ইতিহাসের পাতা থেকে আমরা জানি যে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়েই মূলতঃ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং বিজয়ী আওয়ামী লীগের সভাপতির মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল ঢাকায়।
জনরায় এমনই ছিল যে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট উড়ে এসেছিলেন ঢাকায়, আওয়ামী লীগের কাউকে রাওয়ালপিন্ডিতে যেতে হয় নাই। সেই বাস্তবতায়, পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবার জন্যই আলোচনা হচ্ছিল। সেই আলোচনা ভেঙে যায় মূলতঃ জুলফি ভুট্টোর ক্ষমতার অংশীদার হবার দাবীতে। তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তাঁর দেওয়া অনেক প্রাস্তাব থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন।
এক পর্যায়ে সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পদ্ধতি বের না করেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঢাকা ত্যাগ করেন। তখনই বিজয়ী দলের নেতা, আওয়ামী লীগের সভাপতি বুঝতে পারেন যে বাঙালীদের নির্বাচনে জিতে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী হবার আশা শেষ।
তাই তিনি তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণের আদলে, এবং অনেকটা সরাসরি ভাবেই, পূর্ব পাকিস্তানকে 'বাঙলাদেশ' অভিহিত করে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘন্টার ভেতরে কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্রে থেকে একজন সামরিক কর্মকর্তা সেই ঘোষণা পাঠ করেন এবং তা প্রচারিত হয়।
যার জন্য সারা দেশের মানুষ জানতে পারে যে, দেশ স্বাধীনের জন্য বঙ্গবন্ধু আহ্বান জানিয়েছেন এবং সেই মোতাবেক পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালী সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকরা দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
এই ঘটনা সত্য কি না মিথ্যা তা ইতিহাস বলবে। কিন্তু মোদ্দা কথা হল, ইতিহাসে পাতায় মোটা দাগে এই কথাগুলোই বলা আছে। আজ ৪৫ বছর পরে এই মোটা দাগের ইতিহাসকে অস্বীকার করে কি কোন লাভ আছে?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২