কিছুদিন পূর্বে সামুতে আমার একটি পোস্টের মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে বলছি, সামুর এক ব্লগার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আমি কি আমেরিকায় থাকি কিনা ? উত্তরে বলেছিলাম, না থাকি না, তবে আত্তিয় স্বজন কিছু থাকে ইচ্ছা করলে যেতে পারতাম। প্রিয় পাঠক, বিষয়টি নিয়ে আবার কেউ মন্তব্য করে ফেলতে পারেন, এমন সুযোগ রেখে আমি ব্লগে চাপাবাজি করছি। না মোটেই চাপাবাজি করছি না, অন্য আর দশ জনের মত আমেরিকা আমারও স্বপ্নের দেশ কিন্তু বলতে দ্বিধা নেই আমি তাদের কামলা দিতে কোনদিন আমেরিকা বা অন্য কোনও দেশে যাচ্ছি না। যদি কখনো যেতে হয় তাহলে নিজের কামলা দিতে যেতে পারি, নচেত বা। যাইহোক প্রসঙ্গ পাল্টাচ্ছি, যে বিষয় নিয়ে বলতে এই লেখা, বলছি আমাদের দেশের তারকাদের আমেরিকা প্রীতির কথা।
আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন যে আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পছন্দের পাত্র-পাত্রী হচ্ছে বাংলাদেশী-আমেরিকানরা। নতুন প্রজন্মের নামকরা অনেক শিল্পী এরই মধ্যে গোপনে বিয়ে করেছেন এবং আরো কয়েকজন বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খুঁজছেন। এমন কিছু খবর পড়লাম নিউয়র্ক ভিত্তিক সংবাদপত্রের চলতি সংখ্যা ঠিকানায়। তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী আরফিন রুমি নিউইয়র্ক প্রবাসী কামরুননেসাকে বিয়ে করেছেন গত ৭ অক্টোবর। বিয়ের দেনমোহর ধরা হয়েছে ১৫০০ ডলার। এর মধ্যে ২৫০ ডলার উসুল করা হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে কাজী অফিসে দুই বন্ধুকে সাক্ষী রেখে কামরুননেসাকে বিয়ে করেন আরফিন রুমি। যদিও এই দম্পত্তি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এসেও আবার বিয়ের কাজটি শেষ করেছে পারিবারিক ভাবে আগের বউকে উপস্থিত রেখে। তারপর পত্রিকাটি লিখেছে আমেরিকায় আরেফিন রুমী ও কামরুননেসার আলোচিত বিয়েটি পড়িয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের মোহাম্মদী মসজিদের ইমাম কাজী মাওলানা কাইয়্যুম। এ ব্যাপারে মাওলানা কাজী কাইয়্যুম ওই পত্রিকাকে বলেছেন, আরফিন রুমি এবং কামরুননেসা নিকাহ করেছেন বিয়ে নয়।
পত্রিকাটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বলেছে, নিউইয়র্কের প্রমোটর তানভীর শাহীন অক্টোবর মাসে আরফিন রুমিকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন নিউইয়র্কে শো করার জন্য। সেই সময় সানি নামের এক তরুন আরফিন রুমির সাথে কামরুন নেসাকে পরিচয় করিয়ে দেন। তবে কামরুননেসার সাথে আরফিন রুমির প্রথম সাক্ষাত হয় এস্টোরিয়ার একটি হুক্কা বারে। হুক্কা বারে কামরুননেসা তার একটি বার্থ ডে পালনের অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে আরফিন রুমিকে বিশেষ অতিথি হিসাবে দাওয়াত দেয়া হয়। সেখানেই আরফিন রুমির সাথে কামরুননেসার নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যে সম্পর্ক এক সময়ে গভীর সম্পর্কে রূপ নেয়। যার পরিণতিতে তারা বিয়ে করেন। আরফিন রুমির সাথে কামরুননেসার বেশ কয়েকটি অন্তরঙ্গ ছবিও রয়েছে। যা ইতিমধ্যেই ফেইসবুকে দেয়া হয়েছে। পত্রিকাটি আরও প্রকাশ করেছে আরফিন রুমি নাকি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের লক্ষ্যে ‘কাগজপত্র’র জন্যই কামরুননেসাকে বিয়ে করেছেন।
