দোকানে গিয়া যখন দোকানীরে কইলাম,'' ভ্রাতঃ,রোবোট আছে?? ''.....ব্যাটা হা কৈরা কিছুক্ষন তাকায় থাকলো , মনে হয় ভাবছে যে আমি হোন্ডা আসিমো রোবোট কিনতে ডিভিডির দোকানে গেছি


বাসায় ফির্যা শুরু কর্লাম রোবোট দেখা।
কাহিনী হৈল এই .....২০১০ সাল, বিশিষ্ট বুইড়া কাম নওজোয়ান বিজ্ঞানী ড.বাসিকরন ( রজনীকান্ত) ধুমায়া রোবোটিক্সের উপ্রে ১০ বছর খাইট্টা খুইট্টা একখান মাল পয়দা করছেন..... তিনি এই বিশিস্ট রোবোট তৈয়ার করতে তার চুল দাড়ির দিকে তেমন নজর দিতে পারেন নাই ( কিন্তু তারপরও তার রিবন্ডিং করা চুলের পাশাপাশি রিবন্ডিং (!)করা বড় দাড়ি দেখলে ওসামা/ফারুকী তো দুরের কথা,মাইয়ারাও লজ্জা পাইবো


তো উনি একখান মহা-বট বানাইছেন..... কামেল রোবোট এমন এক জিনিস, পয়দা হৈয়াই শুরু করলো ধুন্দুমার নাচা-গানা !! ( ১০ বছরের সাধনার এই আউট পুট!! ) ।রোবোট সাহেবের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে একখান ভাঙা রেকর্ডের মত বাজতেই থাকে ,'' আই অ্যাম রোবো....সিপিইউ ১ টেরা হার্টজ,মেমোরি ১ জেটা বাইট !! '' ( হালার্পো , প্রসেসর আর মেমোরি দিয়া খালি বিচার করলে আমার কম্পুরে আপগ্রেড কৈরা ফালাইলেই তো হয়.....১০ বছর সাধনা ঔষধালয়ে থাকন লাগে??

কামেল রোবটের সন্দর্প-কান্তি মার্কা চেহারা দেইখা বিজ্ঞানীর মা তার নামকরন করলেন ''চিট্টি''।
রোবোট সাব এমন মেমোরির অধিকারি আর তার দৃষ্টিশক্তি এমন প্রখর ( চাচাচৌধুরীর কথা মনে পৈরা গেলো


নায়িকা আবার বড়ই দিলদরিয়া !!উনি যুদ্ধে নিহত সেনাদের বৌ-বেডিদের জন্য একখান আশ্রম টাইপ খুলছেন.....ঐখানে আবার বুড়ি-ধাড়ি ফ্যাশনের পাশাপাশি হাল-জামানার ছোট্ট পোশাকের ফ্যাশন বহুল প্রচারিত। নায়িকার পোশাকও ,তাইতো বলি.....বাজারে বাচ্চাদের ড্রেস কেন পাওয়া যায়না !!

এইখানে আইসা তাজ্জব হৈলাম !! রোবোট বাবা দেখি অপরিসীম শক্তির আধার !! যাবতীয় লৌহদন্ড উনি চুম্বক দিয়া ক্যাপচার কৈরা ফালান .....তবে অন্ডকোষের দিকে তার কিন্চিৎ ঝোক লক্ষ্য কইরা তেমন একটা আশ্চর্য হইনাই ( যার যেটা প্রয়োজন






কেমনে কি !! ঐ চার্জ ছাড়া রোবোট মশাই কৈথিকা চার্জ পাইয়া ২০০কিমি/ঘন্টা বেগে ট্রেনের পিছনে ছুইটা আইসা সবগুলারে দিলেন ধোলাই ( নায়িকার চিৎকারে চার্জ হৈছে !! কি টেকনিক মওলা !! ).....তারপর,অ্যাজ ইউজুয়াল.....রোবোটের সাথে নায়িকার নেত্য !!

এর মাঝে দেখা গেলো,নায়িকার পড়া শেষ হয়নাই,উনি রোবোটকে বললেন,তাকে যেনো ''মুন্না ভাই'' ইস্টাইলে নকলে হেল্প করা হয় !! ( চোর-চোট্টায় দেশটা ভৈরা গেছে.... সারাদিন নায়কের লগে পিরিতে বিজি থাকলে কি আর পাশ হয়?? বিজি প্রেসের কারো সাথে কন্টাক্ট কৈরা মেডিক্যালে ভর্তি হইছিল মনে হয় -এই স্বিদ্ধান্তে আইসা বাকি ফিলিম দেখায় মনোযোগ দিলাম ।

বিজ্ঞানি আছেন,তাইলে তার একটা শত্রু খারাপ বিজ্ঞানী থাকা লাগে .....সেই অভাব পূরনে আগায়া আসলেন ড. বোরা ( ড্যানী ) ।বিজ্ঞানী রজনী ঠিক করছিলেন এখন থিকা এই রোবোট বাইরে রপ্তানী কৈরা ভারতমাতাকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবস্থা কৈরা দিবেন ( এখন যত মানুষ আছে,আগে ঐগুলার রপ্তানীর চিন্তা করসনাই বৈলাই আজ তুই বিজ্ঞানী-ব্যাডা বেকুব! )।কিন্তু ড্যানী ভাইয়া বললেন যে রোবোট মিয়া মানুষ ঠ্যাঙাইছে,তাই তার মাঝে মানবিকতা নাই ,সুতরাং রোবোট প্রজেক্ট বাতিল !!.......তো মানবিকতা দেখানের চান্স আশেপাশেই মনে হয় ঘুরঘুর করতাছিল !!



