খুব এবং খুব ভালো একটা ফ্যামিলি মুভি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার মতো। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ বাবা এবং তার ৭ বছর বয়সী মেয়ের গল্প। দুজন দুজনকেই অনেক ভালোবাসে। নিজের সামর্থ্য এবং ভালোবাসা দিয়েই মেয়েকে আগলে রাখতে চায় সেই বাবা। কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের সেই সুখের জীবনে অশান্তি এসে পড়ে। নিজের মানসিক অসুখের জন্য মেয়ের উপর অধিকার হারানোর অবস্থা হয় বাবার। মেয়ে তাকে ছেড়ে চলে যাবে এটা ভাবতেই পারে না বাবা-মেয়ে কেউই। মেয়েকে ফিরে পাবার জন্য লড়াই শুরু করে সেই বাবা। শন পেন ক্লাস অভিনয় করে গেছেন মুভিতে। তার সহজ-সরল এবং বোকাসোকা বাবার চরিত্রটি মনে দারুণ দাগ কেটে যায়। কয়েকটি দৃশ্যে চোখের পানি আটকানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। মনটাই ব্যাপক খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
October Sky
খুব প্রিয় এবং দারুণ ইন্সপাইরিং একটা মুভি। সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ১৯৫৭সালের গল্প। ছোট একটি শহরের Homer নামের একজন সহজ-সরল ছেলের গল্প। জীবন নিয়ে তেমন বড় কোন স্বপ্ন ছিলো না তার। কিন্তু সেই বছরে যখন ‘স্পুটনিক’ মহাকাশ পাড়ি দেয় তখনিই তার স্বপ্ন পরিবর্তন হতে থাকে। সেও স্বপ্ন দেখতে থাকে এমন একটি রকেট বানাবে যা হয়তো মহাকাশে রওনা দিতে পারে। কয়েকজন মিলে সেই স্বপ্নকে সত্যি করার পথে রওনা দেয়। কিন্তু তার বাবা থেকে শুরু করে অনেকেই এসব হেসেই উড়িয়ে দেয়। কিন্তু তারা কেউই বিশেষ করে Homer দমে যাওয়ার মতো নয় একদমই। শত বাধাকে ডিঙ্গিয়ে সে তার স্বপ্নের দিকে চলতে থাকে। প্রিয় নায়কের অসাম একটা মুভি। কিছু দৃশ্য আসলেই মনটাকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। মনটা খুব খারাপ করে দিয়ে যায় কিছু দৃশ্য।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
Hachi: A Dog's Tale
আরেকটা দারুণ এবং অসাধারণ মুভি। এটাও সত্য ঘটনার উপর নির্মিত। সত্যি করে একটা কথা বলি মুভিটা দেখে মনটাই এত খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গিয়েছিলো। মন থেকে কিছুতেই মুছতে পারছিলাম না কিছু স্মৃতি। প্রফেসর Parker নামের একজন মধ্যবয়স্ক লোক একদিন ট্রেন স্টেশনে একটি কুকুর খুজে পায়। কুকুরটিকে বাচাবার জন্য এবং নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সে এটিকে বাসায় নিয়ে আসে। কিন্তু কেউই কুকুরটিকে নিতে আসে না। কুকুরটি তাদের পরিবারের সাথেই থাকতে শুরু করে। পরিবারের একজন সংগী হয়ে উঠে সে। মিশে যায় সুখ-দু:খের ঘটনার সাথে। মনটা আসলেই খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। কেন যে মুভিটা দেখতে গিয়েছিলাম!!! আহ্..........মুভিটা অবশ্যই দেখবেন।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
The Diving Bell & The Butterfly
আরেকটি ক্লাস ক্যাটাগরীর মুভি। একইসাথে বেশ ইন্সপাইরিং এবং কিছু কারণে বেশ মন খারাপ করে দেয়া একটি মুভি। এটাও কিন্তু সত্য ঘটনার উপর নির্মিত। Jean নামের একজন লোকের গল্প। হঠাৎ স্ট্রোকের কারণে তার সম্পূর্ণ শরীর প্যারালাইজড হয়ে যায়। শরীরের কোন অংশই সে নড়াতে পারে না। শুধু বাম চোখটিকে সে নাড়াতে পারে। এই চোখ দিয়েই সে সবার সাথে যোগাযোগ করে। তার মনের বিপুল ইচ্ছাশক্তির কাছে শরীরের সব প্রতিবন্ধিকতাকে হারিয়ে দিতে সে তার স্বপ্নের একটি বই লেকার কাজে হাত দেয়। সফল তাকে হতেই হবে। এইটা একটা দারুন মুভি। মন খারাপ করার অনেক কিছু আছে মুভি। কিছু কিছু দৃশ্যে আপনার মনটা যদি খারাপ না হয় তাহলে আপনার হৃদয় পাথরের। মাস্ট সি।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
