বাঙলাদেশ অনেক দিন ধরেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। তাই নিয়ে পাকিস্তানের সাথে গন্ডোগোল কম হয় নাই। পাকিস্তান অনেকবারই এই বিচার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেছে, বিভিন্ন ফোরামে এই বিষয়ে তাদের মত তুলে ধরেছে। বাঙলাদেশ সেই সব ফোরামে এই বিচারের পক্ষে তার অবস্থান তুলে ধরেছে। পাকিস্তান কোন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসী হলেই এর বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় গালাগালি টাইপের বিবৃতি দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করত।
এই জাতীয় বিবৃতি বা উক্তিগুলোকে বাঙলাদেশ "আভ্যন্তরীন বিষয়ে" হস্তক্ষেপ হিসাবে আখ্যায়িত করে প্রতিবাদ করে আসছে। মাঝে মাঝেই বাঙলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে কূটনৈতিক ধোলাইও দেওয়া হয়েছে। এর পালটা হিসাবে পাকিস্তানও বাঙলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বকা দিয়েছে! এরপরে দুইদেশের ভেতরে কূটনীতিকদের বহিস্কারের ঘটনাও ঘটেছে।
গেল কয়েকদিন আগে ভারত পাকিস্তান সীমান্তে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এমন গোলাগুলি ঐ দুইদেশের সীমান্তে প্রায়ই হয়ে থাকে। ভারত বুদ্ধিমানের মত সেই ঘটনাকে ব্যবহার করে সার্ক সম্মেলনে না যাবার ঘোষণা দেয়। সেই সাথে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে সার্কভূক্ত কয়েকটি দেশকে তাদের দলে নিয়ে আসে। স্বাভাবিক ভাবে ভুটান বা আফগানিস্তান ভারতের সেই আহ্বানে সাড়া দেবে বলেই সবাই মনে করে। কিন্তু বাঙলাদেশ?
এইখানে যে ব্যাপারটি মনে রাখার, তা হল বাঙলাদেশের সাথে পাকিস্তানের আচরণ খারাপ ছিল। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও বাঙলাদেশ উরিতে সীমান্ত সংঘর্ষ না হওয়া পর্যন্ত ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিতব্য সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বর্জনের কোন ঘোষণা কেন দিল না? বাঙলাদেশের তো উচিৎ ছিল আরো আগেই পাকিস্তান বা সার্ক সচিবালয়কে জানিয়ে রাখা যে এমন ঘটনা বারবার হলে কিন্তু ইসলামাবাদের সার্ক সম্মেলনে যাবার আগে দুইবার তারা ভাববে!
প্রশ্নটা উঠে তখন, যখন অন্য কোন দেশের বৈরিতার কারণ নিজ দেশের সাথে বৈরিতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। এমন ভাবটাকেই মনেহয় সবাই গোলামী হিসাবেই দেখবে। পররাষ্ট্র বিষয়ে এইভাবেই বাঙলাদেশ কেমন যেন অপরের অধীন হয়ে যাওয়াটা সবার কাছেই খারাপ লাগছে! ফলে, সার্বভৌমত্ব আদৌ আছে কি না, তা অপরিস্কার ঠেকছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩১