হ্যাঁ রে রঞ্জু এবার এত দিন পর এলি, সব খবর ভালো তো। তুই এত সুকাইসিস কেন রে? খাবার দাবার এর খুব কষ্ট হই তাই না? আর অনেক বাইরে ঘুরিস?
কেন মা বলত?
না তুই অনেক কাল হইয়ে গেসিস?
হ্যাঁ হ্যাঁ ... আমি আবার ফর্সা ছিলাম কবে । আমি তো সব সময় ই কাল। তবে এইটা ঠিক একটু সুকাইসি। এইটা ব্যাপার না ঠিক হয়ে যাবে। কি দ্যাখো মা এভাবে?
না তোর হাসি দেখি? ক্যামন যেন মলিন হয়ে গেছে।আগের বার যখন এসেছিলি তখন ও তো ঠিক ছিল।সেই যে হুট করে চলে গেলি ......। তার পর যে তোর কি হল কে জানে। তুই তো আর আমাকে বলবি না।
আরে না মা । সব কিছু ঠিক আছে। আমি অনেক টায়ার্ড তো তাই আই রকম লাগছে। সকালে সব ঠিক হয়ে যাবে। মা খুব খিদা লেগেছে তারাতারি খেতে দাও।
টেবিলে সব রেডি , তুই খেতে বস। আমি নামাজ পরে আসি।
মা বাবা কোথায় ?
তোর বাবা মসজিদ এ গেছে। বড় হুজুর নাকি আসছেন, সারা রাত জিকির হবে। ফজর এর নামাজ পরে তবে আসবে।
মার হাতের রান্না আসলেই অসাধারন। কত সিম্পল মোটা চালের ভাত, আলুর ভরতা,ডাল আর ডিম ভাজি। সিম্পল না ... এই টাই আমাদের প্রতিদিনের মেনু। না ডিম বাদ যাবে। ভাত , আলু আর হাঁটু ডাল। হাঁটু ডাল মানে যে ডালের মাঝ দিয়ে পাতিলের তলা দেখা যায়। এই ডালের পাতিল এর একটা মজার ইতিহাস আছে, এই পাতিল টা নাকি মা বাবার বিয়ের সময় গিফট পরেছিল। তো একবার চোরে এইটা নিয়ে যায়, আর এই টার শোকে মা তিন দিন কিছু মুখে দেই নি। পরে বাবা অনেক কষ্ট করে মতিন চোরের কাছ থেকে নিয়ে আসেন। নিম্ন বিত্তের পরিবারে সব কিছুর একটা একটা ইতিহাস থাকে। এই খাট, টেবিল, মাথার উপর ফ্যান সব কিসুর।
কিরে রঞ্জু কি ভাবিস ? কি খেলি? সব কিছুই তো পরে থাকলো? ডিম তাও তো খেলি না?
না মা পেট ভরে গেছে। ডিম খেতে ইচ্ছা করছে না। মা আমি বিমল দের বাসায় গেলাম। কিছু খন থেকে চলে আসবো। তুমি খেয়ে ঘুমায় পড়।
বাইরে যাবি এত রাতে। সাবধানে যাস, আর তোর বাবাব্র চাদর টা নিয়ে যা। বাইরে ঠাণ্ডা আছে।
রঞ্জু চাদর না নিয়ে বাইরে এসে দারাল। ফাল্গুন মাসের দুই তারিখ তবে ঠাণ্ডা ভাব টা এখনো যায় নি।হাল্কা কুয়াশা পরছে। সব কিছুর যে কি হয়েছে ... সবাই পাগলের মতো আচরন করে।সময়ের জিনিস সময়ে পাওয়া যাই না। গেলবার কি হল , আকাশ থেকে এক মন ওজনের বরফ পরল । বর্ষার সময় হলে মানা যেত বড় আকারের শিল কিন্তু পরল কখন ভরা গ্রিস্মে। ঠাটা রোঁদের মাঝে। আর সেই বরফ নিয়ে যা হল তা আর নাই বা বলি।
আরে রঞ্জু না? কই যাও এত রাতে? আসছ কখন?খবর সবর কি?
সালাম চাচা। ভালো আছি। আপনি ভালো আছেন? আমি এই তো আসলাম কিছুক্ষণ আগে।
তোমার বাবা কই?
বাবা তো মসজিদ এ ... জিকির নাকি হবে আজকে।
তোমার বাবা কে বল কাল বিকালে যেন আমার বাসায় একটু আসে। তুমি একটু সাবধানে থেক। দেশের অবস্থা ভালো না। আফসোস হয়... আজকের এই দিন গুলা দেখার জন্য কি তোমার বাবা, আমি, আমরা যুদ্ধ করে ছিলাম।
আচ্ছা আমি যাই...
বসির চাচার যাবার পথে চেয়ে থাকি। অন্ধকারে উনি হারিরে যান কিন্তু উনার ক্র্যাচ এর শব্দ এখনো কানে বাজে।
চলবে.।.।.।.।
ছল্বে