The Green Mile
অভিনয় গুরু টম হ্যাংকস অভিনীত একটি অসাধারণ এবং অসাধারণ ড্রামা মুভি। মুভিটির গল্প একটি জেলের বিশেষ শাখাকে কেন্দ্র করে। সব অপরাধীর জায়গা হয় না জেলের সেই শাখাটিতে। শুধুমাত্র মৃত্যুদন্ড পাওয়া অপরাধীদের জন্য সেই জেল। টম হ্যাংকস সেখানকারই একজন কর্মকর্তা। একসাথে অনেকদিন থাকার জন্যই হয়তো কয়েকজন অপরাধীর সাথে সেই পুলিশ কর্মকর্তাদের এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু সেই সম্পর্কটি কোনবারই বেশীদিন যেতে আরে না। মাঝখানে দায়িত্ব এসে দাড়িয়ে যায়। এদের কথা বলবো কি...আমার নিজেরও কেন জানি মৃত্যুর সময় সেই ভয়ানক অপরাধীদের জন্য খারাপ লেগে যায়। এইসময় সেইখানে দুজন নতুন অপরাধী আসে। অবিশ্বাস করার মতোই কিছু ঘটনা ঘটতে থাকে। শেষটা খুবই খারাপ। এমন মন খারাপ হয়ে যায় যে বলার মতো না। চোখে পানি চলে আসে।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
The Cider House Rules
আহ!!!! অসাধারণ একটা মাস্টারপিস। মনকে নাড়িয়ে দেয় এরকম মুভি খুব কমই আছে। তার মাঝে এটি একটি। Homer নামের একজন অনাথের গল্প। তার জায়গা হয় একটি অনাথ আশ্রমে। অনেক পরিবার এসে সেই আশ্রমের অণেক শিশুকে দত্তক নিলেও কেউ Homer কে নিতে চায় না। তার জায়গা সেই আশ্রমেই হয়ে যায়। আস্তে আস্তে বড় হয় সে। যুবক হবার পর একদিন একটি পরিবারের সাথে সে বেড়িয়ে পড়ে। পরিবারের কর্তা একদিন যুদ্ধে চলে যায়। তারপর মেয়েটিকে নিয়ে Homer তার জীবনের অজানা সব স্বপ্নকে আবার নতুন করে দেখতে থাকে। সব স্বপ্নকে সত্য করার দু:স্বপ্ন তার মাঝে চলে আসে। জীবনের নতুন মানে খুজে পায় সে। দুটি ক্যাটাগরীতে অস্কার পেয়েছিলো এই মুভিটি। এরকম অসাধারণ মনকে উষ্ণ করে দেয়া মুভি খুব কমই আছে। অবশ্যই দেখবেন। দারুণ একটা অভিজ্ঞতা।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
My Sister’s Keeper
আরেকটি দারুণ কিন্তু বেশ করুণ টাইপের একটি মুভি। একটি পরিবারের গল্প। সেই পরিবারের বড় মেয়েটি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। অনেক আগেই ঠিক হয় যে সেই পরিবারের ছোট মেয়েটি তার বড়বোনকে সুস্থ করে দেয়ার জন্য তার কিডনি তাকে দিবে। কিন্তু দৃশ্যপট বদলে যায়। সেই ছোটমেয়েটিকে দেখা যায় একসময় একজন বিখ্যাত উকিলের কাছে যেতে যাতে সে আদালত থেকে তার উপর কোন অঙ্গ প্রত্যাহারে বাধ্য না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা আনতে পারে। পরিবারের মা ছোটমেয়েটির না করার পিছনে কোন কারণই খুজে পায় না। কিন্তু তিনিও ছেড়ে দেবার পাত্র নন। কি করুণ অবস্থা ভাবতে পেরেছেন ??? এক সন্তানকে বাচানোর জন্য একজন মাকে আরেক সন্তানের বিপরীতে চলে যেতে হচ্ছে। মনটা আসলেই খুব খারাপ করে দিবে এই মুভি। খুব টাচিং একটা মুভি। না দেখা থাকলে দেখে ফেলুন।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
Seven Pounds
