আমার ভীষণ প্রিয় একটা যায়গা আছেঃ
অবিরাম বসে থেকে জ্যোৎস্না উপভোগ করা যায় সেখানে, নদীতে চাঁদের আলো সাঁতার কাটে। মাঝে মাঝে নৌকোর ভেতরে দেখা যায় হারিকেনের অলস আলোয় দুই-এক জেলে জীবিকার জন্য ফাঁদ পেতে বসে আছে। দূরের একটি মফস্বলকে দেখে মনে হয় নগর হয়ে উঠার মহড়া দিচ্ছে। একটি শ্মশান এবং মৃতপ্রায় একটি ইটের ভাটাও চোখে পড়ে সেখান থেকে। আকাশটা বনে যায় বিশাল একটা তারার চাঁদোয়া!! অব্যাক্ত এক ছন্দে বাতাস বয়। আশেপাশেই আছে কিছু পেঁচার বাসা...পেঁচার পাখা ঝাপটানো আর ডাকাডাকি শুনে মনে হয়, নিশাচর হয়েও নিজেদের জগতে এরা অনেক স্বতঃস্ফূর্ত। তাদের দেখে যেমন আমরা খুব আনন্দিত হই না, ঠিক তেমনি তারাও আমাদের কালো ধোঁয়া আর যন্ত্রদানবদের থেকে দূরে থাকে!
লোকালয় থেকে বেশ দূরে রাত্তিরের নিঃসঙ্গ সেতুটি আমার খুব প্রিয়। নিজেকে খুব অক্লান্ত মনে হয় সেখানে। অন্যরকম এক নীরবতায় ডুব দেয়া যায়; যা বুঝিয়ে দেয় একাকিত্বের তত্ত্বের যতো ভুল। ইচ্ছে হলেই টেলিপোর্ট করে চলে যাওয়া যেতো যদি!!! ভেবে অবাক হই, শুধুমাত্র রাত একটি পরিবেশকে কতটুকু বদলে দেয়!!
"পেঁচার ধূসর পাখা উড়ে যায় নক্ষত্রের পানে-
জলা মাঠ ছেড়ে দিয়ে চাঁদের আহবানে
বুনো হাঁস পাখা মেলে- শাঁই শাঁই শব্দ শুনি তার;
এক-দুই-তিন চার-অজস্র-অপার।"
(জীবনানন্দ দাশ)