এই ব্লগে লগইন এবং এই ব্লগে লগ আউট করা সকল ব্লগার, পাঠক যে যেখানে আছেন আমাদের নতুন আয়োজন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাক্ষাৎকারে আপনাদের স্বাগতম। আমাদের আজকের অতিথি বিশিষ্ট ফেসবুকার, স্ট্যাটাস শিল্পী, যিনি স্ট্যাটাসকে স্ট্যাটাসের পর্যায়ে রাখেননি তিনিই স্ট্যাটাস খান।
প্রশ্ন : আপনার এই অদ্ভুত নামের রহস্য কি?
স্ট্যা.খা : আমার নাম ছিলো জাহেদ খান। এরপর ফেসবুকে আমার স্ট্যাটাস শিল্পের প্রসারের পর আমি স্ট্যাটাস খান নামে পরিচিতি পাই। কেউ কেউ আমাকে স্ট্যাটাস বাবাও বলে থাকে।
প্রশ্ন : নিজের বাপের দেয়া নাম পাল্টে ফেললেন?
স্ট্যা.খা :আপনি সাহিত্য বুঝেন না। সাহিত্য চর্চায় সবাই ছদ্দ নাম ব্যবহার করে।এমনকি রবী দাও।এরপর যদি দেখেন দেখবেন বাংলা সিনেমার সব নায়ক-নায়িকা নিজেদের আসল নাম পরিবর্তন করে তারপর অভিনয় করছে। আপনি জেনে অবাক হবেন যে নায়িকা শাবনুরের নাম শাবনুর না।
প্রশ্ন :ও আচ্ছা।আপনার স্ট্যাটাস দেয়ার পিছনে গোপন রহস্য কি?
স্ট্যা.খা :গোপন বললে আমার কেবল “গোপন সমস্যার কথা মনে হয়”। এ বিষয়ে আমার একটা স্ট্যাটাস আছে।তবে আমার স্ট্যাটাসের গোপন কোন রহস্য নেই। আমি লগইন করলেই আমার কিবোর্ডে শব্দরা নেচে উঠে, গান গায়।
প্রশ্ন : আচ্ছা আপনি কোন কোন বিষয়ের উপর বেশী স্ট্যাটাস দেন?
ফেসবুকার: কোন কোন বিষয়ের উপর দেই মানে? বলুন কোন কোন বিষয়ের উপর দেই না।বাথরুমে প্রবেশ এবং বাহির নিয়ে আমার স্ট্যাটাস আছে। ঘুম নিয়ে আমি ডেইলী সোপ এর মত করে স্ট্যাটাস দেই।গোসল করা নিয়ে চার পর্বের একটা স্ট্যাটাস আছে। এছাড়া বাথরুমে পানি নাই,সিগারেট ধরাতে গিয়ে ম্যাচ নাই,রাস্তায় নারী দেখা নিয়ে আমার বেশ কিছু স্ট্যাটাস রয়েছে।
প্রশ্ন : গ্রেট! জাতীয় কোন ইস্যুতে কোন স্ট্যাটাস নাই আপনার?
স্ট্যা.খা : অবশ্যই আছে। গতবার যখন বাতাসে দেয়াল ভেঙ্গে দুজন লোক মারা গেল সেবার আমি একটি জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। স্ট্যাটাসেই আমি দেয়াল ভাঙ্গনের কারন দেখিয়েছি। বাংলারা মানুষ দেয়াল দেখিলে মূত্র বিসর্জন করে। ক্রমান্বয়ে পানীয় সাপ্লাইয়ে দেয়াল উইক হয়ে এক সময় সামান্য জোরে বাতাসে ভেঙ্গে পড়ে।সেটিতে ১০০+ লাইক পড়েছিলো।
প্রশ্ন :বাহ বাহ চমৎকার এবং দুর্দান্ত। আচ্ছা আপনি যখন স্ট্যাটাস দেন তখন আপনার ফেবু ফ্রেন্ডদের কথা ভাবেন?
স্ট্যা.খা :প্রথমত ফ্রেন্ড না পাঠক। স্ট্যাটাস সাহিত্য, ভালো পাঠক মানেই স্ট্যাটাস পড়বে। প্রথম যখন স্ট্যাটাস লিখতাম মনের খুশীতে লিখতাম। এখন পাঠকদের অনেক চাপ। বিশেষ করে পাঠিকাদের। ওরা মাউস হাতে লাইক দেয়ার জন্য বসে থাকেই বলেই না আমি স্ট্যাটাস দেই। আমার এই বিষয় নিয়ে শিরোনামসর্বস্ব নামের একটি ব্যান্ড গান গেয়েছে “তুমি মাউস ধইরা আছো তাই, আমি স্ট্যাটাস মেরে যাই, মেরে মেরে অনেকগুলা লাইক পাই”
প্রশ্ন :আপনিতো ভালোই বিখ্যাত। তা লাইক হিসাব করে কি স্ট্যাটাস দেন?
স্ট্যা.খা : নাহ একজন লেখক কখনও তার বই বিক্রি করার কথা চিন্তা করে লিখে না। আমার লাইক মানে আমার বই বিক্রি।প্রতিটি লাইকই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন : একবার আপনি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন “নিউমাকের্টের মোড়ে প্যান্টের জায়গামত ছিইড়া গেছে, ভুলে আন্ডুটাও পরি নাই, ভাগ্যিস কেউ দেখেনি”। নিউমার্কেটে কেউ দেখিনি বলে আপনি ভাগ্যিস বললেন অথচ আপনি ফেসবুকের মত একটা মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে দিয়েছেন। এটা কি ঠিক?
স্ট্যা.খা :বোকা নাকি? ফেসবুকের ফ্রেন্ডদের জন্য কি আমি ছবি আপলোড করেছি নাকি? ব্যাপারটা সচেতনতা। ওদের এ বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। প্যান্টের বিশেষ জায়গায় যত্ন না নিলেতো সর্বনাশ হবে আমার মত।
প্রশ্ন :আপনার অসংখ্য,কোটি কোটি স্ট্যাটাসের মধ্যে কোনটি আপনার সবচে প্রিয়?
স্ট্যা.খা :দেখুন সব স্ট্যাটাস আমার সন্তানের মত।এতগুলা সন্তান থেকে একটা বেছে নেয়া বেশ কঠিন।
প্রশ্ন :আপনার উচিত পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে………
স্ট্যা.খা :কি বললেন? মানে কি? আপনাদের মত কিছু মূর্খ্য লোক যারা স্ট্যাটাস বুঝেন না………….
সুধী পাঠক। উনি কিঞ্চিত রাগ করে উঠে চলে গেছেন। ইতোমধ্যে আমার বিরুদ্ধে নিশ্চয় স্ট্যাটাস দিয়ে ফেলেছেন। যাই হোক পরের পর্বে নতুন কোন প্রতিভার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো। ততদিন ভালো থাকবেন।