তো এরমাঝে বুইড়া হাড়ে গোটা কয়েক গানে নেত্য প্রদর্শন কইরা রজনীবাবু হাপাইতাছেন !! রোবোটের ভিতরে মানবিকতা ঢুকাইতে গিয়া দেখা গেলো,উনি রোবোটে হরমোনাল সিমুলেশন টেস্ট অ্যাপ্লাই করতাছেন !! ( কল লিমিট থাকে,কিন্তু বেকুবির একটা লিমিট থাকা দরকার


এখন উনার রোবোট মানবিক গুন সম্পন্ন হইছে , তার বান্ধুবী ফেলটুস বুড়ি ছাত্রীরে তার মনেও ধরছে .....এমনই প্রেম জাইগ্যা উঠছে,যে দেখা গেলো মশাদের ডাকাডাকি কৈরা ধমকাইতাছেন,কোন মশা তার ''সানা''রে কামড় দিছে.......ঐ বেয়াক্কেল আকালমন্দ মশারে দিয়া ''সরি'' বলাইলেন,আর জীবনে কামড়াইবোনা....এমন মুচলেকাও নিয়া নিলেন !!



ড্যানিমশাই বইসা ছিলেন এই আশাতেই , ময়লার ডিপো থিকা তুইলা আনলেন...আর ''রোবিটেল'' এর সিমকার্ডের মত লাল একটা সিমকার্ড ভিতরে ভইরা দিয়া রোবোটরে আবার জাগরন করাইলেন!! এই রোবোট এখন নাকি আতংকবাদী হিসাবে কাজ করবো!
আতংকবাদী হৈছে,কিন্তু খারাপ হৈয়া গেলেও তার প্রেমভালোবাসা অটুট !! তাই সে আবার বিয়ার মন্ডপ থিকা অ্যাশরে তুইল্যা আনলো ,আর বাধাদানকারী ড্যানীমশাই সহ আরো প্লাটুনখানেক সৈন্য নিহত হৈলো !!

এখন বিয়ার পালা !! রোবোট বাবাজি অ্যাশরে ভরসা দিলো,''তুমি ট্যান্ছন লইয়োনা





এখন রজনীমশাইর তো মাথায় যেই কয়টা চুল আছে,তা ছিড়া আর কিছুই রাখেনাই !! উনি বুদ্ধি আটঁলেন,রোবোট সাইজা রোবোটের আস্তানায় ঢুকবেন,তারপর চার্জ শেষ হইলে ঠুস!!!



.....নায়কের প্ল্যান সফল,নেত্য কইরা চার্জও শেষ ,সারা শহরে কারেন্টও অফ,কিন্তু রোবোট বাবা একখানা গাড়ির ব্যাটারী দিয়া আবার ফুল চার্জ হৈলেন !! তারপর শহরময় তান্ডব চালায়া একবার বিশালাকার অনু-পরমানুর রুপ নেন, পরক্ষনেই আবার ড্রিল মেশিনের রুপ,পরক্ষনেই ট্রান্সফর্মারের রুপ !!(নায়িকা হারাইলে কি মাথার ঠিক থাকে ??



সব কাহিনী শেষ....রোবোট এখন ভালো মানুষ,সব দোষ স্বীকার কইরা মরার প্রস্তুতি নিতাছেন,তার করুন পরিনতি দেইখা ২ মাসের শিশুও কান্দন শুরু করছে, আমর কম্পুও দেখি কেমন জানি উটকি উটকি মারতাছে ( দুঃখেই মনে হয় !!


বি.দ্র. যেই কথা না কৈলেই না...... এই রোবোটের কাজ-কাম দেখলে জাপানী বৈজ্ঞানিকরা লাইন ধইরা হারিকিরি করবো ..... দুনিয়ার কেউ ঠেকাইতে পারবোনা !!

পুরাপুরি রম্য লেখা ...... পছন্দ না হইলে মাইনাস দিতেই পারবেন.....রক্তমাংসের রোবোট বইল্যা কথা !!

রজনী ভালাই.....তয় বুইড়া যত ভালা হইতে,পারে,এই আর কি!! আর অ্যশের ছ্যাবলামী আর সহ্য হয়না !! এই ফিলিম যদি রেকর্ড করে,তাইলে, আমাগো মান্না ভাইয়ের মেশিনম্যান ফিলিম টা অস্কার পাওন উচিত !!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২১