ছেলেদের জীবনে বান্ধবী আশীর্বাদ স্বরুপ। জীবনের এই পর্যায়ে এসে হিসাব করে দেখলাম প্রায় সব বান্ধবীকেই কখনও না কখনও বৌয়ের মত আদরময়ী মনে হয়েছে। কিন্তু আফসোসের বিষয় তাদের যদিওবা কখনও আমাকে স্বামীর মত মনে হয়েছে তবে নিতান্তই নিজ পায়ে দাড়াইতে না পারার কারনে কেউ মুখ ফুটে বলে নাই। একবার এক বন্ধুকে দেখলাম তার নানান পদের বান্ধবীর সাথে ছবি। তারে বললাম সবগুলাকি তোর বান্ধবী নাকি প্রেমিকাও আছে। সে বলল “আমি সবাইকে প্রেমিকাই ভাবি কিন্তু সবাই আমাকে ভাবে যাষ্ট ফ্রেন্ড”। ব্যাপারটা বরাবরের মতই এরকম প্যাথেটিক। তবুও আশা থেকে যায়। একবার আমি এক বান্ধবীরে থ্রী-ইডিয়টের সংলাপ কপি করে বললাম “দ্যাখ যৌবন ছিলো, আমি রাজি ছিলাম, সামর্থও ছিলো। কিন্তু আজ থেকে ৫০ বছর পর এ চিন্তা করে আফসোস করবি না তুই একবার হ্যাঁ বললেই আমাদের প্রেম হয়ে যেত”
বান্ধবী চটাং করে বলে উঠলো “তাহলে ৫০ বছর পর আমারে ভালোবাসবি? আমি বললাম “তখন তোরও আগুন থাকবে না, আমারও সিগারেট টানার মুড থাকবে না”
বান্ধবী চ্যাট লাইন অফ করে দিলো।তবুও বলতে হয় “তবুও আশা থেকে যায়”
বহু আগের ঘটনা। তখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি। সকালে আমরা কয়েকবন্ধু বান্ধবী মিলে এক বড় ভাইয়ের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়তাম।মুন্নী এবং মশিউরের মধ্যে ছিলো দা-কুমড়া সম্পর্ক।কারনে অকারনে নানান উপায়ে সারাটাদিন মশিউর মুন্নীর পিছনে লেগে থাকতো। একদিন ভাইয়া জিজ্ঞেস করল “কিরে মশিউর তোর সমস্যা কি মুন্নীরে পঁচাস ক্যান? মশিউরকে কোন কথা বলতে না দিয়েই মুন্নী বলল “ভাইয়া ও একটা হাফ লেডিস, শয়তান”। পরিশেষে মশিউর হাল্কা হেসে বললো “ছি মুন্নী তোকে আপন মনে করে দেখাইছিলাম,তুই সবার সামনে এইভাবে বইলা দিল। যাহ! তরে আর কোনদিনও দেখামুনা”।
পরের ঘটনার পাত্র-পাত্রীও একই। গেছি মুন্নীর বাসায়।উদ্দেশ্য বন্ধুর বোনের বিবাহের দাওয়াত দিতে। ভোজন রসিক বলে দাওয়াত দিতে একসাথে ৭ বন্ধু গেছি!বিরাট খাওয়া দাওয়ার আয়োজন শেষে আমরা দাওয়াত দিয়ে বিদায় নিচ্ছি। মুন্নী গেইট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসলো। মশিউর বলল “মুন্নী হলুদে সুন্দর শাড়ী পরে সাজগোজ করে আসবি”
-ক্যান নইলে ঢুকাবি না?
মশিউরতো মনে হয় আসমানের চাঁদ পেল “না ঢুকাবো না কেন? এতদূরতো আমি ভাবিনাই। তোর মনে এটা ছিলো আগে বলবি না। যেমনে চাস ওমনে হবে”। ততক্ষনে মুন্নীর ঘরের ভিতরে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় রইলো না।
এবার আসি সিরিয়াস বিষয়ে। আমাদের এক বান্ধবী ছিলো, বিশেষ কারনে নাম বলতে পারছি না।তো দীর্ঘদিন পরে এক বন্ধুর সাথে তার দেখা হল ঈদমার্কেটে। বন্ধু আবার তার ভাইয়ের দোকানে সার্ভিস দিচ্ছিলো। সে বান্ধবী গিয়েছিলো বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে। বন্ধুকে এতদিন পর কাছে পেয়ে বললো “আরেহ তোর কি অবস্থা কতদিন পর দেখা? ওমা এত শুকাইছিস ক্যান? এটা আমার বয়ফ্রেন্ড পরিচিতি হ”
আমার বন্ধু খুব কনফিশনের ভঙ্গিতে বললো “এটাতো আগেরটা না আগেরটা কই গেছে? ফুসসসসস…
ঘটনাটা জেনেছি আমি আবার আমার সেই বান্ধবী থেকে।রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বিচার দিয়েছে।বিচার করবো কি ঘটনা শুনে বিচারক হাসতে হাসতে আধমরা হয়ে গিয়েছিলো।আমি আবার সে বন্ধুকে ফোন দিয়ে কাহিনী জিজ্ঞেস করলাম। বন্ধু বলল “আমার কি দোষ আমি কনফিউশনে ছিলাম, কখন যে মুখ থেকে বের হয়ে গেছে বুঝিনি”। পরে শুনেছি ভেঙ্গে যেতে যেতে সে বান্ধবীর প্রেম সেবারের মত টিকে গিয়েছিলো।
যাই হোক বান্ধবীর বিয়ে একজন বন্ধুর জন্য পৃথিবীর সবচে শোচনীয় কাজ। তবুও বিয়ের দাওয়াত পাওয়া হয়,দল বেঁধে যাওয়া হয়, পেটপুরে খাওয়া হয়।এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম “বান্ধবীর বিয়ে হয়ে গেলে কি হয়? উত্তর দিতে পারেনি। আমি বলেছিলাম “সে বান্ধবী তার কোন বন্ধু বৌ ভাবে না”
বান্ধবীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়া পৃথিবীর সবচে সহজ কাজ।ল প্রেম করি, বাদ দে তোর বয়ফ্রেন্ড টাইপ বাক্যগুলো অতীব কমন হয়ে গেছে।সেরকম এক পদ্ধতিতে আমি আমার বান্ধবীকে প্রেম করার আহবান করলাম। বান্ধবী চিরবোকা রাজি হলো না। তারে বললাম “বুঝলিই না জীবনে কি হারাইলি”। সে বলল “ক্যান তোর কাছে গুপ্তধন আছে নাকি? খুশীতে আমার চোখ মুখ ফেয়ার এন্ড লাভলী মাখার মত উজ্জল হয়ে গেল। বললাম “আছে মানে অবশ্যই আছে গুপ্তধো*,বহাল তরিয়তে আছে।ভাবিস না নিরাপদেই আছে”।উত্তরে যা বললো সেটা বাংলাদেশের ৯০% বন্ধু তার বান্ধবীর কাছ থেকে শুনে থাকে “চুপ থাক বেয়াদব”
(কিছু আমার স্ট্যাটাসে দেয়া হইছে কখনও না কখনও)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:০০