আজকে আসিফ সাহেবের একটা পোষ্ট দেখলাম। অদ্ভুদ সব যুক্তি দিয়ে নিজ সম্প্রদায় তথা নাস্তিকদের একটা মহান পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আর এমন একটা মিথ তৈরি করেছে যে তারা (নাস্তিকেরা) নির্যাতিত কারন তারা মানবতার কথা বলেন। আর আমরা আস্তিকেরা সন্ত্রাসী কারন আমরা চাপাতি দিয়ে কোবাই আর বোমা মারি।
তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই আমরা আস্তিকেরা আরো কি কি জঘন্য কাজ করি। কি কি কারনে আমরা সন্ত্রাসী।
১) আমরা লিভ টুগেদার প্রথার বিরোধী কারন এখানে এক পক্ষ মানে নারীরা সম্পুর্ন ভাবে ঠকে যায়। যেখানে ইসলাম বিয়েকে বাধ্যতা মুলক করে দিয়ে নারীকে স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকারী করেছে, মোহরানা হক দিয়েছে, সমাজে উপপত্নীর বদলে তার অর্ধাঙ্গী হিসেবে সম্মানিত করেছে। আইনগত সমস্ত অধিকার দিয়েছে।
কিন্তু নাস্তিকেরা বলেঃ তারা বিয়ে প্রথার বিরোধী কারন ইসলাম নাকি যেই অধিকার দিয়েছে সেটাতে নাকি নারীর অবমাননা হয়। নারীকে সঠিক মর্যাদা দেয়া হয়নি।
অন্য দিকে উনারা বিয়ে ছাড়াই প্রেম ভালোবাসাতে আগ্রহী এটাতে নাকি অনেক আবেগ আছে, যেটা বিয়ে নামক কাগুজে প্রথায় পাওয়া যায় না। প্রশ্ন রইলো লিভটুগেদার করে নারীকে উপপত্নী বানিয়ে উনারা নারীকে কি সম্মান দিচ্ছেন?
২) আমরা হিপোক্রাট ও পার্ভার্ট , কারন আমরা যাকাত দেই, বছর শেষের সমস্ত সম্পত্তির আড়াই শতাংশ দুনিয়ার এতিম ও গরীব দু;খীদের জন্য দান করি। এবং সেটা করি কোনো রকম প্রতিদান পাওয়ার আশা ছাড়াই।
৩) আমরা সন্ত্রাসী ও সেলফিস, কারন আমরা আমাদের জমিনে উৎপাদিত ফসলের ওশর দেই, বৃষ্টির পানিতে হলে ২০% আর সেচের পানিতে হলে ১০% ফসল গরীব মানুষের মধ্যে বন্টন করে দেই।
৪) আমরা সেলফিস আর অন্ধ কারন আমরা অদৃশ্য স্রষ্টাকে বিশ্বাস করি, তার ভয়ে আমরা পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করি। রোযার মাসে নিজের নফস কে দমন ও আত্নার পরিশুদ্ধতার জন্য নিজেকে সকল জাগতিক কাজ থেকে গুটিয়ে নেই। ফেতরা প্রদান করি। প্রচুর ইফতারী গরীব মানুষের মাঝে দান করি। প্রতিটি মসজিদে এতিম ও মজলুম ব্যাক্তিদের খাওয়ার কোনো অভাব হয় না।
৫) আমরা নরপিশাচ কারন, আমরা নারীকে ভোগ্য পন্য হিসেবে দেখতে বিরোধী, কারন তাকে ইসলাম সম্মানিত করেছে। মিডিয়াতে মেয়েদের কে অশ্লীল ভাবে উপস্থাপনের বিরোধী। অবাঞ্ছিত অংগ-প্রত্যংগ প্রদর্শনের বিরোধী।
কিন্তু নাস্তিকেরা প্রগতিশীল, কারন আমরা মুমিন মুসলমানেরা এই সব বিরোধীতা করে নারী অধিকার হরন করে নিচ্ছি। তাদের কে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছি। আমরা মুমিন মুসলমানেরা নারীকে ঘরে বন্দী করে রাখতে আগ্রহী।
তাই ভাবতেছি হাটুতে বুদ্ধি নিয়া আমি মুসলমান কি ই বা করতে পারি।
