somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দূর্যোধন কথন -০৩

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হসিনিপুরে যেন শৈত্যপ্রবাহের নহর বহিয়া যাইতেছে।
ঈশ্বরকে দুইদন্ড গালিবর্ষন করিতে গিয়া দূর্যোধনের দন্তকপাটি লাগিয়া যাইবার উপক্রম হইলো-এমনি শৈত্যপ্রবাহ!!এমন দূর্যোগের কারন অনুসন্ধানে সে দুঃশহালাকে ডাকানো সাবাস্ত্য করিলো।

দুঃশহালা উপস্থিত হইতেই ফিক করিয়া হাসিয়া দিলো,শৈত্যপ্রবাহের চোটে দুঃশহালার সর্বদাবিকশিত দন্তরাজি সুদীর্ঘ ২৫ বৎসর পর ওষ্ঠের আড়ালে লুকাইয়াছে !

''এমন শৈত্য প্রবাহের কারন খানি অনুমান করিতে পারো হে ভগিনী?? '', জিজ্ঞাসিলো দূর্যোধন।

দন্ত ব্যাদান করিয়া দুঃশহালা বলিলো,''বিধায়ক,আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিগত যেকোন সময়ের তুলনায় আরামদায়ক!!''

দূর্যোধন মনে মনে খিস্তি করিয়া উঠিলো,মুখে কিছু বলিলোনা। মাগীর নারানং শৈত্যপ্রবাহক্রম !!
উহাকে নিস্ক্রান্ত হইতে দিবার অবসরটুকু দিয়া বাটীতে ফিরিয়া বিদ্যা নর্তকীর 'উলালা উলালা' সঙ্গীতে দেহ উষ্ণ করিবার ফন্দি আটিলো।

যথাযময়ে বাটীতে প্রত্যাবর্তন করিয়া গা এলাইবার আয়োজন করিতেছিলো দূর্যোধন।হঠাৎ হৈ হৈ করিয়া ছুটিয়া আসিলো দিপিকামিনী,আলুথালু বেশে সাক্ষাৎ ,সঙ্গে করিয়া দুঃশহালাকেও বগলে করিয়া নিয়া আসিয়াছে !

''বিধায়ক,নায্য বিচার চাই!রাজা ভরত আমার ইয়ে মারিয়া দিয়াছে...ঈ...ঈ...ঈ... ! '' ডুকরিয়া উঠিলো দিপিকামীনি।

দূর্যোধন বিস্মিত হইলো,''খুলিয়া বলো!''
দিপিকামীনি বলিলো, ' শৈত্যপ্রবাহে নিজ বাটীতে স্নান করিতে গিয়া দেখি পানি নাই,পানি আনিতে গেলাম রাজা ভরতের প্রাসাদে... '' বলিয়া ফের ডুকরাইয়া উঠিলো দিপিকামীনি।
দূর্যোধন বিরক্ত হইয়া বলিলো,'আমার প্রাসাদেই তো আসিতে পারিতে,রাজা ভরতের ঐখানে আবার কিজন্য গেলে?''

দিপিকামীনি কিঞ্চিৎ লজ্জা পাইলো,আরক্ত হইয়া বলিলো,''বিধায়ক,রাজা ভরতের প্রাসাদে নন্দনকাননের বিখ্যাত ঋষি শারুখ সকল অপ্সরাকে উষ্ণপানিতে স্নান করাইবেন শুনিয়া গিয়াছিলাম,আপনার এইখানের প্রাসাদের ঋষি শাকিভ তো ঠান্ডা পানিতে চুবাইয়া চুবাইয়া আমার রুপলাবন্য আলমমুচির ১নং পচা ক্ষারের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ বানাইয়া দিয়াছে !! ''

