somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চরম কিছু কথা। /:) প্রসঙ্গঃ এই যুগের আপলোড জেনারেশন ও ধর্ষিত মূল্যবোধ(দ্বিতীয় পর্ব)

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখাটি লিখার আগে আমি জানতামই যে এখানে সেরকম সাড়া পরবে না। কারন লুলিয়, বা লুতুপুতু আর ১৮+ ট্যাগ দেই নাই। সমস্যা নিয়ে লেখা গুলা এভাবেই ঢাকা পরে যায়। তারপরও এটার দ্বিতীয় পর্ব দিলাম। কারন আমার কথা গুলা আমি বলে শেষ না করা পর্যন্ত শান্তি পাব না। যাই হোক নিচে প্রথম পর্বের লিঙ্ক দিলাম পড়তে পারনে।
প্রথম পর্ব পরতে এইখানে ক্লিকান।
প্রথম পর্ব

এইবার মুলাকথায় আসি।

বিশ্বায়নের এই যুগে যে যত বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে সে ততই এগিয়ে থাকবে। এই দৌড়ে বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই, বিশ্ব সংস্কৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই দৌড়ে সামিল হওয়ার সাথে সাথে আমরা কি আপন সংস্কৃতিকে ভুলে যাচ্ছি।

বিগত ৪০০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ঔপনিবেশিক শাসক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রনে ছিল এই অঞ্চলটি, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠী শাসন করে গেছে এখানে। তার সাথে তাদের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে চেয়েছে, স্বাভাবিক ভাবেই হোক আর জোরপূর্বক হোক। আর নিষ্পেষিত বাংলার মানুষ সেটাকেই মেনে নিয়েছে। কখনও কখনও আন্দোলন হয়েছে কিন্তু শাসক গোষ্ঠী অনেক শক্তিশালি থাকায় তা কোনটাই পূর্ণ রূপ পায় নাই।

যা হোক এতো গেলো ইতিহাসের কথা। এখন আসি আমাদের বর্তমান অবস্থার কথায়।

ভাষা, আমাদের বাংলা ভাষা, নিঃসন্দেহে বিশ্বের দরবারে আমাদের ভাষা আমাদের গর্বের বিষয়। বাংলা ভাষার চর্চা আমরা আমাদের সব ক্ষেত্রেই কম বেশি করে থাকি। বর্তমানে আকাশ সংস্কিতির প্রভাবে আর একটি ভাষা আমদের অতি আপন হয়ে যাচ্ছে, যা হল প্রতিবেশি দেশের একটি ভাষা। ঘরে ঘরে সেই দেশের প্রচারিত অনুষ্ঠান গুলো আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী ২৫ বছরে যেই ভাষা আমাদের দিয়ে বলাতে পারে নাই। অপর একটি কথিত বন্ধু রাষ্ট্র তার সংস্কৃতিকে স্লো পয়সনিং এর মত আমাদের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে।

একটি উদাহরন দেইঃ

সেদিন এক বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, সেই বাড়িতে ছোট ছোট দুটি বাচ্চা আছে যারা মাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে, তাদের সাথে কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই আমি হোঁচট খেলাম। আমি বাংলায় প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করায় সে হিন্দি তে উত্তর দেয়। অবাক কাণ্ড!!! আমি তার মা কে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন এই অবস্থা। সে আমাকে একটি কার্টুনের উল্লেখ করে বলল যে তার বাচ্চা দুটা সেই কার্টুনের অন্ধ ভক্ত। সেটা না দেখে তারা খাবে না ,পড়বে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি অবাক হলাম তার মায়ের এই অসহায় উক্তি শুনে । আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব কি পরিমান এই সমাজে ছড়িয়েছে।

এটাকে কি বলবো বাবা মায়ের মূর্খতা, না তাদের মধ্যে চেতনার অভাব, কোনটা??

