somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তালেয়া রেহমান এবং মাহমুদা বেগম কতটুকু সত্য বললেন

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাংবাদিক কলামিস্ট শফিক রেহমানের দ্বিতীয় দফা রিমান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার স্ত্রী তালেয়া রেহমান। নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকৃতি আদায়ের অভিযোগও করেছেন তিনি । শফিক রেহমান এখনো আইনি জালে আটকে আছেন। রাজনীতিবিদ না হয়েও রাজনীতির খপ্পরে পড়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন । সাংবাদিক কলামিস্ট মাহমুদুর রহমানের ওপর নতুন করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের খড়গ ঝুলছে। কুৎসিত রাজনীতির রাহু তাকে আগেই গিলেছে। ইতোমধ্যে রিমান্ডের ব্যবস্থা আইনের মর্যাদা হারিয়ে একটা নিপীড়ন অস্ত্রের খাতায় নাম লিখানো। আইনে যাই থাকুক বাস্তবে বিচারের আগে শাস্তি পাইয়ে দেওয়া কিংবা তদন্তেরও আগে নরক যন্ত্রণার মধ্যে ছুড়ে ফেলার আধুনিক নাম হলো রিমান্ড। খুন, গুম, অপহরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো রিমান্ডও একধরনের বিভীষিকা ও আতঙ্কের নাম। শফিক রেহমানকে সত্য গোপন করে তার স্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে বাসা থেকে তুলে আনায় সব নাগরিকের মনে একটা প্রশ্ন জাগে যে ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে তার সাথে শফিক রেহমানের দূরতম সম্পর্ক থাকাও সম্ভব কি না। তথ্য জানার স্বার্থে কান খাড়া করা ছাড়া শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের অন্য কোনো সংযোগ থাকা আদৌ সম্ভব কি না এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর মিলবে নির্মোহ তদন্তে তবে রিমান্ডে নয়।

কোনো ষড়যন্ত্রের তথ্য জানা অন্যান্য ঘটনার মতোই একটি সংবাদ তাই বলে কোনো তথ্য জানার আগ্রহ ষড়যন্ত্র করার উপমা না। তা ছাড়া একজন সাংবাদিকের কাছে তথ্য পায়ে হেঁটে আসে। সাংবাদিক নিজেও তথ্য জানার চেষ্টা করেন। তথ্যের উৎসমূলে পৌঁছতে সচেষ্ট থাকেন। সাংবাদিকের কাছে তথ্য থাকা একটি স্বাভাবিক বিষয়।

আর এরই মধ্যে কম করে দুইদফা আনুষ্ঠানিকভাবে শফিক রেহমানের রিমান্ড বাতিল এবং মুক্তি চেয়েছেন তার স্ত্রী তালেয়া রেহমান। জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংহতি অনুষ্ঠানও হয়েছে। সংহতি অনুষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যরাও গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিক শফিক রেহমানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফোরামও তার মুক্তি দাবি করেছেন। সর্বশেষ ২৫শে এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে রিমান্ডে নির্যাতনের এ অভিযোগ তুললেন।

তালেয়া রেহমান মনে করেন যে একেবারে মিথ্যা এবং বানোয়াট একটি কারণ দেখিয়ে শফিক রেহমানকে বাসা থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তালেয়া রেহমান প্রশ্ন তোলেন যে ব্যক্তি হিংসা ও হানাহানির বিপরীতে ভালোবাসা দিবস প্রচলন করেছেন সেই লোকের নামে হত্যার অভিযোগ উঠল, এটা হতেই পারে না। এটা একেবারেই মিথ্যা। আর এত বড় মিথ্যা তিনি সহ্য করতে পারছেন না। শফিক রেহমান অনেক বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারেন। আর সাধারনত সাংবাদিক হিসেবে অনেক কিছু জানতে হয় বলেই জানেন। পেশার স্বার্থে জানেন। নিজের আগ্রহের কারণেও জানতে পারেন। এর সাথে কোনো ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র থাকার প্রশ্ন ওঠে না বলেই তালেয়া রেহমান মনে করেন।

রাজনৈতিক কোলাহলজনিত কারণে বেড়ে চলা অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে যিনি ভালোবাসা দিবস প্রচলন করেছেন সেই লোকের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠল! তালেয়া রেহমান শফিক রেহমানের সাথে স্বামী স্ত্রী হিসেবে দাম্পত্য জীবনের ঊনষাট বছর একসাথে কাটিয়েছেন। এখন পুলিশ ও সরকারি মহল থেকে যা বলা হচ্ছে কাগজে যা আসছে তা তার ৫৯ বছরের সাথে একেবারে অপরিচিত। তালেয়া রেহমানের দুঃখের আসল কারণ শফিক রেহমানকে ‘অপরাধীর পর্যায়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে যা কিনা আসলে কোনোভাবেই সম্ভব হওয়ার নয়। স্বজনকে নির্দোষ ভাবা কিংবা সহমর্মিতা পেতে সাফাই গাওয়া হয়। তালেয়া রেহমানের বক্তব্যে তা মনে হয় না।

যে লোকটি আইনি প্রক্রিয়ায় ফাঁসির শাস্তিকে অথবা মৃত্যুদণ্ডকে অমানবিক ভাবেন। গবেষণা করে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে জনমত গঠন করেন তিনি হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের ষড়যন্ত্র করতে পারেন তালেয়া রেহমান তা কোনভাবেই বিশ্বাস করেন না। তার দৃঢ়বিশ্বাস শফিক রেহমান কাউকে কোন প্রকার হত্যার চেষ্টা করতে পারেন তা অসম্ভব। এই ধরনের অসংখ্য তরুণ আছেন যাদের সাথে রাজনীতির দূরতম সম্পর্কও নেই তারাও এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বাস্তবতার সাথে মেলাতে পারছেন না। এটা ভক্তের অনুরাগ নয় প্রতিষ্ঠিত ধারণার একটি বিষয়।

বিচার প্রক্রিয়াধীন বা তদন্তাধীন কোনো বিষয়ে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে কোনো মন্তব্য করব না। কিন্তু বিশ্বাস হোঁচট খেলে তার ওপর খবরদারির লাগাম পরাব কিভাবে! শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে অসন্তোষ একটি স্বাভাবিক বিষয়। শাসক পরিবারে খুনোখুনি এবং প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ইতিহাসে অনেক কলেবর নিয়ে ঠাঁই পেয়েছে। জয় সরকার পরিচালনার সাথে জড়িত। এই ধরনের ষড়যন্ত্র তাকে নিয়েও হতে পারে। কেউ না কেউ জড়িতও থাকতে পারেন। কিন্তু শফিক রেহমান অতটা নির্বোধ হতে পারেন না অথবা হওয়ার কথা নয়। তাহলে শফিক রেহমান এবং মাহমুদুর রহমান কি পরিস্থিতির শিকার । সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য না হলে সরকারসংশ্লিষ্টরা চ্যালেঞ্জ করেনি কেন? পুলিশ কেন বলবে রাজনৈতিক বক্তব্য। তাহলে আসল বক্তব্য কী?

আমাদের চেনাজানা শফিক রেহমান ব্যতিক্রমী শ্রেণী চরিত্রের মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের জায়গা থেকে আজকের দিন পর্যন্ত বর্ণাঢ্য এই মানুষটিকে কখনো মিথ্যাবাদী, কপটচারী, দুরাচার কিংবা খল মনে হয়নি। কোনো তৎপরতা, কর্ম এবং আচরণ দিয়ে প্রমাণ করা যাবে না শফিক রেহমান নিষ্ঠুর প্রকৃতির লোক। কিংবা অন্যের ক্ষতি করার জন্য মুখিয়ে থাকেন। বরং উল্টো চরিত্রে তার পরিচিতিটা জাতির মনে ছাপ ফেলেছে। তারুণ্যের মনেও দাগ কেটেছে। সরকার তাকে অভিযুক্ত করেছেন কিন্তু জনগণের ধারণা পাল্টাতে পারেনি। যে লোকটি কঠিন কথাও রম্য গদ্যে বলতে ভালোবাসেন রসাত্মক গল্প সাজিয়ে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের মুন্সিয়ানা দেখাতে পারেন তার মাধ্যমে দশটা প্রেম করা সম্ভব একটা মানুষকে জখম করা সম্ভব বলে মনে হয় না।

