somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামু ব্লগে যারা শেয়ার ব্যাবসায়ী আছেন তাদের ক্ষতি কাটানোর জন্য গুরুত্ত্বপূর্ন কিছু টিপস।

২৪ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার ভাইয়েরা, আসসালামুয়ালাইকুম।

আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আছি একরকম। এই ব্লগে আপনারা অনেকেই আছেন শেয়ার ব্যাবসার সাথে জড়িত। আমিও দেশের ৩৩ লক্ষ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একজন। আপনার বিশার আর্থিক ক্ষতির জন্য আমিও একজন সমব্যাথি।

বিগত ডিসেম্বর থেকে শেয়ার মার্কেটের ধ্বসে আপনারা অনেকেই হয়তো সর্বশান্ত হয়েছেন। অনেকেই নির্ঘুম আর আতংকিত রাত কাটাচ্ছেন আগামীকাল মার্কেট কেমন যাবে-এই ভয়ে। তবে আমি মনে করি এখনো নিঃস্ব হবার মতন কিছু হয়নি।

প্রিয় বন্ধুরা, হয়তো কিছুটা অবাক হচ্ছেন। আসলেই অবাক হবার কথা- এই বিশাল ধ্বসের ফলেও কেউ যদি ক্ষতি গ্রস্থ না হয় সেটা অলৌকিক। আসুন না জেনে নেই সেই অলৌকিক টেকনিক।

দেখুন !! আমরা মুখে মুখে বলি শেয়ার ব্যাবসা, শেয়ার ব্যাবসা !!! আসলেই কি এটা শেয়ার ব্যাবসা নাকি শেয়ার বিনিয়োগ? এই প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে আলাদিনের যাদুর প্রদিপ।

হ্যা, আসলে সেটা শেয়ার বিনিয়োগ। কিন্তু কেউ কেউ সেটাকে শেয়ার ব্যাবসা ধরে নিয়েই দেউলিয়া হয়ে গেছে।

দেখুন একটা উদাহরন দেইঃ- ডিসেম্বরে যখন ধ্বস শুরু হয় তখন আমার কাছে এনবিএল এর শেয়ার ছিলো। আমার শেয়ারের পরিমান ছিলো ৪০০০ আর প্রতি শেয়ারের ক্রয় মুল্যছিলো ১৫৬ টাকা করে। অনেক চড়ামুল্যে কিনা হয়েছিলো।

কিন্তু এই শেয়ারটা ছিলো ফান্ডামেন্টাল শেয়ার। ফান্ডামেন্টাল শেয়ারের গুনাবলী দেখুনঃ এটা আমাকে ৯৫% বোনাস শেয়ার দিয়েছে। আর বোনাস দেয়ার পরে এবং ক্রমাগত ধ্বসে এই শেয়ারের মুল্য দাড়িয়েছে ৬২ টাকা মাত্র। কিন্তু আমার এই ফান্ডামেন্টাল শেয়ার আমাকে ৯৫% বোনাস দেয়ার পরে আমার ক্রয় মুল্য দাড়ায়=(১৫৬/১.৯৫)=৮০ টাকা মাত্র। আর টোটাল শেয়ারের(৪০০০ শেয়ারের ৯৫% বোনাস) পরিমান দারায় (৪০০০+৩৮০০)=৭৮০০।

আমার লসের পরিমান=(৮০-৬২)*৭৮০০=১৪০৪০০/-।

প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই কি আমি লসে? এটা নির্ভর করছে আমার মেন্টালিটির উপরে। আমি যদি ব্যাবসায়ী হই তাহলে আমি লসে। আর যদি বিনিয়োগকারী হই তাহলে আমি কখনোই লসে নই।

**শেয়ার ব্যাবসায়ী যারা –তারা শেয়ার ক্রয় করবে এর পরে দাম বাড়লেই বিক্রি করে মুনাফা পকেটে ভরে নিবে।

**কিন্তু বিনিয়োগকারীরা কখনোই মুনাফা পকেটে পুরে না। তারা তাদের বোনাস প্রাপ্ত শেয়ারের উপরে নির্ভর করে, বোনাস পেয়ে নিজের শেয়ার সংখ্যা বাড়ায় মানে মজুদ করে(সে জন্যই এটাকে ষ্টক বিজনেস বলে)। তারা যদি টাকার সঙ্কটে পড়ে তাহলে বোনাস শেয়ার বিক্রয় করে নিজের আর্থিক চাহিদা মেটায়।

