গত চার পাঁচ বছরে আমাদের দেশে অন্যরকম একটা রেভলুশান ঘটেগেছে। ডিজিটাল রেভলুশান । ভাবতে ভালই লাগে । আমার মনে আছে, কোন কিছু না বুঝলে আস্তে করে মা কে জিজ্ঞেস করতাম, আম্মু এইটা কি ??? বা, এইটা এমন কেন??? মার উত্তর আসত সত্য আর সুরক্ষার কাঁধ ছুয়ে। এবং সব উত্তরের শেষে থাকত একটা পাদক্তি ঃ বাবা, বড় হও, সব জানতে পারবে। প্রশ্নটির সেখানেই মৃত্যু হত।
স্যর-ম্যাডাম দের প্রশ্ন করলে, তাদের উত্তর ছিল সাবলীল। হোম অয়ার্ক করেছিশ?? নে ১০০ বার ক্যান ধরে ওঠবস কর। এহহ!!! আইন্সটাইন হয়েছেন। অথবা, দেব কানের নিচে এক চড় কষিয়ে। নে বল পাটিগনিতের জনক কে ??? গনিতের আবিষ্কারকের নামের নিচে আমার প্রশ্ন গুলি দলিত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করত।
ইদানিং ক্লাসে প্রশ্ন করলে খুব ইনোভেটিভ স্টাইলে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামীনফোনের বিলবোর্ড থেকে আমাকে নারীজাতির শত্রু বানিয়ে দেওয়া হল। কিচ্ছু বলার নাই। আমার জিপিএ টা আমার জীবন থেকেও দামি !!!
"যার কেউ নেই, তার গুগল আছে।" আসলেই সত্য কথা। জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে গুগল আমাকে লাগাতার সাহায্য করে যাচ্ছে। যে সব উত্তরের জন্য বেত্রাঘাত, অপমান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করেছি আজ আমি তার সবই জানি।
তবে এখনো আমার মুখ সেলাই করা আছে। সেলাইতে টান পড়ছে ইদানিং। রক্ত বের হচ্ছে কাটা জায়গা গুলো থেকে। আমি বলতে চাই। আমি নির্বাক, আমি সেই নির্বাক কালের সাক্ষী। আমি দেখে যাব। মনের কথা হয়ত মনেই রয়ে যাবে। শুধু, আমার এক ফোঁটা লেখাও যদি একটি বীজে অঙ্কুর গজাতে পারে, তো জীবনটাকে সার্থক মনে হবে।
এ লেখা আগামী প্রজন্মের জন্য। তোরা বড় হ। অনেক বড় হ । প্রশ্ন করা ছাড়িস না । যেদিন তোদের প্রশ্ন শেষ হবে, সেদিন বুঝবি যে তোর দেশ, তোর মাটি , তোর চেতনা বিক্রি হয়ে গেল। মা, ম্যাডাম যদি উত্তর না দেয়, আজে বাজে সাইট না ঘেঁটে জিনিশটা জানার চেষ্টা কর। তোরাই আছিস, দেশটাকে বাঁচা।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:১৪