দুই নেতার মৃত্যু পরবর্তী কিছু তুলনামূলক চিত্র
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩০ শে আক্টোবর ১৯৭৫। দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদ মোতাবেক নিহত প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবের ধানমন্ডিস্থ ৩২ নং বাস ভবনে প্রাপ্ত সম্পদের বিবরনঃ
১। হীরা, মুক্তা, প্লাটিনাম ও স্বর্নালংকার – ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
২। বাংলাদেশী মুদ্রায় নগদ ৯৪ হাজার ৪ শত ৬১ টাকা।
৩। ব্যাক্তিগত মোটর গাড়ী – ৩টা
৪। বৈদেশিক মুদ্রা – ১৭ হাজার ৫ শত টাকা
৫। বিদেশী রাষ্ট্র প্রদত্ত – ১ লক্ষ টাকার উপহার
৬। বাতিলকৃত শতকী নোট – ৬ শত ২১ খানা
৭। ১টি ভারী মেশিনগান, ২টি হালকা মেশিনগান, ৩টি এস এম জি, ৪টি ষ্টেনগান, ৯০টি আধা সংক্রিয় রাইফেল, ৬০টি গ্রেনেড সহ গোলাবারুদ ইত্যাদি।
৭ ই জুন ১৯৮১। দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদ মোতাবেক নিহত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে চিটাগাং সার্কিট হাউজে একটি সুটকেস পাওয়া যায়, যার হাতল ভাঙ্গা। স্যুটকেসের মধ্যে তার নিত্য ব্যাবহার্য জিনিস পত্রের মধ্যে তার প্রিয় এক সেট সাফারী স্যুট পাওয়া যায়।
শেখ মুজিব কে হত্যা করার পর তার খুনীরা রাষ্ট্রীয় ছত্র ছায়ায় দেশ পরিচালনা করে। আর তখন রাষ্ট্র পরিচালনা করছিল খন্দকার মোশতাক যিনি শেখ মুজিবের অতি প্রিয় বিশ্বস্ত একজন ঘনিষ্ট ছিল। শূধু তাই না মোশতাকের মন্ত্রীসভায় যে কয়জন মন্ত্রী ছিল তাদের প্রায় সবাই শেখ মুজিবের মন্ত্রী সভায়। তৎকালীন সেনা প্রধান শফিউল্লাহ সহ সমস্ত উচ্চ পদস্থ সেনা অফিসারদের কাছে হত্যাকারীরা বীরের মর্যদা পায়।
লেঃ কর্নেল এম এ হামিদের “তিনটি সেনা অভ্যূত্থান ও কিছু না বলা কথা” বইতে পরিস্কার বলা আছে শেখ মুজিবের মৃত্যুতে ক্যান্টনমেন্টের সমস্ত সেনা সদস্যরা উল্লাস প্রকাশ করে।
অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের হত্যাকারী ১১ জন অফিসার পলায়নের সময় অথবা পলায়ন কালে ধৃত অবস্থায় বিক্ষুদ্ধ সেনা সদস্যদের দ্ধারা সাথে সাথে নিহত হন। যাদের নেতা ছিলেন জেনারেল মঞ্জুর।
মেজর মহিউদ্দীনের নেতৃত্বে শেখ মুজিবের লাশ যখন টুঙ্গীপাড়া পৌছে তখন একজন স্থানীয় মৌলভীর তত্ত্বাবধানে ১৫/ ২০জন মানুষ নিয়ে জানাযা পড়িয়ে দাফন করা হয় তার পিতার কবরের পাশে। কোন মানুষ পাওয়া যায়নি শেখ মুজিবের জানাযায় অংশ নেবার জন্য।
জিয়াউর রহমানের লাশ যখন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পাথরঘাটা গ্রাম থেকে ১লা জুন উত্তোলন করে ঢাকা নিয়ে আসা হয় তার পরের দিন ১০ লক্ষ লোকের উপস্থিতিতে জানাযা পড়িয়ে পূর্ন রাষ্ট্রীয় মর্যদায় সংসদ ভবন সন্নিকটে জিয়া উদ্যানে দাফন করা হয়। (Bangladesh A legacy of blood, Anthony Mascarenhas)
১৫ই আগষ্ট মুজিব হত্যাকে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাষানী “ঐতিহাসিক পদক্ষেপ” আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন আর ভারতীয় সরকারী মুখপাত্র আগষ্ট পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনের গতিধারার প্রতিক্রিয়া আমাদের উপর না হওয়ার কোন অবকাশ নেই, কিন্তু এই গুলো বাংলাদেশের অভ্যান্তরীন ব্যাপার বলে অভিহিত করে। ( ১৭-৮-৭৫, বাংলাদেশ টাইমস)
আজকে যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করে আর বলে জামাতকে বাংলার রাজনীতিতে জিয়া প্রোভাইড করেছে তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি জিয়াউর রহমান শুধু জামাতকে রাজনীতির সুযোগ দেয়নি যদিও সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করে মুজিবুর রহমানক জামাতকে এ দেশে রাজনীতিতে এক শক্ত অবস্থান করে দিয়ে গেছে। তাদের জন্য, এদেশে জিয়ার উদার রাজনৈতিক মনোভাবের জন্য সব চেয়ে বেশী লাভবান হয়েছে আওয়ামীলীগ। কারন তাদের নেত্রী ভারতে ৭ বৎসর অবস্থানের পর ১৯৮১ সালের ১৭ই মে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে আর আওয়ামী রাজনীতি শুরু করে। এর ঠিক ১৩ দিন পর জিয়াউর রহমান নিহত হন।
এ কথাও আজকে জিয়ার নামে শুনতে হয় বাংলাদেশে আওয়ামী বিষবৃক্ষের রাজনীতির সুযোগ দিয়ে সব চেয়ে বড় ভূল করেছে।
আমি আজকে বিএনপি তথা বেগম জিয়ার নামে কুৎসা রচনাকারী আওয়ামী রাজনীতির উপর কিছু লিখব না। কারন আমাদের রুচিবোধ বাধে বাংলাদেশের মহান রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীতে প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদ দের নিয়ে কুৎসা রচনা করতে।
কুৎসা আমরা গাই না। তবে হ্যা ইতিহাসের খাতিরে আওয়ামী মিথ্যার প্রতিবাদে আমরা সত্য উন্মোচনে কোন আপোষ করব না।
সব শেষে আর একটা ব্যাপার নিয়ে পরিস্কার বলে যেতে চাই কিছু আওয়ামী নোংরা রাজনীতিবিদ শহীদ জিয়াউর রহমানের উপর মুজিব হত্যার কলঙ্ক লেপন। তাদের কে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ভারতীয় আনন্দ বাজার ও “ফার ইষ্টার্ন ইকোনমি রিভিউ”র ১৯৭৫ সালের ২৯ আগষ্ট সংখ্যা টা দেখতে বলব, সেখানে পরিস্কার বলা আছে তৎকালীন উপ সেনা প্রধান জিয়াউর রহমান শেখ মুজিব কে আর্মি ক্যু সন্মন্ধ্যে সাব ধান করে দিয়েছিল। কিন্তু স্বভাব জাত ব্যাবহারে শেখ মুজিব সেটা পাত্তা দেয়নি।
আজকে ৩০শে মে দেশে বাকশালীয় গনতন্ত্র চালু, টেলিভিশন, খবরের কাগজ কোথাও সামান্য করেও স্বাধীনতার মহান ঘোষক, মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানীর উদ্যোক্তা, সোনার বাংলার রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে সামান্যতম শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হচ্ছেনা। সন্মান পেতে হলে সন্মান দিতে জানতে হয়।
সমস্যা নাই। শহীদ জিয়া আমাদের হৃদয়ে আছে। আইন করে শহীদ জিয়াকে জোর করে সন্মান জানাতে হবে না।
আল্লাহ নিশ্চয়ই শহীদ জিয়াকে বেহেশত নসীব করবে।
২৩টি মন্তব্য ২১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।
দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?
বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন
আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন
একটি ছবি হাজার কথা বলে
আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি
ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন