গঠনা-এক
গত দুই দিন আগে আমার গ্রামের বাড়ির এক চাচা আমাকে ফোন দিলেন, ফোন দিয়ে বললেন জরুরী ভিত্তিতে আমার সাথে দেখা করতে চায়। জিজ্ঞাসা করলাম কী হয়েছে ? বলল দরকার আছে। আমি বললাম, ঠিক আছে আজ সন্ধায় দেখা হবে। সন্ধার সময় উনি আসলেন, জিজ্ঞাসা করলাম, বলেন কেন ? উনি বললেন স্থানীয় অগ্রণী ব্যাংক থেকে উনি পাচ হাজার টাকার কৃষি লোন নিয়েছিলেন দুই বছর আগে। এখন নোটিশ দিয়েছে টাকা পরিশোধ করার জন্য উল্লেখিত তারিখের মধ্যে না দিলে ব্যাংকে গচ্ছিত জমির নিলাম হবে। আমি বললাম দিয়ে দিন, ঝামেলা শেষ হয়ে যাবে। উনি বললেন,সমস্যা অন্যখানে, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কেন টাকা নেই আপনার কাছে ? উনি বললেন, টাকা তো নেই, কিন্তু টাকা পরিশোধের সময় ও হাতে নেই। বললাম মানে ? উনি বললেন, টাকা পরিশোধের শেষ তারিখ ছিল অক্টোবরের ১০ তারিখে, কিন্তু আমি নোটিশ হাতে পেয়েছি অক্টোবরের ১৫ তারিখে । এখন কী হবে ? আমি বললাম দেখা যাক কী হয়। তারপর তাত্ক্ষণিক ব্যাংক ম্যানেজার কে ফোন দিলাম, এই গুলো কী ? এমন হলো কেন ? ম্যানেজার উত্তর দিলেন, ভাই খুব পেরেশানে আছি, তারিখটা ভুল হয়ে গেছে। তারিখটা হবে, নবেম্বরের ১০ তারিখ। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে। চাচা কে বলে দিলাম ঈদ এর পরে টাকা দিলে ও চলবে। চাচা চলে গেলেন।
গঠনা-দুই
কোনও এক ব্যাক্তি গাজীপুরের জনতা ব্যাংকের যেকোনো একটি শাখা থেকে ২০ হাজার টাকা লোন চেয়েছিলেন, ব্যাংক জামানত হিসেবে ওই ব্যক্তির কাছে চেয়েছিল দুই বিঘার একটি দলিল, যদিও বর্তমান বাজার মূল্যে ওই অঞ্চলে দুই বিঘা জমির মূল্য কম করে হলেও প্রায় আশি লাখ টাকা। সেখানে ২০ হাজার টাকার জন্য উনি দুই বিঘা জমির দলিল দিতে পারেনি বলে। উনি লোন পাওয়ার অযোগ্য ঘোষিত হয়েছজিল। প্রাসঙ্গিক ওই ব্যাক্তির মোট জমির পরিমাণ ছিল মাত্র ১৫ কাঠা। কিন্তু উনি আর ব্যাংক থেকে কাঙ্খিত লোন নিতে পারেননি।
হলমার্ক কর্তৃক ব্যাংক লোনের পরিমাণ ছিল মোট ২,৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। বিষয়টি খুব বেশি না বলে মন্তব্য করেছিলেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। যদিও তিনি পরবর্তীতে উনার বক্তব্য প্রত্যাহার করেছিলেন। এখন আমিও বলছি, এই ২,৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা তেমন কোনও বিগ এমাউণ্ড না। যদি টাকা গুলো কোনও ভাল উদ্যোক্তার হাতে যেত। কিন্তু এমন এক উদ্যোক্তার হাতে টাকা গুলো গিয়েছে, যেখানে টাকা গেলে বলা চলে, টাকা ও নাই উদ্যোক্তা ও নাই। মানে একটি নিরব প্রতারক।
ভেবে পাচ্ছি না, যেখানে একটি গরীব শ্রেণীর কৃষক আশি লাখ টাকার সমমূল্যের জমির ব্যাংক গ্যারান্টি রাখতে পারেনি বলে ২০ হাজার টাকা লোন পায়নি সেখানে একজন খানবীর কী করে ২,৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার বিপরীতে প্রথমে ৬০ একর জমির দলিল জামানত। এরপর জামানত হিসেবে সাড়ে ১০ একর জমির দলিল। দিয়ে এত গুলো টাকা নিল ? জানি এই গোপন রহস্য বেদ করা আমার কেন, আমার চৌদ্দ পুরুষের ক্ষমতা নেই।
পরের জাগা পরের জমি ঘর বানিয়ে আমি রই, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। গানটা আমার খুব প্রিয় শিল্পী আব্দুল আলিমের গান। সেই গানের মত বাস্তব একটি গঠনা মনে হলো গতকাল কে আমার কাছে, জানতে চান কিভাবে সেটা ? এই ২,৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ২০ বছর সময় চেয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছিল তানভীর মাহমুদ। বেটার সাহস আছে বলা চলে, গোপন না এই মুহূর্তে তানবীর মাহমুদের হাতে দুদকের তথ্যমতে ৬-৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ আছে।
বিশ্বাস করতে পারছি না, এর মধ্যে ২,৬৫০ কোটি টাকার জমি আছে তার নামে। ঢাকার মিরপুর এলাকায় রয়েছে ৫-৬টি বাড়ি, চালু ও নির্মাণাধীন ৭০টি গার্মেন্ট, ৮৬টি দামি গাড়ি, ৫ হাজার গরুসহ বিভিন্ন ধরনের সম্পদ রয়েছে তার নামে। তার মানে সে কোনও টাকা তার করেনি। বরঞ্চ এই কয়েক মাসে সে আরও টাকা মুনাফা করেছে।
ধন্যবাদ তানবীর কে।
ঈদের ছুটির মধ্য দিয়েই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বহুল আলোচিত হলমার্ক গ্রুপ। গরু বিক্রি করে গত রোববার গভীর রাত পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়েছে। বাকি বেতন দেওয়া হবে বুধবার। তার পরেই কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্ত এ প্রতিষ্ঠানে চার মাস ধরে কোনো কাজ নেই। হলমার্কের ৩৪ জিএমের মধ্যে ৩২ জন এরই মধ্যে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। শ্রমিক ছাড়া শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা নেই। কোনো ব্যাংক এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না, নগদ টাকা নেই; কাজ পাওয়ারও সম্ভাবনা নেই। এ রকম পরিস্থিতিতে হলমার্কের ৮৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চালু থাকা ২৫টি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হলমার্কের প্রধান কার্যালয়ের মাঝারি শ্রেণীর কর্মকর্তারা। কারখানা বন্ধের কারণে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন।
ধন্যবাদ........হ্যাপি ব্লগিং।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৬