"বিশ্ববীনারবে বিশ্বজনে মহিছে।
স্থলে জলে নভতলে বনে উপবনে
নদীনদে গিরিগুহা-পারাবারে
নিত্য জাগে সরস সঙ্গীত মধুরিমা,
নিত্য নৃত্যরসভঙ্গিমা ।"
উৎসব সঙ্গীতের সুরে সুর মিলিয়ে ১৩ই ডিসেম্বর এক উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে ১২তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচিত্র প্রদর্শনী। ৩০ টি দেশ হতে আগত প্রায় ২০০ এর বেশী চলচিত্র স্থান পেয়েছে এই উৎসবে। প্রধান অতিথি হিসেবে আয়োজিত উদ্বোধনী সভায় বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও মাননীয় তথ্যমন্ত্রী জনাব মোঃ হাসানুল হক ইমু। এছাড়াও প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন জনাব হাসনাত আব্দুল হাই, সভাপতি জনাব মোরশেদুল ইসলাম ও উৎসব পরিচালক এম রাশেদ চৌধুরী।
আজ উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রদর্শিত হয় মোট ২৭ টি চলচিত্র। ঢাকা পাবলিক লাইব্রেরী ও জাতীয় যাদুঘর মিলনায়তনে মিলিত হন চলচিত্র প্রেমীরা। চারটি সময় সীমায় ভাগ করা প্রদর্শনীটিতে দর্শকের সমাগম ছিল লক্ষণীয়। সকাল ১১টায় শুরু হয় প্রদর্শনীর কার্যক্রম। এসময় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় "দ্যা সারদিন টিন", "দ্যা এনার্জি ম্যানিফেস্টো", "আফটার গ্লো", "অপরাজেয় বাংলা", "সিস্টারস উইদাউট মিস্টারস" চলচিত্র গুলি। একই সময় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয় "চেঞ্জ ইওর নেম ওসামা" ও "দুবিধা"
দুপুরের প্রদর্শনীতে স্থান করে নেওয়া ছবিগুলির চারটি ছবি দেখানো হয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে ও বাকি দুটি ছবি প্রদর্শিত হয় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে। পাবলিক লাইব্রেরী তে প্রদর্শিত ছবিগুলি হল, "ম্যাটেছো", "এরাউন্ড দ্যা রিভার", "বুকড", "ফ্রিডাম অফ শ্যাডোজ" এবং জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত ছবিগুলি হল "দ্যা উইপিং মেলোজ- ট্রায়লজি" এবং "দ্যা গ্রিন রে", জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে "ল্যান্ডস্কেপ ইন দ্যা মিস্ট", "পলিন এট দ্যা বীচ" ও "অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী" প্রদর্শনের কথা থাকলেও কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য একই পরিচালকের ভিন্ন দুটি চলচিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রদর্শনী মহল এই অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রদর্শনীর সামনের তথ্য ও টিকেট বুথের সামনে দেখা যায় চলচিত্র প্রেমীদের ভিড়। নানা দেশের, নানা মতের ও নানা বয়সের দর্শকের ভিড়ে জমে ওঠে এই মিলন মেলা। দেখা মেলে গ্যানিগুনি জনের। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতন। দেশী বিদেশী চলচিত্র নির্মাতা ও কলাকুশলীরাও মেতে ওঠেন আড্ডায়। পারস্পরিক চিন্তা চেতনা ও ভাবাবেগ বিনিময় করেন তারা। দেশ ও দশের পার্থক্য ভুলে একই লক্ষ্যে ও কাজে সংযুক্ত সবাই মুক্তচিন্তার সুরুচিশীল ছবি তৈরির অঙ্গিকারাবধ্ব হন তারা।
দেখামেলে বাংলাদেশী, নেপালি, ইরানি, ভারতীয় ও ফরাসী পরিচালকদের। তাদের সৃজনশীল কাজ ও চেতনামূলক চলচিত্রগুলি আমাদের দেশীয় চলচিত্রে যোগ করবে এক নতুন মাত্রা, এই শুভকামনাই সবার। প্রদর্শনী চলবে ১৯তারিখ পর্যন্ত। সকলের সবান্ধব উপস্থিতিই বাড়িয়ে দেবে এই প্রদর্শনীর সৌন্দর্য। ১২তম আন্তর্জাতিক স্বল্প ও মুক্ত চলচিত্র প্রদর্শনীর জন্য রইল শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫৯