পশ্চিম জার্মানীতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ অলিম্পিক,১৯৭২ এ ৫সেপ্টেম্বর রাতে ৮ জন সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গেরিলা ( ধারনা করা হয়,তারা ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ গ্রুপের সদস্য,ফেদাইন) ঢুকে পড়ে ইজরায়েলী ক্রীড়াবিদদের গেমস ভিলেজে।মোট ১১ জন ইজরায়েলী অ্যাথলেটদের মাঝে ঘটনাস্থলেই ২ জন মারা যায়, বাকি ৯ জন কে জিম্মি করা হয়।পরবর্তীতে জার্মান পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৫ জন গেরিলা নিহত হয়,৩ জন আহত অবস্থায় ধরা পরে।তবে তারা ধরা পরার পূর্বেই বাকি ৯ জন ইজরায়েলি অ্যাথলেটকে হত্যা করে।
ঘটনাটি বিশ্বমিডিয়ায় স্বভাবতই ব্যাপক সাড়া ফেলে, এবং গোল্ডা মেয়ার নেতৃত্বাধীন ইজরায়েলি সরকার নিজ দেশের জনগন এবং সারা বিশ্বে নিজেদের অহমিকায় আঘাত লাগায় ক্ষুন্ন ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হয়। পরিকল্পনা করা হয় Operation Wrath of God ( অভিযান-প্রভুর ক্রোধ),ঠিক করা হয় ১১ জন ইজরায়েলি অ্যাথলেট হত্যার প্রতিশোধে ঐ ঘটনায় জড়িত ১১ জন প্যালেস্টাইনি গেরিলা কে হত্যা করার।
স্পিলবার্গের মিউনিখ ছবিটির প্রিলুড হিসেবে এই ঘটনাকে ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মিউনিখ ছবিতে এই 'অভিযান-প্রভুর ক্রোধ' এর টীম লিডার হিসাবে নির্বাচন করা হয় জার্মান বংশোদ্ভুত একজন তরুন মোসাড অফিসার আভরাম কফম্যান(এরিক ব্যানা),যে ছোট বেলা থেকেই পিতার পরিচয় জানে না, নির্দয়,বড় হয়েছে ইহূদি কৃষিজীবি গোত্রে এবং একটা সময় প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ারের দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেছে।নিজের ভেতর ভালোবাসার প্রকাশ কখনো টের না পেলেও তার স্ত্রী গর্ভবতী হবার পর থেকেই নিজের পরিবারের প্রতি তার আকর্ষন টের পাওয়া শুরু হয়।
তার টীমমেট হিসেবে যুক্ত হয় স্টীভ(ড্যানিয়েল ক্রেইগ) যে একজন দক্ষিন আফ্রিকান ইহুদী ড্রাইভার,হ্যান্স ( হ্যান্স জিসলার) যে কাগজপত্র জাল করতে দক্ষ,রবার্ট (ম্যাথু কাসোভিচ) যে একজন বেলজিয়ান এবং খেলনাগাড়ী প্রস্তুতের পাশাপাশি বোমা তৈরী ও নিস্ক্রিয়করনে দক্ষ , কার্ল (সিয়ারান হিনস) যে একজন প্রাক্তন ইজরায়েলি সেনা এবং মূলতঃ ঘটনাস্থলের আলামত নষ্ট করে।
এদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে ঠিক করা হয় এফ্রেইম (জিওফ্রে রাশ)কে।
তারা ধরা পরলে ইজরায়েল যেনো সকল প্রকার দায়দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে,সেই লক্ষেই আভরাম কে মোসাড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।একই সাথে একটি নির্দিষ্ট ব্যাংকের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ওঠানো ছাড়া আর কোনো যোগাযোগ থাকবেনা বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
পুরো টীম মিউনিখ হত্যায় জড়িত থাকা বলে অভিযুক্ত ১১ জন প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করতে বের হয়ে যায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।
এই ১১ জনকে খুঁজে বের করতে সাহায্য নেওয়া হয় লুই নামের এক ফ্রেঞ্চ ইনফর্মারের (ম্যাথু অ্যামেলরিক) যে কিনা অর্থের বিনিময়ে ইজরায়েল,প্যালেস্টাইন-উভয় পক্ষের কাছেই তথ্য বিক্রি করে।
আভরামের দল একটির পর একটি প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করতে শুরু করার কিছুদিন পরেই বুঝতে পারে তারাই শুধু শিকারীর ভুমিকায় নেই,প্যালেস্টাইনিরাও শুধুই শিকার নয়...বরং প্যালেস্টাইনিরাও এখন শিকারে নেমেছে।দুই পক্ষের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকার একটা সময়ে আভরামের দল থেকেই এই মিশনের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়।১১ জন প্যালেস্টাইনির যতজন কে হত্যা করা হতে থাকে ,তাদের স্থলাভিষিক্ত হতে থাকে আরেক প্যালেস্টাইনি,একই সাথে প্যালেস্টাইনিরা তাদের সঙ্গীদের হত্যার বদলা নিতে আরো বেশি করে হামলা চালিয়ে যেতে থাকে সর্বত্র,সুতরাং এর শেষ কোথায় ? এর ফল কি ?
একটা পর্যায়ে আভরামের সঙ্গিরাও খুন হওয়া শুরু করে,আভরাম তখন ছুটতে থাকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে....নিজের, নিজের পরিবারের,নিজের সদ্যজাত কন্যার নিরাপত্তা নিয়ে সর্বদা শংকিত আভরাম ধ্বসে যেতে থাকে নিজের ভেতরে।উপলব্ধি করে রাস্ট্র এগিয়ে আসবেনা,অথচ রাস্ট্রের জন্যই তার নিজের এবং তার পরিবারের জীবন ঝুঁকিতে!
মোটামুটি এই হলো ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি মিউনিখের কাহিনী।
৫ টি ক্যাটাগরীতে অস্কার মনোনয়ন পাওয়া মিউনিখ তৈরি করতে খরচ হয়েছিলো ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার,আয় করছিলো প্রায় ১৩০ মিলিওন মার্কিন ডলারের মত। বিশ্বখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের পরিচালনায় এ ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন আরেকজন বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার টনি কুশনার।
ছবিটির পটভুমির বিষয় বেশ সংবেদনশীল হওয়ার কারনে স্পিলবার্গ পরবর্তীতে ছবিটির টাইটেলে 'সত্য ঘটনার অবলম্বনে কাল্পনিক' বাক্যটি যুক্ত করেন। তবে যেই বইয়ের কাহিনী নিয়ে এর চিত্র নাট্য লেখা হয়েছিলো ( Vengeance: The True Story of an Israeli Counter-Terrorist Team ) ,তার প্রধান চরিত্রে ছিলেন একজন বাস্তবেই ইজরায়েলি সিকিউরিটি কনসাল্ট্যান্ট এবং ইনফর্মার জুভাল আভিব ।
ছবিটির বিতর্কিত হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলার আগে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা ব্যক্ত করলে ছবিটি দেখার সময় কিছুটা সুবিধা হবে।
ছবিতে খেয়াল করলে দেখবেন, প্যালেস্টাইনি গেরিলাদের ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।আমার মত হয়তো অনেকেরই ধারনা থাকতে পারে মিউনিখে সেপ্টেম্বর মাসে হত্যাকান্ড ঘটানোর কারনে এদের নাম 'ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর'।আসলে ব্যাপারটা অন্যরকম।সেপ্টেম্বর ,১৯৭০ এ পি.এল.ও (ইয়াসের আরাফাত নেতৃত্বাধীন) জর্ডানের বাদশা কিং হুসেইনের বিভিন্নরকমের ইজরায়েল-তোষন নীতির বিরুদ্ধে ক্যু'দেতা করলে প্রায় ৩ সপ্তাহব্যাপী রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়,জর্ডানের বাদশার ক্র্যাকডাউনের ফলস্বরুপ প্রচুর সংখ্যক প্যালেস্টাইনি নিহত এবং জর্ডান ছাড়তে বাধ্য হয়।সেখানে থেকেই এই নামটির উৎপত্তি।