বাংলাদেশী তারকা শিল্পীদের নিউইয়র্কে গোপনে বিয়ে করে অস্বীকারের ঘটনা নতুন কোন বিষয় নয়। এর আগেও অভিনেত্রী কেয়া জুবায়েরকে বিয়ে করে অস্বীকার করেছিলেন। আখিঁ আলমগীর নিউইয়র্ক প্রবাসী রুশোকে বিয়ে করে অস্বীকার করেছিলেন। এ নিয়ে রুশো মামলার হুমকিও দিয়েছিলেন। অন্যদিকে কেয়া অস্বীকারের পর জুবায়ের হোসেন আবার অভিনেত্রী জনাকে বিয়ে করেছেন। বাংলাদেশী শিল্পী এবং অভিনেতা- অভিনেত্রীদের মধ্যে আমেরিকায় শো করতে এসে ২০১২ সালে গোপনে আরো বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী নাফিসা।
কয়েকজনতো শো করতে এসে শো না করে হয় বিয়ে করেছেন না হয় হবু পাত্র-পাত্রীর সাথে ঘুরে বেরিয়েছেন। এমন কি শোর দিন শোতে আসতে পারবেন না-তাও আয়োজকদের জানাননি। অভিনেত্রী নাফিসা গোপনে বিয়ে করেছেন দ্বীপকে। মডেল এবং অভিনেত্রী মোনালিসা বিয়ে করেছেন আমেরিকা প্রবাসী ফাইয়াজকে। ফাইয়াজ বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় লেখাপড়া করছেন।
ক্লোজআপের শিল্পী দীনা গোপনে বিয়ে করেছেন তুহীনকে। তুহীন নিউইয়র্ক সিটিতে ট্যাক্সী চালাচ্ছেন। অভিনেত্রী অহনা বিয়ে করেছেন নিউইয়র্ক প্রবাসী লেলিনকে। এর আগে রিচি, জেমস, সোনিয়া, ক্লোজআপের রুমি এবং উপস্থাপিকা নওশীন আমেরিকায় বিয়ে করেছিলেন। রিচি এবং জেমস সুখ-স্বাচ্ছন্দে সংসার করছেন। কিন্তু নওশীনের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। নওশীন বিয়ে করেছিলেন ওয়াহিদ আনামকে। ওয়াহিদের সাথে বিয়ে ভাঙ্গার পর ওয়াহিদ লাক্স ফটো সুন্দরী তাওসীনকে বিয়ে করেছেন।
নতুন করে আমেরিকান পাত্র খুঁজছেন, অভিনেত্রী কনা, হিমু ও বিন্দু। আমেরিকান ভাল পাত্র পেলেই তারা বিয়ে করবেন। পত্রিকাটি আরো জানায়, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে পুরো ইন্ডাস্ট্রির নতুন প্রজন্মের শিল্পী, অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরা আমেরিকান পাত্র-পাত্রী বলতে পাগল। যে সব শিল্পী, অভিনেতা এবং অভিনেত্রী আমেরিকায় বিয়ে করেছেন তারা অনেকটা গোপনেই বিয়ে করেছেন। তারা গোপনে কেন বিয়ে করেন তা নিয়েও নানা ধরনের প্রশ্ন রয়েছে।
আরেক শ্রেণীর শিল্পী রয়েছেন, তারা গোপনে আমেরিকা প্রবাসীর সাথে চুটিয়ে প্রেম করছেন, প্রেমের অভিনয় করে অর্থও হাতিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ গোপনে আমেরিকায় এসে প্রেমিক- প্রেমিকা বা হবু স্বামী- স্ত্রীর সাথে সময় কাটিয়ে গোপনে চলে যাচ্ছেন। কারো কারো বিরুদ্ধে হোটেল- মোটেলে থাকার অভিযোগও রয়েছে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, শিল্পী, অভিনেত্রীদের সাথে গোপনে প্রেম করে সর্বশান্ত হয়েছেন। ভুক্তভোগী কয়েকজন পত্রিকা কে জানিয়েছেন, আসলে এটি আসল প্রেম নয়, প্রেমের ফাঁদ। এরা প্রবাসীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এই হচ্ছে শিল্পী তারকাদের জীবন দর্শন। যাদের কাছ থেকে আমরা শিখছি এইসব বিনুদন। এদের লজ্জা করে না ? জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে এইধরনের অভিনয় করতে।
সুত্র: লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:৪৩