উপরে আমি হিসাব দিলাম আমি একলক্ষ চুয়াল্লিশ হাজার টাকা লসে আছি। দেখুন –আমি কি ভাবে ডিজাষ্টার ম্যনেজমেন্ট করি।

ধরে নিই আমার এখন টাকার দরকার। তাহলে আমাকে কি করতে হবে? আমাকে বর্তমান বাজার দরে লসে শেয়ার বিক্রি করতে হবে। ঠিক আছে আমি মেনে নিয়ে লসে ১০০০ শেয়ার বিক্রি করে দিলাম তার পরেও আমার কাছে আছে ৬৮০০ শেয়ার। এই টাকা দিয়ে আমার অনেক দিন চলবে। এর পরেও ধরে নেই আমার আবারো টাকার দরকার পড়লো, আমি আবারো ১০০০ শেয়ার বিক্রি করে দিলাম। আমার রইলো ৫৮০০ শেয়ার। এই পরিমান টাকা দিয়েই আমার এই বছর ভালোভাবেই চলবে। এবং যেই পরিমান টাকা আয় করলাম সেটা ব্যাংক রেটের চাইতেও অনেক অনেক বেশী।

তার মানে আমার শেয়ারের মুল্য যা-ই হোক আমার কেনা মুল শেয়ার ৪০০০ এনবিএল ঠিকই আছে সাথে আছে ১৮০০ বোনাস পাওয়া বাকি শেয়ার(টোটাল ৫৮০০)। যেহেতু আমি বিনিয়োগকারী সেহেতু আমি আমি টাকার মুল্য হিসেব করবো না, আমি শেয়ারের সংখ্যা হিসেব করবো।

আর নিশ্চিত ভাবেই এই বছর ভালোভাবেই পার করে দিবো। আর নিশ্চিত ভাবেই বছর শেষে এই কোম্পানী আবারো বিরাট পরিমান বোনাস শেয়ার দিবে। আবারো আমার শেয়ার সংখ্যা আগের অবস্থানে চলে যাবে। তাহলে আমার কোনো সমস্যা হলো? নিশ্চয়ই না।
এই ভাবে আগামী বছরেও খুব ভালোভাবেই চলতে পারবেন। ফান্ডামেন্টাল শেয়ার গুলো বোনাস শেয়ার দিয়েই যাবে, যেমন ফার্মের মুরগী প্রতিনিয়ত ডিম দিয়ে থাকে। আর শেয়ারের দাম কখনোই শুন্য হবে না।

**আপনার শেয়ার যদি ফান্ডামেন্টাল শেয়ার হয়ে থাকে আপনাকে চিন্তা করার কারন নেই। আর যদি ফটকা বাজারী করার জন্য জাঙ্ক শেয়ার কিনে থাকেন সেই ঝুকির জন্য আপনিই দায়ী।

** প্রিয় বন্ধুরা !!! শেয়ার বাজার নিয়ে টেনশন করার কিছুই নাই। আমি বিপদের দিন গুলোতে চলার জন্য একটা পথ দেখিয়ে দিলাম।

শেয়ার মার্কেট আরো অনেক তারাতারিই ঠিক হয়ে যাবে। কর্পোরেট ব্যাবসায়ী/সিন্ডিকেট/গেম্বলার রা আমাদের মতন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের হাই প্রাইসে শেয়ার ধরিয়ে দিয়ে মার্কেট থেকে কেটে পড়েছে। ওরা আবারো মার্কেট আসবে, আসতেই হবে –সেটা ওদের ব্যাবসায়ীক স্বার্থে টিকে থাকার জন্য।

ওদের আছে টাকা, আর আমাদের টাকা নেই-কিন্তু আমাদের শেয়ার আছে। ওদের কে শেয়ার আমাদের মতন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের থেকেই কিনতে হবে। তাই দাবার গুটির চাল এইবার আমাদের কাছে। ফান্ডামেন্টাল শেয়ার গুলো তাদের মৌলিক প্রাইসে আবারো উঠবে। আর আপনি মুনাফা করতে পারবেন। হাসতে হাসতে বাড়ী ফিরবেন। সেই দিন আর বেশী দূরে নয়।

*** ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।




২০টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×