খবরটা পড়ে খুব মর্মাহত হয়েছি। পেয়েছি বেদনা। তাই শেয়ার না করে পারলাম না।
এই খবরে আমি মনে করি বিশেষ করে বাংলাদেশী তরুণীদের আমেরিকা প্রবাসী ছেলেদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করছি, না জেনে না শুনে যেকোনো প্রবাসী ছেলে দের কে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকুন।
এইবার শুনুন মূল গল্প:
খোঁজ-খবর না নিয়ে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় পাড়ি জমানোর প্রত্যাশায় বিভোর এক অভিভাবক এখন চোখে শর্ষের ফুল দেখছেন এবং তার কন্যাটি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের নিরাপত্তা হেফাজতে অসহনীয় যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছেন। লসএঞ্জেলেস এলাকার এক যুবক বাংলাদেশে গিয়ে বিয়ে করেন। নবপরিণীতার মাল্টিপল ভিসা ছিল বিধায় ধুব দ্রুত চলে আসেন আমেরিকায়। ঢাকা থেকে রওয়ানা দেয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারপোর্টে অবতরণের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নতুন দেশে নতুন মানুষের সাথে উচ্ছ্বল আনন্দের অনাগত ভবিষ্যত নিয়ে কতই না স্বপ্ন দেখেছেন নবপরিণীতা (সঙ্গত কারণে নাম গোপন রাখা হয়েছে)। বিমান থেকে নামার পর এয়ারপোর্টে প্রবাসী স্বামীকে দেখার পরই তার স্বপ্নে চিড় ধরে স্বামীর সাথে তরুনী আমেরিকানকে ঢলাঢলী করতে দেখে তার হৃদয় আৎকে উঠে।
এ কী হলো ?
তারপর.....
এয়ারপোর্ট থেকে গাড়িতে স্বামীর বাসা পর্যন্ত ঐ তরুণীকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন প্রবাসী যুবক। নতুন বউ, দেখতেও অনিন্দ সুন্দরী, কিন্তু তার প্রতি কোন মনোযোগ বা কৌতুহল পরিলতি হয়নি নবপরিণীতার। তিনি নিজেকে অভয় দিয়েছেন এই বলে যে, আমেরিকার সংস্কৃতিই হয়তো এ রকম। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই তার কাছে সবকিছু দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে যায়। তার স্বামী ঐ আমেরিকান তরুণীর সাথেই শয্যাসঙ্গী হচ্ছে, জীবন সঙ্গী বলতে যা বুঝায় তাকেই বুঝাচ্ছে। কেন এমন আচরণ করা হচ্ছে-জানতে চাইলে শুরু হয় মানসিক যন্ত্রণার পালা। এক পর্যায়ে সারাদিন নতুন বউকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার ঘটনা শুরু হয়। অবশেষে তরুণী বধূ ফোন করেন পুলিশকে। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে সরকারী নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে।
বর্তমানে..............
এখনও নিরাপত্তা হেফাজতেই দিনাতিপাত করছেন বাংলাদেশী উচ্চ শিক্ষিত তরূণী বধূটি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা তার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যে কারণে অভিবাবক ও তরুণীদের সচেতন হতে হবে.....মনে রাখতে হবে...........
যুক্তরাষ্ট্রে বাস করলেই প্রচুর অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়া যায় কিংবা সকলেরই বাড়ি-গাড়ি রয়েছে-এমন ধারণার কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এখন আর স্বপ্নের দেশও নয়। এখানে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় সুন্দর জীবন-যাপনের জন্য। ট্যাক্সি ড্রাইভিং অথবা গ্রোসারী কিংবা খুচরা কোন স্টোরে কাজ করার মধ্যেও তৃপ্তি রয়েছে। কারণ, এখানে সকল কাজেরই সমমর্যাদা। সুইপার এবং অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তা-একত্রে বসেই আহার করেন অথবা একই গাড়িতে চলাফেলা করেন। ত্রে বিশেষে সুইপারের বেতন অনেকের তুলনায় বেশী হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে অনেক নবপরিণীতাকে স্বামী সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দেয়ায় ঘটছে নানা বিপত্তি। বিমানে আটলান্টিক পাড়ি দেয়ার সময় যে স্বপ্নে বিভোর থাকেন, জেএফকে-তে অবতরণের পর তা পাল্টে যাওয়ায় অনেকের সংসারে বিপত্তে এসেছে। অনেকে স্বামীকে তালাক দিয়ে দেশে ফিরে গেছেন কিংবা অন্য পুরুষের হাত ধরে গৃহ ত্যাগ করেছেন।
পরিশেষে সেই অবহেলিত মেয়েটির জন্য রইল শুভ কামনা। যেন নিরাপদে দেশের মাটিতে ফিরে আসতে পারে।
তথ্যসুত্র: লিঙ্ক