এই প্রজন্মটি যখন বড় হবে বুঝতে শিখবে, তখন তারা কি করবে। শৈশবে যে শিক্ষা তারা পেয়েছে তারই তো প্রতিফলন ঘটবে নাকি? আর এ ধরনের পরিবারের অভাব নেই আমাদের দেশে।
তাহলে তো আমি বলতেই পারি আমদের ভাষা এখন হুমকির মুখে।

বিশ্বায়নের এই যুগে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বিশ্ব সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে হবে। পরিচিত হওয়া মানে এই না যে আমি আমার আপন সংস্কৃতি কে ভুলে গিয়ে অন্য সংস্কৃতির পালন করব। কিন্তু মনে হয় আমরা ভুলে গেছি আমাদের পরিচয়, আমাদের ইতিহাস।

সস্তা বিনোদনের মুখরোচক উপাদান দিয়ে ভরা বাজার আর মানুষ তা গোগ্রাসে গিলে খাচ্ছে। এতটুকু চিন্তা করছে না যে এটাই আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলা অঞ্চলের যে আদিম আচার রিতি নিতি ছিল তার সিকি ভাগ টিকে আছে এবং বাকি গুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কারন আমরা যারা এখন এই দেশে বসবাস করছি, খুব শক্ত ভাবে দাবি করতে পারব না যে হাজার বছর ধরে আমি এবং আমার পূর্ব পুরুষ এই তল্লাটে বসবাস করে আসছে, যদি সেটাই খুজতে যাওয়া হয় তাহলে এই অঞ্চলের আদিম অধিবাসী হচ্ছে সাঁওতাল রা। বাকি যারা সভ্য সমাজে বসবাস করছি তারা কেউ না কেউ কোন না কোন অঞ্চল থেকেই এই বাংলায় এসেছে। তাই বলে মিশ্র সংস্কৃতির একটা প্রভাব আমাদের মধ্যে দেখা যায়। যা বরাবরই উভয় সঙ্কটে পরতে হয়, হয় এটা নয় ওইটা।

যাই হোক এতো গেলো হাজার বছরের কথা, কিন্তু শতবর্ষের যেই বাঙালী সংস্কৃতি সেটা কি আমরা ধরে রাখতে পারছি। ধরলাম স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত মাইগ্রেসন চলেছে কিন্তু এর পরে তো আর হয় নাই।

আমরা ২১ শে ফেব্রুয়ারী পালন করি, পহেলা বৈশাখ পালন করি, আবার আমরা ভ্যালেনটাইনস ডে, ফ্রেন্ডশিপ ডে, মাদার ডে, ফাদার ডে এগুলোও পালন করি। পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ। প্রথম যে দুটা দিন এর কথা উল্লেখ করলাম, এই দিনগুলোতে আসলে কি হয়??

আমেরিকা তে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার প্রতিযোগিতা হয়, তার মানে এটাও কি আমাদের দেশে সম্ভব?? আর আমাদের দেশে যা হয় তা তো আর বলার অবকাশ রাখে না। পাবলিক প্লেস গুলি তে যাওয়া যায় না এই দিনে বর্তমান তরুন প্রজন্মের উচ্ছৃংখল কার্যকলাপের জন্য। যা দেখছে শিশুরা, উঠতি বয়সের তরুন রা এবং এগুলা তাদের উপরে কি পরিমান নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে??
পরের দুটি দিনের কথায় আসি, পশ্চিমা বিশ্বে ছেলে মেয়ে রা তাদের ১৮ বছর হলেই বাবা মা কে ছেড়ে আলাদা থাকা শুরু করে, নিজের আয় নিজে করে নেয়। ওই দিন গুলিতে তারা তাদের বাবা মা কে দেখতে যায়, এমনকি অনেক সন্তানের বাবা মা রা ডিভোর্স নিয়ে আলাদা হয়ে গেলে তারা ওই দিনটি কে লক্ষ করে তাদের সন্তানের সাথে দেখা করে। আমাদের দেশের সংস্কৃতিও কি এটা বলে?? এগুলো পরোক্ষ ভাবে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলছে না??
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ, চীন ও ভারত: বিনিয়োগ, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:১০


প্রতিকী ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদৃশ্য দোলনায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮



ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×