দূর্যোধন হুংকার দিলো,''আগে বাঢ়ো!''
দিপিকামীনি বলিয়া চলিলো,''সেই উষ্ণপানিতে স্নান করিয়া রুপলাবন্য ফিরাইয়া আনিতে হাজির হইলাম ভরতের প্রাসাদে,হতচ্ছাড়া পানি দিল না ! উহার বদলে গোদরেজ ১নং আশ্বাস ক্ষার দিয়া বলিলো ইহা মাখিলেই আমার রুপলাবন্য ফিরিয়া আসিবে!! ''
পার্শ্বে বসিয়া মাথা নাড়িয়া হুঁহুঁ করিয়া সাক্ষ্য দিলো দুঃশহালা।
একটু দম নিয়া দিপিকামিনী বলিলো ,''ঐ গোদরেজ ১নং আশ্বাস ক্ষার মাখিয়া আমার কৃষ্ণবর্ন আরো ঘোরতর কৃষ্ণ হইয়া গিয়াছে ,বিধায়ক ! সকলেই আমাকে নিয়া হাস্য করিতেছে ! এমনকি বেপাড়ার চরিত্রহীন ষ্ম্লেচ্ছ হকিংদাস আমার মুখ নিয়া কটু কথা বলিয়াছে !! ''
দূর্যোধন হতভম্ব হইয়া বলিলো,''মানে ??''
পার্শ্বদিক হইতে দুঃশহালা ফুট কাটিলো ,''উহার কৃষ্ণবিবর লইয়া নাকি গবেষনা করিবে ! ইহাও কুরুক্ষেত্র পরবর্তী বিচার বাধা দিবার.....''
দূর্যোধনের দন্তখানি কিড়মিড় করিয়া উঠিলো,তবে সেটা রাগে নাকি শৈত্যপ্রবাহে-তার কারনটা ঠিক বুঝা গেলোনা।

দিপিকামীনি আবার মুখ খুলিলো,''আমি রাজা ভরতকে বলিলাম,দূর্যোধন তোমাকে আচ্ছাসে বকিয়া দিবে।উহা শুনিয়াই রাজা ভরত বলিয়াছে পাওনা মুদ্রা ফিরত দিতে।নইলে আপনার ল্যাঙোটখানা খুলিয়া নিশানরুপে উড়াইবে!....''

দূর্যোধন থামাইয়া দিলো। রাজা ভরত ব্যাটার দুইটা কড়ি হইয়াছে বলিয়া আজকাল ধরা কে সরা জ্ঞান করিতেছে।এদিকে দূর্যোধন তাহার শতসদস্য বিশিষ্ট পরিবারের খাই খরচা মিটাইতে গিয়া সর্বস্বান্ত হইবার যোগাড়।চিন্তায় আচ্ছন্ন হইয়া দূর্যোধন শকুনিমামার শরনাপন্ন হইলো।


''মাতুল,শৈত্যপ্রবাহে জীবন ওষ্ঠাগত,ঋনপ্রবাহে দূর্যোধন ওষ্ঠাগত,ছাগপ্রবাহে রাজ্য ওষ্ঠাগত.... উপায় বলিয়া রক্ষা করুন,প্রজাকূল খেপিয়া উঠিয়াছে '',কাকুতি করিলো দূর্যোধন।

শকুনিমামা হাস্যমুখে বলিলেন,''হসিনিপুর ভাগ করিয়া ফেলো,শৈত্যপ্রবাহ হইতে শুরু করিয়া ছাগপ্রবাহ পর্যন্ত অর্ধেক হইয়া যাইবে।''

দূর্যোধন বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞেস করিলো,''ভাগ করিবো কি দিয়া?''

শকুনি মামা স্মিতমুখে মালকোঁচার ভিতর হইতে একখানা রামদা বাহির করিলেন,দেখিয়াই দূর্যোধন বুঝিলো এই রামদা ধারালো নহে !!
দূর্যোধন গজগজ করিয়া বলিলো ,''এই ধারহীন রামদা দিয়া ভাগ করিবো? রাজা ভরতের ঋনের ব্যপারে প্রজাকূলকে কি বলিবো ? ''





শকুনিমামা প্রসন্নমুখে বলিলেন, ''বলিবে........ধার করিতেছি ভাগ করিবার জন্য,ঘি খাইবার জন্য ধার করিতেছিনা ''














______________________________________________________________
একইসাথে নিজস্ব ব্লগস্পটে প্রকাশিত।


@সামহোয়্যারে অপ্রকাশিত আরেকটি লেখার লিংক সরকারের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী সাহসী কুকুর-লুকানিকোস
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫১
১২১টি মন্তব্য ১২০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×