির জন্মদিন। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাসহ আমার শততম পোষ্ট উৎসর্গ করলাম। তিনি মন খারাপ করা মেয়ের মনের গহীনে বাস করেন- নস্টালজিক রানা ভাই )