সব কিছুকে আলাদা করে মানবিক বোধ-বিশ্বাস থেকে দেখা, ভাবা এবং উপস্থাপন করার যে পেশাগত সততা সেটা থেকে শফিক রেহমান বিচ্যুত হয়েছেন- আমাদের কাছে সেটা কখনো মনে হয়নি। বরং সাদাকে সাদা বলা ও সত্যকে সরাসরি উপস্থাপনের জন্য কয়েকবার তিনি সম্পাদক হিসেবে বিব্রতকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। তার চরিত্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছেÑ কোনো কিছুকে গভীর থেকে দেখা, আলাদা করে ভাবা, নিজের মতো করে মূল্যায়ন করা ও কান খাড়া রেখে নিজের ভেতর তথ্যের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। তাকে প্রেমিক ভাবতে ভালো লাগে, রসিক বলতে যুক্তি খুঁজে পাই। ষড়যন্ত্র, হত্যা, যুক্তিহীন রাজনৈতিক বিদ্বেষ তার সাথে যায় না। হ্যাঁ, তার অনুসন্ধিৎসু মন তাকে সব কিছুতে কান খাড়া করতে উৎসাহিত করে। সাংবাদিক হিসেবে এটা তার গুণ, দোষ নয়। হয়তো কান খাড়া করা এবং চোখ খোলা রাখাটাই তাকে এই বয়সে রাজনৈতিক অভিযোগের বিষাক্ত তীর আঘাত হানল। শফিক রেহমান আর যা-ই হোন মুখোশ পরা বোবা শয়তান প্রকৃতির মানুষ নন।
ধারণা মতে, শফিক রেহমান যে ধাতুর মানুষ তিনি গোয়েন্দাদের হতাশ করবেন না। সত্য লুকানোর মতো মানসিকতা তিনি লালন করেন না। কান খাড়া করে যা পাবেন কিংবা যা কিছু পেয়েছেন, জেনেছেনÑ তাই অকপটে বলে দেবেন। সেখানে হয়তো অনেক তথ্য থাকবে, ষড়যন্ত্রের লেশমাত্র থাকার কথা নয়। গোয়েন্দারা চাপ দিয়ে কোনো ইচ্ছাপত্রে স্বাক্ষর করাতে চাইলে তিনি হয়তো বিগড়ে যাবেন। জুলুম না করলে কিংবা তার বক্তব্য মতলবিভাবে উপস্থাপন না করলে বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি হয়তো বস্তুনিষ্ঠ থাকবেন। তাই তালেয়া রেহমানের ধারণার মতোই আমাদের ধারণা শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে, কিন্তু নিয়তি তাকে ভোগান্তি থেকে সহসা মুক্তি দেবে বলে মনে হয় না। অথচ শফিক রেহমান বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল নিপাট ভদ্রলোক, সাধারণ অর্থে নিয়তিবাদী নন।
খ. আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ২০০৬ সালে সরকারি দায়িত্ব পালন শেষ করার পর আর কখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাননি। তার মা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের এই বক্তব্য একজন মায়ের হতে পারে। কিন্তু আইনের ভাষা হতে পারে না। কারণ, ষড়যন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া জরুরি নয়। বরং এটা গ্রহণযোগ্য যে, মাহমুদুর রহমান ষড়যন্ত্রের কথা হয়তো শুনে থাকবেন। তা-ও তার পেশাদারিত্বের কারণেই হয়তো শুনতে পারেন। জানতেও পারেন। এ জানা এবং শোনা তার সম্পাদকীয় এখতিয়ার, ষড়যন্ত্র নয়। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সংশ্লিষ্ট কোনো ষড়যন্ত্রের সাথে তার ছেলের কোনো সংশ্রব নেই জানিয়ে মাহমুদুর রহমানের মা মনে করেন, এ ব্যাপারে যদি কোনো ষড়যন্ত্র হয়ে থাকে সে বিষয়ে জনগণকে প্রকৃত সত্য তথ্য জানানো বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব ভাবা উচিত। একই সাথে তিনি মাহমুদুর রহমান সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একতরফা অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। মাহমুদুর রহমান ৭২টি মামলায় জামিন পাওয়ার পর আরো তিন মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোয় অশীতিপর বৃদ্ধ এই মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আহাজারির সুরে বলেন, আমাকে জেলে নেয়ার বিনিময়ে হলেও আমার নিরপরাধ সন্তানকে মুক্তি দিন। মায়েরা সন্তানের সব ব্যথা কষ্ট নিজের ওপর নিতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। মাহমুদুর রহমানের মা তার একমাত্র সন্তানের জন্য এই বয়সে আর কিই বা চাইতে পারেন। কারণ সন্তানের মতো এই মা-ও বিশ্বাস করেন সরকার তার প্রতিবাদী ও সত্যনিষ্ঠ সন্তানের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।
