somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দূর্যোধন কথন-১

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দূর্যোধন বসিয়া বসিয়া ইক্ষু চাবাইতেছিলো।বড্ড গরম পড়িয়াছে আজকাল,শরীরে কাপড় রাখাই প্রায়ই দায় হইয়া পড়ে। এমন অবস্থায় অপ্সরা মেনকা প্রভৃতির সুধাও দেখিতে বড়ই বিরক্ত লাগে। আর নাগরিকগুলাও হইয়াছে আজকাল বদের বদ। কথায় কথায় ভাতারদিগকে ডাকিয়া ডাকিয়া এক একটা হুজ্জত পাকায়।
নাহ,শান্তিমত হসিনিপুর শাসন করাটাই মহা ঝামেলার ব্যাপার হইয়া দাড়াইয়াছে।
রোস,বৈষ্ণিক উষ্ণতা একটু কমুক,পান্ডবকুলকে বুঝায়া দিবো কত তামুকে কত ধ্রুমশলাকা।

এরই মাঝে কোথা হইতে হুড়মুড় করিয়া গওহর শকুনি আসিয়া হাজির হইলো।
নিবিষ্টমনে ইক্ষুতে একখানা কামড় বসাইয়া দূর্যোধন জিজ্ঞেস করিলো,''কিহে মাতুল,এত প্রত্যুষে আপনাকে কখনো তো দেখিনাই,পুরাতন আমাশয় কি আবার দেখা দিলো?''

গওহর শকুনি কিঞ্চিৎ থতমত খাইয়া গেলেন,তিনি অবশ্য বিলক্ষন তাহার এই ভগিনীপুত্রের মুখ নিঃসৃত আচমকা বানী শুনিয়া অভ্যস্ত।সুতরাং বেজার মুখে বলিলেন,''ভগিনীপুত্র,তুমি কি গতকাল দাড়িপুত্র যুধিষ্ঠিরের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগত হইয়াছো?''

দূর্যোধন হাস্যমুখে বলিলো,''কেন?জঙ্গলে ওয়াজ মারাইতে গিয়া কি আবার ধাওয়া খাইয়াছে নাকি?''

গওহর শকুনি বলিলো,''উহুঁ,গতকল্য তাহার তোমার পাইক বরকন্দাজদিগকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে জতুগৃহ প্রজ্জ্বলন দেখাইয়াছে।'

দূর্যোধন চিন্তায় পড়িয়া গেলো।জিজ্ঞেস করিলো,'' কেন ধর্মপুত্র এত খেপিলো?উহাকে তো শান্তশিষ্ট দাড়ি-বিশিষ্ট বলিয়াই জানিতাম!''

গওহর শকুনি কিন্চিৎ কাছে ঘেষিঁয়া ফিসফিসাইয়া কিছু একটা বলিতে গেলো,কিন্তু দূর্যোধন দুরে ছিটকাইয়া গেলো।বলিলো,''সামনে ঘেষিবেন না মাতুল,দুর হইতেই বলুন... আম্রিকাননের তসবিরখানা বড়ই অরুচিকর।''

শকুনি বিরক্ত হইয়া দুরত্ব রাখিয়াই বলিলো,''কুরুক্ষেত্র পরবর্তী বিচার ব্যবস্থা নিয়া উহারা বিরক্ত,তদুপরি যুধিষ্ঠিরের স্বর্গে গমনের পূর্বেই তুমি সেখানে গমন করিয়াছো।ইহাতে ওবামিন্দ্রেরও সায় ছিলো,সুতরাং বুঝিতেই পারিতেছো......''

দূর্যোধন বুঝিলো,পান্ডবকুল কিছু একটা ঘোঁট পাকাইতে যাইতেছে।ঐদিকে মতিনন্দ অ্যাসাঞ্জকুমারের সহযোগিতায় প্রায়দিনই উল্টাপাল্টা পান্ডুলিপি বিতরন করিতেছে।এইবারও মনে হয় কদলিবেল পুরষ্কারখানা হাতছাড়া হইয়া না যায়,হতচ্ছাড়ার দল!!সুতরাং ডাকো ভগিনী দুঃশাহালা কে।

ভগিনী ঘরে প্রবেশ করিয়াই বলিলেন,''আজ দেখি প্রচন্ড গরম,এ নিশ্চয়ই কুরুক্ষেত্র পরবর্তী বিচার বাধা দিবার জন্য পান্ডবদিগের ছল চাতুরী!'' । দুর্যোধন বুঝিল,এই ভগিনীকে দিয়াই হইবে।

''হুম,কথা ঠিকই বলিয়াছো.... পাঠাইয়াছিলাম নির্বাসনে,কিন্তু ব্যাটারা আর সহ্য করিতে চাহিতেছেনা।ঐদিকে দ্রৌপদী হারামাজাদিও অন্তর্ডালে আর মুখবইয়ে অপপ্রচার চালাইতেছে-এই বলিতেছে যে উহাকে নাকি দুঃশাসন বারবার কাপড় খুলিয়া নিতে চাহিতেছে!এইসব শুনাইয়া সকলের মন দ্রবীভুত করিতেছে মাগি!!'', খিস্তি করিলো দূর্যোধন।

গওহর শকুনি ফিচকে হাসিয়া বলিলো,''কথা তো ঠিকই বলিয়াছে, খালি দুঃশাসনই না,পান্ডবরাও যে নিত্যদিন উহার বস্ত্র খুলিয়া নেয়,তখন ?? ''

দূর্যোধন বলিলো,''খুলার মত কিছু থাকিলে তো খুলিবেই.... এই দ্রোপদীর কারনেই আজ কৌরব আর পান্ডবরা আলাদা হইলো,এখন শাড়ি খুলিয়া প্রায়শ্চিত্ত করিবেনা তো কি ইয়ে করিবে?''

দুঃশহালা দাঁত বাহির করিয়া কথোপকথন শুনিতেছিলো।চশমাখানি ঠিক করিয়া নিয়া বলিলো, ''আমি কি জঙলে ভ্রাম্যমান বিচারালয় পাঠাইয়া উহাদিগকে ঠ্যাঙাইয়া আসিবো ? অথবা দ্রৌপদীর শাড়িখানা ..... ''

দূর্যোধন রোষকশায়িত নয়নে তাহার দিকে দৃষ্টিপাত করিলো।

গওহর শকুনির মুখখানা শয়তানি হাসিতে উজ্জ্বল হইলো।বলিলো,''ভগিনীপুত্র,উপায় পাইয়াছি।আইসো,কানে-মুখে বলিবো ''

দূর্যোধন বিরসমুখে কান আগাইয়া দিলো।কিয়ৎক্ষন পরে তাহার মুখও উজ্জ্বল হইয়া উঠিলো।

পরবর্তী প্রত্যুষে হসিনিপুরের সকলে নিদ্রা হইতে জাগ্রত হইয়া দেখিলো রাস্তাঘাটের সর্বত্র কাগজে বিজ্ঞপ্তি দিয়া ''তথ্য আদান-প্রদান আইন ২১১'' সাটাঁইয়া দেওয়া হইয়াছে ,
-------------তথ্য আদান প্রদান আইন ২১১------------

১.কোন শাখামৃগ কুরু অথবা পান্ডুদের সংবাদ আদান প্রদান করিতে পারিবেন না।
২.কোনো আসরে গিয়া দূর্যোধনের সমালোচনা করা যাইবেনা।
৪.হসিনিপুরের আদর্শ ও লক্ষ্যের সমালোচনা করা যাইবেনা।
৪.বন্ধুপ্রতিম রাজ্যের রাজাদের নিয়া সমালোচনা করা যাইবেনা।
৫.বস্ত্রহরণ অথবা বস্ত্রপ্রদান অথবা বস্ত্র সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা যাইবেনা।
৬.মেনকা মল্লিকা কমলিকাদের চুম্মাচাট্টি উপভোগ করা যাইবেনা।
৭. ......
৮. .......









--------------------------------------------------------------------
একইসাথে চতুর্মাত্রিকে প্রকাশিত ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০৪
৮৩টি মন্তব্য ৮২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×