৬) আমরা সুদ প্রথার বিরোধী, কারন এই রক্ত চোষা পদ্ধতি বে-ইনসাফী। অন্যায় অর্থনৈতিক শোষন। কিন্তু নাস্তিকদের কাছে এটা কোনো ব্যাপারই না। কারন অর্থই হচ্ছে অর্থনীতির চালিকা শক্তি- সেটা যে কোনো প্রসেসেই হোক। আর্থিক যোগান পুজিকে উদৃত্ত্ব করবে।
৭) প্রেম ভাজা ও গাঞ্জা খাওয়া, অশ্লীল যৌনাচারে লিপ্ত, আল্লাহ-খোদা-ভগবান নিয়ে প্যারোডি বানানো লালন/বাউলদের কে কিছু বলা যাবে না। কিন্তু এই অন্যায়ের বাধা দিলেই মোমিন মুসলমানেরা সাম্প্রদায়িক হয়ে যায়। বাউলের গাঞ্জার দাপটে শান্তিপ্রিয় নিজের গ্রাম অশান্তির বন্যায় ভেসে গেলেও কিছু বলা যাবে না কারন, সাম্প্রদায়িকতা হয়ে যায়। বাউলের অপকর্মের দোষ হয় না।
8) দি মহান এন্ড গ্রেট নাস্তিকদের সমকামী ইস্যু নিয়ে বলার কিছু নাই। নাস্তিকেরা সমকামীতাকে কঠিন ভাবে সাপোর্ট করে। এটাকে সাপোর্ট দিতে পারে একমাত্র মানসিক রোগীরাই। কিন্তু এই ব্যাপারে কিছু বলতে গেলেই আসিফ সাহেব আমাকে পড়া লিখা করে আসতে বলেন। ইহা নাকি বিজ্ঞান সম্মত !!!
হায় কপাল !! আমার বুদ্ধি হাটুতে আমি কি ভাবে পড়া লিখা করবো ?
৯) আচ্ছা নাস্তিকেরা বলে থাকে পৃথিবীর সব বড় বড় হত্যাকান্ড নাকি ধর্ম নিয়ে হয়েছে। সেটা যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম।
কিন্তু সেটার জন্য ধর্মের দোষ কি? একজন খুনী/অপরাধী যদি মুসলিম হয়ে থাকে তাহলেও তার শাস্তি ইসলামেই নির্ধারিত আছে। কিন্তু কোনো নাস্তিক/অমুসলিম যদি অপরাধ করে ফেলে সেটার জন্য ধর্মের দোষ হয় না। সেটা হয় সামাজিক ক্রাইম। আর মুসলিম করলে সেটা হবে ইসলামের দোষ।
১০) মহান ও জ্ঞানপাপী আসীফ গং সাহেবরা কি হযরত ওমর(রঃ), ওসমান(রঃ), হযরত(রঃ) আলী প্রমুখ ব্যাক্তি বর্গের দেশ শাসন কার্য সম্পর্কে পড়েন নাই? জিজিয়ার বিনিময়ে রাষ্ট্রের নন মুসলিমদের কিভাবে সুরক্ষা দেয়া হয়েছিলো?
১১) ইসরাঈল যদি এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান নিয়া, ফিলিস্তিনের ঘন বসতি এলাকায় বোমা মেরে পরিবার শুদ্ধ মানুষ মেরে ফেলে, সেটা হয় আত্নরক্ষা। আর সেই পরিবারের বেচে যাওয়া কোনো পুরুষ সদস্য যদি প্রতিশোধ নেবার জন্য ইসরাঈলে আত্নঘাতি হামলা চালায় সেটা হবে সন্ত্রাসবাদী হামলা? ..............হুম আমার বোঝার মনে হয় অনেক কিছু বাকী আছে। আরো পড়া লিখার দরকার আছে মনে হয়।
যাক, নিজে মানুষ হবার চেষ্টা করতাছি। হিপোক্রেট রয়ে গিয়েছি- এখনো নাস্তিকদের জ্ঞানের সাথে পেরে উঠতে পারিনি। দেখি ভবিষ্যতই বলে দিবে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে শেষ হয়।
আরো অনেক কিছু লিখার ছিলো। পোষ্ট বেশী বড় হয়ে যাবে, সে জন্য বেশীদূর আগালামনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:২৪