১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত প্যালেস্টাইনিরা বেশ কয়েকটি প্লেন হাইজ্যাক করে।অনেকের কাছেই বিশেষ করে পাশ্চাত্য মিডিয়ায় মহিলা ছিনতাইকারী লায়লা খালেদকে বেশ হিরো আইকনিক করে দেখানো হতে থাকে,তার আংটিকে গ্রেনেড পিন হিসেবে ব্যবহার করাটা বেশ একটা বীরোচিত বিষয় বলে মিডিয়াতে উপস্থাপন করা শুরু হয়।লায়লা খালেদের মত অনেক ছিনতাইকারীদের উদ্দেশ্য ছিলো ইজরায়েল সহ অন্যান্য স্থানে আটক প্যালেস্টাইনী গেরিলাদের মুক্তি। ফেদাইন ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরও এর ব্যতিক্রম কিছু করতে যায় নি।ইজরায়লে আটকে ২৩৪ জন প্যালেস্টাইনিদের মুক্তির দাবীতে তারা মিউনিখ অলিম্পিককে টার্গেট করে।
অন্যদিকে ২ য় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী ১৯৩৬ এর বার্লিন অলিম্পিকে খেলাধুলায় হিটলারের শ্রেষ্ঠত্ব(!)চাপিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে জার্মানরা কুন্ঠিত ছিলো,সুতরাং তারা চাইছিলো ১৯৭২এর অলিম্পিকে মানুষ মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারে,একেবারে নিজের বাসাবাড়ীর মত!সুতরাং নিরাপত্তা নিয়ে অতটা কঠোরতা দেখানোও হয়নি।একই সাথে ইহুদী অ্যাথলেটদের জিম্মি করার ঘটনায় তারা ২য় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা স্মরন করে যত দ্রুত সম্ভব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছিলো।তারা এজন্য ইজরায়েলের এয়ার সাপোর্ট নিতে রাজি হয়নি,অন্যদিকে জিম্মিকারীদের যেকোনো পরিমানে মুক্তিপনের পাশাপাশি জার্মান বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলো।কিন্তু লাভ হয়নি।
অ্যাথলেটদের জীবিত মুক্ত করতে অসমর্থ হওয়ার জনগন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে,ফলে সমর্থকদের বিদ্রুপ শোনার ভয়ে ইজরায়েল সরকারের প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার মৃত অ্যাথলেটদের শেষকৃত্যে পর্যন্ত যোগ দিতে পারেন নি।সুতরাং ইমেজ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইজরায়েলি এয়ারফোর্স লেবানন ও সিরিয়ায় প্যালেস্টাইনি ঘাটিঁতে বোমাবর্ষন করে।কিন্তু তাও যথেষ্ট মনে না হওয়ায় ''অপারেশন র্যাথ অফ গড'' এবং 'অপারেশন স্প্রিং অফ ইউথ'' শুরু করা হয়, যার কাহিনী এ ছবিতে দেখানো হয়েছে।
অন্যদিকে ধরা পরা জীবিত ৩ জন প্যালেস্টাইনি গেরিলাকে পরবর্তীতে ২৯ অক্টোবর,১৯৭২ এ লুফথানসা'র বিমান ছিনতাইয়ের মাধ্যমে দরকষাকষি করে মুক্তি আদায় করে নেওয়া হয়,পরবর্তীতে লিবিয়া যাদের বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়।
১৯৭৪ এ বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া দূর্ভিক্ষও স্পিলবার্গের এ ছবিতে এড়ায়নি।খাওয়ার টেবিলে প্রচুর খাবার থাকা সত্বেও যখন কার্ল শুধু অ্যালকোহল খাচ্ছিলো,তখন স্টিভ (ড্যানিয়েল ক্রেইগ) বলে ওঠে,''here is enough food to feed Bangladesh here.''
