বউ কইলো, গত ভ্যালেন্টাইন ডে ক্যামনে ক্যামনে জানি মিস হইয়া গেল...এইবার আর মিস করন যাইবে না। আমি কইলাম, বাইর হইলে গাড়ীর মইদ্যে বইয়া থাকন লাগবো, ঘুরাঘুরি বন। বউ কয়, যাউগ্গা, গাড়ীতে কইরা জ্যাম দেইখা আহি। কই, ওকে চল তাইলে...
ঘর থিকা বাইর হইয়া শাহবাগ আইতে আইতেই আমার পতাকা অর্ধনমিত হইয়া গেল। তয় চামে দিয়া আমি আর বউ মিলা গবেষনা করবার লাগলাম...আশপাশের কুনগুলা টেম্পরারী জুড়া আর কুনটি জামাই বউ। সিদ্ধান্তে আইলাম, যেইগুলা চিপকায়া বইসা আছে, ওইগুলান টেম্প। আর যেইগুলান বাইকের পিছে দুই পা দুইদিকে দিয়া পোলার পিঠের লগে বুক চাপা দিয়া বইসে, ওইগুলান তাওয়া গরম করতাসে...পার্টি আভি বাকি হ্যায় আর কতগুলা দেখলাম আলুথালু ভাবে ড্রেস পইরা উদাসভাবে এদিক উদিক চায়া চায়া ঘুরতাসে...বুঝলাম এডি বাড়ীত গিয়া ভাত রাইন্ধা ডাইল দিয়া খাওনের কথা ভাবতাসে। :-< :-<
শাহবাগ মোড়ের কাছে জ্যাম দেইখা গাড়ি টার্ন করামু এমুন সময় দেখি আমাগো সামনা সামনি রিশকায় বইয়া এক মাইয়ারে, মানে জিএফ রে পোলায় মজায় চাপতাসে। আমি আর আমার বউ যে চায়া রইসি সেই দিকেও খিয়াল করনের টাইম নাই। জোর কইরা ধইরা চুম্মা দিবার চায়...মাইয়া উহু আহু করে...আবার না ও করে না... :> :> হালায় আবার হুড ও তুলে নাই।
মনে কইলো এইবার ধানমন্ডির জ্যাম দেইখা আসি। গাড়ী ঘুরায়া গেলাম গা। যাইতে যাইতে চাইর পাশে কেবল হুড তোলানী রিশকা। মাইয়ার কোমর ধইরা পোলায় বইসা রইসে...আঙ্গুল দিয়া খোঁচাও দিতাসে... রিশকার পিছনের সাইডের ফাঁক দিয়া দেখন যাইতাসে। মনে কইল, গাড়ীর জানলার ফাঁক দিয়া আমিও একটু কোমরে চাপ দিয়া দেই...মাইয়াও খুশি, ভাববো পোলায় দিসে আর পোলাও খুশি। মনে মনে কইবো খোঁচাতেই এত খুশি, তাইলেতো গুতা দিলে তো পুরা স্বর্গে... । চরম জ্যাম আর চাপ খায়া ব্যাক করলাম।
পিচ্চি-পাচ্চি শালা-শালীগো ফোনাইলাম...আয়া পড়, আইজকা কাবাব-নান কোপামু । সেঞ্চুরী আর্কেডের পাশে কাবাব ঘর নামে রংচঙ্গা একখান দুকান আছে, চইলা আসো। হেরা কেমনে কেমনে জানি আমার আগেই আয়া পড়লো। জ্যাম ঠেইলা গ্যাস ফুরায়া তেলে চালায়া দেড় ঘন্টার জার্নি শেষ কইরা কেমনে কমেনে জানি আইলাম। আয়া খাইতে অর্ডার দিওনের সময় দেখি ধবধবা ফর্সা, সাদা পাঞ্জাবী-পায়জামা-টুপি পরা এক বুড়ামত ভদ্রলোক ব্যপক বিনয়ের সাথে আমাগো বসাইলো। আমি তো চরম উদাস হইয়া গেলাম। খাইতে আইলে এইহানেই আমু। বউও কইলো, হ বাসার কাছাকাছি আসে...আসন যাইবো।
খাওনের অর্ডার দিয়া বইয়া যে রইসি আর খবর নাই। কয়বার জিগাইলাম, ব্যপক বিনয়ের লগে কইল, খাওন আইতাসে পাঁচ মিনিটের মইদ্যে। অবশেষে খাওন আইলো...। এমুনসময় আইলো আরও কিছু পাবলিক। এক জুড়া আমাগো পিছনে বইলো...বইয়াই ইংরাজীতে পকপকাইবার লাগলো। দেইখাতো মনে লয় ঠাঠারী বাজারের গাঞ্জট্টী। আমার এক মিচকা শালী আওয়াজ কইরা কয়..."ও দুলাভাই, আমরা তো ইংরাজী বুঝি"। কিছুক্ষণ পরে হেগো ইংরাজী চর্চা থামলো...পুরা বাংলায় দেশী সিনামার ডায়লগ ডিলিভারী চলতাসে ।
একটু পরে দেহি, আমার শালীরা চামে চামে খালী পিছের টেবিলে চায় আর গুটুর গুটুর কথা কয় আর হাসে। দূরে আরেকখান টেবিল আসিলো। আমি চায়া দেহি, পোলারে ঘাড় ধইরা টাইনা মাইয়া সমানে ঠোঁটে চুমাইতাসে। ওগো লগেই আইসিলো মাঝবয়সী আরও দুইজন। হেরা দেহি মাথা নিচু কইরা বইয়া রইসে। আমি কিসুই বুঝবার পারলাম না। আমার শালা-শালীরা দেহে আর হাসে। আমি হালায় ঘাড় ঘুরায়া তো আর দেখবার পারি না। তয় হেরা পাবলিক প্লেসে এমুন জোরে চুমাচুমি লাগাইসলো যে চুম্মার পুচ পুচ আওয়াজও আমার কানে আইতাসিলো... :!> :!> । খাওন তো পুরা মাথায় উঠসে। নূরানী মালিকও দেহি পুরা নির্বিবার!!!
যাউগ্গা, চরম ঝাল দিয়া বিহারী কাবাব নামে কি জানি একখান কাবাব দিল, অর্ধেক খায়া তো পুরা মাথা নষ্ট...কুনটা বিফ আর কুনটা চিকেন কিছুই বুঝতাসি না। বেহুদাই আজাইরা খায়া সাড়ে তিন হাজার টাকা বিল উঠায়া কানে ধইরা বাইর হইলাম। বিল কার্ডে দিলাম... একটু পরে কার্ড লইয়া আইসা আমারে পাসওয়ার্ড জিগায়। আমি কই ভিসাতে পাসওয়ার্ড লাগে না। ডাইরেক্ট পাঞ্চ মারেন। আমিতো পুরা টাসকি? হেরা কি জিন্দেগীতে পত্থমবার ভিসা কার্ড হাতে পাইলো নি?
অবশেষে বাড়ীত ফিরা, রাইতে শালী আমারে জিগায় "আচ্ছা দুলাভাই, চুম্মা দিলে আওয়াজ কেমনে হয়?"
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০