somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রেডিট কার্ড কিভাবে ভাবের বস্তু হয়?

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১০ সালে একটি ব্যাংকের সেলস ডিপার্টমেন্টে পার্টটাইম কাজ করেছিলাম। মূল কাজ হচ্ছে ব্যাংক একাউন্ট খোলানো। পরে দেখলাম ব্যাংক একাউন্টের থেকে ক্রেডিট কার্ড বিক্রিতে লাভ বেশী।



ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার সময় ভাবটাই এমন দেওয়া হয় যে এটা একটা বিশাল 'ক্রেডিট এর বিষয়'! আপনার হাতে একটা ক্রেডিট কার্ড আছে মানে আপনি অন্য মানুষদের থেকে একটু উচা লেভেলের। আপনার বিশাল পারচেজ পাওয়ার আছে, ব্লা ব্লা ব্লা.....!

বেশ অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে জয়ন করা মাত্রই ব্যাংক থেকে লোক হাজির হয়ে যায় ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার জন্য। জনতাও তাতে লাফিয়ে পড়ে।

আসুন, ক্রেডিট কার্ড থাকার কিছু সহজ অর্থ লিষ্ট করিঃ

১. সাধারণ জীবনে আপনার পারজেচ পাওয়ার একেবারেই নেই বললেই চলে; তাই ধারের টাকায় প্রোডাক্ট কিনতে হয়।
২. আপনার পকেটে টাকা নাই; কিন্তু প্রোডাক্ট কেনার সময় ভাব লইলেন আপনি কত্ত টাকার মালিক!
৩. আপনি এটা পছন্দ করেন না যে কেউ আপনার থেকে টাকা নিয়ে ধীরে ধীরে শোধ করলো, কিন্তু আপনি এভাবেই দেনা শোধ করতে পছন্দ করেন।
৪. আপনার সব সময় একটা না একটা দেনা লেগেই আছে (ইন্সটলমেন্ট)।
৫. আপনি অল্প টাকা নিয়ে বেশী টাকা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত!
৬. আপনি দিন নাই রাত নাই ব্যাংকের কাছে হাত পাততে আগ্রহী!
ইত্যাদি ইত্যাদি...............

আমার ক্লাসমেট রুবায়েত। ও চাকরীতে জয়েন করবার পর পর দেখি বউ নিয়া খালি ট্যুর দেয়। তাও দেশে না; বিদেশেই বেশী। সে যেহেতু ফটোগ্রাফার, আমরা চোখের শান্তি পাইতাম সুন্দর সুন্দর ছবি দেখে।

হঠাৎ একদিন রুবায়েত ফোন দিলো, ২লাখ টাকা ধার দরকার। আমার ঐ অবস্থা ছিলো না; ৫০হাজারের মত দিলাম। জানতে পারলাম বউকে খুশি করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই সব ঘোরাঘুরি করেছে; এখন আর টাকা দিয়ে পারছে না। তার উপর চাকরীটাও চলে গেছে একটা সমস্যার কারণে।

আমার অফিসের কলিগ, এক তুর্কি ভদ্রলোক। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নিজের ও স্ত্রীর জন্য আইফোন, বাচ্চাদের জন্য আইপ্যাড, ঘরে ব্যবহারের জন্য ম্যাক আর কিস্তিতে এসইউভি গাড়ি কিনেছেন। এখন করুন দশা। প্রতি মাসে বেতনের প্রায় ৫০%ই চলে যায় কিস্তি দিতে। মরার উপরে খাড়ার ঘা পড়েছে বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে। অফিস থেকে লোন নিয়ে নামীদামী স্কুলে ভর্তি করেছেন। এখন সারাদিন সুযোগ খুঁজতে থাকেন কিভাবে একটু ওভারটাইম বাগানো যায়।

ক্রেডিট কার্ডের একটা সুবিধা আমি পেয়েছি; একটাই, দুইটা না। সেটা হলো, রাত ২টায় হঠাৎ আপনার টাকা দরকার, আপনাকে কারও কাছে চাইতে হবে না। বুথে গিয়ে টাকা তুলে নিলেই হলো।

কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষ এই সুবিধাটাকে মিসইউজ করে। আমাদের অফিসে প্রায় ৫০জন ক্রেডিটকার্ড হোল্ডার আছেন। গতকাল এনাদের মধ্যে ৭জন একটা রেষ্টুরেন্টে আরও ৬/৭জনের সাথে উপস্থিত ছিলো। আমার এক নতুন কলিগ হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলো যে ক্রেডিকার্ড নিতে হলে কি করতে হবে? ঐ ৭জনই হা-হা করে উঠে ক্রেডিট কার্ড কেন খারাপ সেটা বোঝাতে লেগে গেলেন।

পরে ঐ আড্ডা থেকে বের হয়ে ঐ নতুন কলিগ আমাকে বলছিলো যে ঐ লোক গুলা বদ! তারা চায় না যে নতুন কেউ 'ক্রেডিট কার্ড হোল্ডার স্ট্যাটাস' এ যাক! তাই তারা উল্টা সিধা বোঝানোর চেষ্টা করছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৭
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×