ছবিটির দৈর্ঘ্য ২ ঘন্টা ৪৩ মিনিটের মত।এত লম্বা সময় বসার আগে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।তবে এরিক ব্যানার অভিনয় বেশ ভালো লাগলো,নির্দয় খুনীর ভুমিকায় যেমন সাবলীল,প্রেমিক স্বামী এবং কন্যার নিরাপত্তার জন্য উদ্বিগ্ন ক্রন্দনরত বাবার ভুমিকায়ও তিনি অনবদ্য।
ড্যানিয়েল ক্রেইগ আমার বরাবরের প্রিয় অভিনেতা,নির্দয় ও বিবেকহীন এজেন্টের ভুমিকায় বেশ ভালো লেগেছে।অন্য সবাই যখন মিশনের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন করছে,তখন স্টিভ বলে,'The only blood that matters to me is Jewish blood''-দারুন অভিনয়!
২০০৫ সালেও ১৯৭২ সালের কস্টিউম এবং লোকেশন ব্যবহার করার দিক দিয়ে দারুন মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন কোরিওগ্রাফার।
পি.এল.ও'র সাথে সি.আই.এ'র যুক্ত থাকার একটি বিষয় আপনি ছবির একটি অংশে খেয়াল করবেন,বেশ ইন্টেরেস্টিং।
ছবিটি শুরুর দিকে কিছুটা ধীরগতির হলেও একটি ধারাবাহিকতা থেকেছে পুরো ছবি জুড়েই,আপনি অবশ্যই উপভোগ করবেন।গ্যারান্টিড!
এটা স্পিলবার্গের সেরা কাজ কিনা বলাটা কষ্টকর,আসলেই কষ্টকর!কারন আপনি আসলে চিন্তা কতদিকে করতে পারেন?তবে যে ধরনের ছবি গুলো দেখার পর আপনার মনে চিন্তাভাবনা করার প্রয়াস রাখবে,এটা অবশ্যই সেই ছবিগুলোর একটি।
উল্লেখ্য,ছবিটির বিভিন্ন অংশের জন্য ইহুদি সম্প্রদায়ের পাশাপাশি প্যালেস্টাইনিদেরও রোষানলে পড়েছিলো।
আমরা অনেকেই ইহুদিদের কৃপনতা নিয়ে অনেক কৌতুক শুনেছি।সারা পৃথিবীতেই মোটামুটি তাদের এই ব্যাপারটা জানা।ছবির একটা অংশে দেখা যায় অ্যাফ্রেইম আভরাম কে জানিয়ে দেয়,তাদের সব খরচের জন্য রশিদ লাগবে।রশিদ ছাড়া কোনোক্ষেত্রেই টাকা দেওয়া হবেনা।একটা মোসাড এজেন্টের টাকা খরচের জন্য রশিদ জমিয়ে রাখার ব্যাপারটা ইহুদিরা খারাপ অর্থেই নেয়!