মাহমুদা বেগম মনে করেন, মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি সবার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখেন, পুলিশ ২০১১ সালের একটি কল্পকাহিনী সাজিয়েছে। মাহমুদুর রহমান নাকি বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশনকে ফাঁকি দিয়ে ২০১১ সালে সবার অজান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করে এসেছে। এই মা প্রশ্ন তোলেন, কোনো বিবেকবান মানুষ কি বিশ্বাস করবেন, শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান মিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের পরিকল্পনা করবেন? দু’জনই কি একেবারে নির্বোধ? বাংলাদেশের জনগণ তো জানে, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সব সদস্যই এসএসএফ নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। সেই এসএসএফের ভিভিআইপি নিরাপত্তার মধ্যে অপহরণের কল্পকাহিনী কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
মাহমুদা বেগমের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী ও তার ছেলের বক্তব্য এবং দৈনিক পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত পুলিশের দাবি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট নাকি কথিত অপহরণ ষড়যন্ত্রের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তথ্য দিয়েছে। আর আমি নিশ্চিত, জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট যদি কোনো তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে দিয়েও থাকে সেখানে আমার ছেলে মাহমুদুর রহমানের কোনোরূপ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে না। মার্কিন সরকারকে নীরব না থেকে এ বিষয়ে সব দলিলাদি স্বচ্ছতার স্বার্থে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমানের বৃদ্ধ মা বলেন, মার্কিন সরকার এবং বাংলাদেশে সে দেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের নীরবতার সুযোগ নিয়ে সরকার আমার ছেলেসহ এ দেশের অন্য নিরপরাধ নাগরিকদের হয়রানি ও নির্যাতন করবে এটা চলতে পারে না। মাহমুদা বেগম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাৎ করার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, আমি আশা করি, তিনিও একজন নারী ও মা হিসেবে আমার ব্যথা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী ছেলেকে অপহরণের যদি সত্যিই কোনো ষড়যন্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে বিষয়টি সঠিকভাবে বাংলাদেশের জনগণকে জানানো একজন কূটনীতিকের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এ ব্যাপারে কাউকে কোনো ধূম্রজাল সৃষ্টির সুযোগ দেয়া উচিত নয়। মাহমুদুর রহমানের মায়ের মতো দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকও একই ধরনের অভিমত দিয়েছেন। অনেকের মতো আমাদেরও আগ্রহ এফবিআইর যে প্রমাণ উপস্থাপনের কথা পুলিশের বরাতে জাতি জানল, সরকার সমর্থন জোগালো, তা ন্যায়বিচার ও ইনসাফের স্বার্থে জনগণকে জানতে দেয়া উচিত। অন্তত উচ্চ আদালতের কাছে সেটা হস্তান্তর করলে জাতি আপাতত আশ্বস্ত হতে পারে। সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এই মায়ের অনুরোধ কিংবা চ্যালেঞ্জটুকু গ্রহণ করবেন না কেন?
মাহমুদা বেগম বলেন, আমি মাহমুদুর রহমানের অসহায় বৃদ্ধ মা। ২০০৯ সাল থেকেই আমি একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে কেঁদেছি। প্রাণপণে ধৈর্য ধরার চেষ্টা করেছি। আশা পোষণ করেছি সরকারের জিঘাংসারও নিশ্চয়ই একটা শেষ আছে। আমার ছেলে এবং পুত্রবধূকে নিয়ে তিনজনের ছোট সংসার আবার স্বাভাবিক শুরু করার আশাতেই তো আজো বেঁচে আছি। আমারই হয়তো দুর্ভাগ্য, সেই প্রত্যাশা সফল হয়নি। আজো একমাত্র সন্তানের ঘরে ফিরে আসার পথের দিকে তাকিয়ে আছি।
একজন স্ত্র¿ী তার স্বামীর জন্য দেশ-জাতির সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি চান। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে মিথ্যা ভাবেন। একইভাবে একজন মা তার ভাষায় নির্দোষ সন্তানের জন্য আহাজারি করছেন। সারাক্ষণ প্রহর গুনছেনÑ কখন তার একমাত্র সন্তান তার কাছে মুক্ত হয়ে ফিরে আসবে। সেই ব্যথাতুর স্ত্রীর নাম তালেয়া রেহমান। সাংবাদিক শফিক রেহমানের স্ত্রী। একজন মানবাধিকার কর্মী। অন্যজন সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের মা মাহমুদা বেগম। একজন কলেজ শিক্ষিকা, অধ্যাপক। মা এবং স্ত্রী হিসেবে তারা এ সময়ের সাক্ষী। তারা জানেন, সময় তাদের প্রতিকূলে। তাই তারা প্রতিবাদী কিন্তু বিদ্রোহী নন। জনগণ ও রাষ্ট্রের কাছে নালিশ ঠুকেছেন। নির্বাহী বিভাগকে অভিযুক্ত করে উচ্চ আদালতের কাছে ইনসাফ চেয়েছেন। রাষ্ট্র, জনগণ ও উচ্চ আদালত নীরব থাকলে বিধাতা ক্ষমা করবেন কি ।
তথ্যসংগ্রহ ইন্টারনেট হতে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:১২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×