বাবা আদম মসজিদ বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ, যা পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত। এ মসজিদে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করা হয়। মসজিদের চত্বরে জনাব বাবা আদমের রহ. মাজার অবস্থিত। ১৯৪৮ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছেন।১০৯৯ সালে বাবা আদম সৌদি আরবের মক্কা নগরের অদূরে তায়েফে জন্মগ্রহন করেন। পরবর্তী সময়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞান সাধনায় বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) এর সাহচর্য পেতে বর্তমান ইরাকের বাগদাদে আসেন। সুদুর আরবে জন্মগ্রহন করেও তিনি উপমহাদেশে আসেন। বর্তমান বাংলাদেশের ধলেশ্বরীর তীরে মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমে আসেন ১১৭৮ সালে সেন শাসন আমলে। তখন বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ ছিল বল্লাল সেনের রাজত্বে। ওই বছরই বল্লাল সেনের হাতে প্রাণ দিতে হয় তাঁকে।হিজরী ৮৮৮ তথা ১৪৮৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয় বাবা আদম মসজিদ। মসজিদ নির্মাণে ৪ বৎসর সময় লেগেছিল।এ মসজিদের ছাদে ৬টি গম্বুজ রয়েছে। উত্তর-দক্ষিণে বিস্তারিত ভিত্তি এলাকা দৈর্ঘ্যে ৪৩ ফুট এবং প্রস্থে ৩৬ ফুট। এর দেয়াল ইটে নির্মিত যা প্রায় ৪ ফুট প্রশস্থ। ইটের আকার ১০ ইঞ্চি, ৭ ইঞ্চি, ৬ ইঞ্চি ও ৫ ইঞ্চি। এগুলো লাল পোড়ামাটির ইট। সম্মুখভাগে তিনটি খিলানাকৃতির প্রবেশ পথ রয়েছে যার মাঝেরটি বর্তমানে ব্যবহৃত হয়। অভ্যন্তরভাগে পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে আর পূর্ব দেয়ালে রয়েছে আরবি লিপিতে উৎকীর্ণ একটি শিলাফলক।ভারতবর্ষ প্রত্নতত্ত্ব জরিপ বিভাগ ১৯০৯ সালে একবার এ মসজিদটি সংস্কার করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এর পর আর কোন কাজ হয়নি। ১৯৯১ সালে লোহার সীমানা বেড়া দেয়বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত অধিদপ্তর।১৯৯১
ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চে, গুলিস্তান থেকে বাসে সিপাহীপাড়ায় নামলে সে মসজিদে যাওয়া যাবে। এটি শুধু মুন্সীগঞ্জেরই নয়, সমগ্র দেশেরই ইতিহাস ও ঐতিহ্য। সুলতানী আমলের ইতিহাস বহন করে চলছে মহাকালের দিকে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৪