শুরুর দিকে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রি গোল্ডা মেয়ার বলছেন,'negotiate compromises with its own value'।ইজরায়েলিরা ক্ষুব্ধ হয়,কারন এখানে নেগোশিয়েশন হিসাবে খুনাখুনি দেখানো হয়,যা তাদের সংস্কার নয়।
আরেকটা বিষয় ছবি দেখার সময় খেয়াল করবেন , সেফ হাউজে প্যালেস্টাইনি আলি'র সাথে কথোপকথনের সময় আভরাম ইজরায়েলিদের হত্যাযজ্ঞ চালানোর পক্ষে পাল্টা যুক্তি দিচ্ছিলো।অথচ আলি'র বক্তব্য ছিলো কেনো প্যালেস্টাইনিরা স্বাধীন ভুখন্ড চায়।সেখানে দর্শকরা ঠিক করবে কারা সঠিক।কিন্তু এখানে আভরামের পাল্টা যুক্তি দেখানোটা কিন্তু একপেশে হয়ে যায়।আবার ডাচ কনট্রাক্ট কিলার মেয়েটিকে নগ্ন করে রাখাটাও আমার কাছে বিতর্কিত লাগলো।
ছবিতে ১১ জন প্যালেস্টাইনিদের মাঝে প্রধান অভিযুক্ত আলি হাসান সালামিকে মোসাড এজেন্টরা খুন করার চেষ্টা করেও সফল হয় না।পরে ১৯৭৯ সালে সালামিকে হত্যা করা সম্ভব হয়।
এই ছবিতে বর্নিত 'অপারেশন র্যাথ অফ গড' চলাকালীন সময়ে মোসাড এজেন্টরা নরওয়ের লিলেহ্যামার শহরে আলি হাসান সালামিকে হত্যা করতে গিয়ে ভুল করে মরোক্কান ওয়েটার আহমেদ বুশিকি'কে হত্যা করে।পালানোর সময়ে এজেন্টরানরওয়েজিয়ান পুলিশের হাতে ধরা পড়ে,একই সাথে ফাঁস হয়ে যায় সমস্ত ইউরোপে মোসাড এজেন্টদের ঘাঁটি,তাদের মিশন এবং টার্গেটরা।বাধ্য হয়ে অন্য এজেন্টরা তাদের প্ল্যান,সেফ হাউজ,টেলিফোন নাম্বার-সব পাল্টে ফেলে।
এই ঘটনাটা ছবিতে উল্লেখ না করে মোসাড এজেন্টদের মানবিকতা দেখানোর প্রচেষ্টা করায় স্পিলবার্গ মরোক্কানদের কাছেও বিতর্কিত হন।
ছবিতে দেখানো হয় একটি ঘরের জন্য ,একটি আবাসের জন্য প্যালেস্টাইনিরা ব্যাকুল,তার বিনিময়ে তারা তাদের সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত।সব কিছুর শেষ হলো,ঘর....নিজের ঘর।
শেষ পর্যন্ত আভরামকেই দেখা যায় নিজের একটা ঘরের জন্য ছুটে বেড়াতে।
তবে হিস্টোরিকাল একটি কথা উল্লেখ করবো।১৯৭২ এর মিউনিখ ঘটনায় প্যালেস্টাইনিদের ইজরাইলিদের উপর আক্রমন করার আগে কি ইজরায়েল তাদের উপর হত্যাকান্ড চালায় নি ?ইজরায়েল কি ১৯৭২ এর আগে ঘাসাম কানাফানি'র গাড়ীতে বোমা পেতে তাকে আর তার ১৪ বছরের ভাগ্নীকে হত্যা করেনি ?ঐ ১৪ বছরের শিশু তো মিউনিখের প্ল্যান করেনি!সাংবাদিক বাসসাম আবু শারিফ,আনিস সাইঘ-এদের উপর হামলা আগে কে করেছে ? শুরুটা কোথায় ?
একজন বিখ্যাত কৌতুকাভিনেতার একটি উদ্ধৃতি দিয়েই রিভিউ শেষ করি।
কেন আমরা একজন ইজরায়েলি টেরোরিস্ট কে 'কমান্ডো' আর প্যালেস্টাইনি কমান্ডো কে 'টেরোরিস্ট' বলি ?
উত্তরটা ছবিতেই পাবেন
-----------------------------------------------------
আমার প্রথম সিরিয়াস রিভিউ। উৎসর্গ ব্লগার নোবেলবিজয়ী_টিপু এবং ব্লগার হাসান মাহবুব কে।
-----------------------------------------------------
সিনেমা সিরিজ রিভিউ এরপর থেকে নিজস্ব দূর্যোধন ব্লগস্পটে প্রকাশিত হতে থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:০৫