উইল স্মিথের দারুণ একটি ড্রামা মুভি। অসাধারণ লেগেছিলো দেখে। Ben একজন মধ্যবয়স্ক লোক। কিন্তু তার হাতে আর বেশীদিন সময় নেই। সময় খুবই অল্প হাতে। সে সিদ্ধান্ত নেয় সেই সময় শেষ হবার আগে কয়েকজন মানুষের জন্য ভালো কোন কাজ করে যাবে। ৭জন মানুষ সমস্যায় আক্রান্ত মানুষকে সে খুজে বের করে। কাউকেই সে আগে থেকে চিনে না। তাদের সাথে পরিচিত হতে থাকে Ben। কিন্তু সেই লোকগুলো সত্য কাহিনী কিছই টের পায় না। আস্তে আস্তে সেই কাংখিত মুহূর্তের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে সবাই। দারুণ একটা মুভি। মনটা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিলো দেখার পর। পুরো মুভিটি জুড়ে Ben এর সাথে নিজেও কেন জানি ডিপ্রেশনে ভুগছিলাম। যাইহোক দেখে ফেলুন।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
Marley & Me
আরেকটি দারুণ টাইপের সিম্পল ফ্যামিলি মুভি। একটি কুকুর এবং একটি পরিবারকে নিয়ে এই মুভির গল্প এগিয়ে চলে। John এবং Jennifer নতুন দম্পতি। বিয়ের পর John তাকে স্ত্রীকে Marley নামের কুকুরটিকে উপহার দেয়। আস্তে আস্তে Marley তাদের পরিবারেরই একজন হয়ে উঠে। যেন সে এই পরিবারেরই একজন সদস্য। তাদের পরিবার বড় হতে থাকে। ছেলেমেয়েরা আসে। সবাই Marleyকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু সবার জীবন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। পরিণতি সবাইকেই ভোগ করতে হবে। নির্মম সেই বাস্তবতার মাঝে দাড়িয়ে পড়ে সবাই। বাকিটা দেখুন। খুব সাধারণ কাহিনীর পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার মতো উপভোগ্য একটি মুভি। মুভিটি শেষ হবার পর মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় কি কারণে জানি!!! খুব খারাপ লাগে মুভির শেষে এসে। দেখে ফেলুন। খুব টাচিং।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
Everybody's Fine
গুরু Robert De Niro কে নিয়ে কিছু বলার নাই নতুন করে। বসের মুভি এটা। নিরো যা অভিনয় করেছেন এই মুভিতে তা আমার সারা জীবন মনে থাকবে। হৃদয়কে নাড়া দিয়ে গেছে উনার নি:সঙ্গ পিতার চরিত্রটি। সাধারণের মোড়কে রাখা অসাধারণ মুভি। Frank একজন বয়স্ক নি:সঙ্গ মানুষ। ছোট্ট একটা শহরে একলা থাকে সে। তার ছেলেমেয়েরা সব তার থেকে অনেক দূরে থাকে। অনেকদিন দেখা হয় না তাদের সাথে। তো ছুটিতে সে তার সব সন্তানদের চমক দেয়ার জন্য এবং দাওয়াত দেয়ার জন্য একলাই তাদের সবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু তার সেই সন্তানরা সবাই কেন জানি তাকে এড়িয়ে যেতে থাকে সেই সময়। ব্যাপারটা খুব কষ্ট দিতে থাকে তাকে। আসল কারণটা সামনে আসে পড়ে। নি:সঙ্গ পিতা Frank এর একলা ভ্রমণের দৃশ্য এবং সন্তানদের এড়িয়ে চলার দৃশ্যগুলো বেশ ডিপ্রেসিং। খুব খারাপ লাগে দেখতে। একইসাথে সেই সন্তানদের প্রতি মেজাজ খারাপ করে দেয়। তবে মুভির ফিনিশিংটা দারুণ। অবশ্যই দেখবেন। দারুণ টাচিং মুভি।
টরেন্ট ডাউনলোড লিংক
* একটু ফ্যামিলি মুভিগুলো রাখতে চেষ্টা করেছি বেশী। তাই অনেক বিখ্যাত মুভি বাদ গেছে। কিছুর নাম মনে নাই আর কিছু ইচ্ছে করেই দেই নাই।
** কোন সেরা মুভির তালিকা নয় এটি। অতিবিখ্যাত কয়েকটি মুভি ইচ্ছে করেই বাদ দিয়েছি.....আবার কয়েকটি রেখেও দিয়েছি।
*** সবকয়টি মুভিই মনটাকে দারুণ খারাপ করে দেয়। কয়েকটি মুভিতে আবার বাধ্য হয়ে চোখ দিয়ে পানি ফেলতে হয়। এতটাই টাচিং লেগেছিলো আমার।
**** এইসব মুভির টেস্টই অণ্যরকম মজার। দেখে ফেলুন। ভালো লাগবেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৮