বলা হয়, ১৯০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে প্রথমবারের মতো আকাশে উড়েছিলেন কোনো মানুষ। মাত্র ১২ সেকেন্ড স্থায়ী সেই ফ্লাইট ১২০ ফুট দূরত্ব পাড়ি দিয়েছিল। ইতিহাসের প্রথম বলে স্বীকৃত এই ফ্লাইটের সঙ্গে যে বিমানটির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, সেটি হলো ‘ফ্লায়িং মেশিন’। এর পেছনের কারিগর রাইট ভ্রাতৃদ্বয় ১৯০৬ সালে ‘ফ্লায়িং মেশিন’-এর জন্য পেটেন্ট পান। কিন্তু অনেক দিন ধরে সেই পেটেন্টের সনদপত্রটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর সেটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সনদ হারিয়েছিল কীভাবে? প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভসায়েন্স দিয়েছে এ প্রশ্নের উত্তর। প্রথম মানুষবাহী বিমানের আকাশে ওড়ার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানা (আর্কাইভ) সনদটি প্রদর্শনের জন্য দিয়েছিল স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামকে। প্রদর্শনীর পর এটা আর্কাইভে ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৮০ সালে যখন আর্কাইভের কিউরেটর এটার খোঁজ করেন, তখন সেটি আর পাওয়া যায়নি। সুখবর হলো, তিন দশক ধরে ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে সনদটি পুনরুদ্ধার করা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হারিয়ে যাওয়া এবং চুরি হওয়া নথিগুলো পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত বিশেষ এক কর্মসূচির বদৌলতে সনদের ফাইলটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ২৬ কোটি ৯০ লাখেরও বেশি নথির মধ্যে ভুলে অন্য ফাইলে সনদটি রাখা হয়েছিল।'
কীভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হলো হারানো সনদ? ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যানসাস সিটির বাইরে লাইমস্টোন কেভে জাতীয় মহাফেজখানায় হারিয়ে যাওয়া ও চুরি হওয়া নথিগুলো খুঁজে বের করার পুনরুদ্ধার কর্মসূচির একদল কিউরেটর পেটেন্ট সনদটি পুনরুদ্ধার করেছেন। আগামী মে মাসেই আবার একে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাফেজখানার ওয়েস্ট রটুন্ডা গ্যালারিতে প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে। প্রদর্শনী শেষে সনদগুলোকে আবার যথাস্থানে সংরক্ষণ করে রাখা হবে।
দেব দুলাল গুহ,
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০৯