প্রত্যাখান করে কে কবে কষ্ট পেয়েছে?
রূঢ়তায় ঠেলে দিয়ে কে কবে কেঁদেছে?
ক'বছর হয়ে গেল- আর দেখা হয় না আমাদের।
যেদিন বললাম- ভিন্ন হোক দু'টি পথ;
মেনে নিয়েছিলে প্রশ্ন না করে
সমস্ত দায়ভার নিজের করে বিদায় নিলে-
সেদিন বুঝিনি আমার দুর্বিনীত ঊন্নাসিকতা-কে
তুমি বিনয় দেখিয়েছিলে সযতনে।
এত ভালোবেসেছিলে কেন এই আমায়?
কেন ঐ চোখে কোনো ঘৃণা দেখিনি?
তোমায় যে শখ শেষে ছুঁড়ে ফেলেছি-
এক সৌখিন প্রতারকের মতো!
তবু কেন বলো বুকের ভেতরে
তোলপাড় হয় নিজের আড়ালে?
আজো চিন-চিন করে মনের গহীনে...
স্মৃতির পিদিম টিটকারী মারে?
আমি শুধু মাথা হেঁট করে রাখি;
প্রবোধ দিয়ে যাই নিজেরে-
এই তো বেশ আছি!
অবশ্য ভালোবেসেছি আবারো,
হৃদয়ে যখন যৌবনের আস্ফালন
প্রেম তো অবধারিত..
'সুস্মিতা' এল অনিবার্যভাবে-
আমার উন্মাতাল দ্বিতীয় প্রেমে-
আবারো সুখ-স্বপ্ন, উদ্ধত কল্পনায় দিন-রাত অবগাহন,
আর হাত ধরে বলা "শুধুই তোমায় ভালোবাসি";
তখনি আচমকা উঁকি দিয়ে যাও পাঁজরের নিচে..
ঠিক কোথায় বলতে পারি না-
অলিন্দ কিংবা নিলয়- কোনো একখানে,
কোনো কথা হয় না তোমার সাথে-
শুধু খণ্ড খণ্ড স্মৃতির ঝলকানি মানসপটে
আর অজান্তেই প্রেয়সীর আলিঙ্গন থেকে জড়সড় হয়ে সরে বসি;
"বলো, ভালোবাসো?" - সুস্মিতার চোখের চাহনির সামনে
আমি ক্রমশঃই ক্ষুদ্র হতে থাকি নিজের মাঝে
অপরাধীর মতো চোরা চোখে চেয়ে বলি
"পৃথিবীর সবচাইতে বেশি ভালোবাসি তোমায়";
বিশ্বাস করো,
ভালোবাসা শব্দটা তখন বড়-ই ঠুনকো লাগে আমার
তবে সুস্মিতা বেশ আশ্বস্ত হয়, খানিকটা এগিয়ে দেয় নিজেকে..
আমিও কিছুটা সাহসী হই যেন অকস্মাৎ
ছুঁয়ে দেখি তার গ্রীবা... তারপর ঠোঁট...
তোমার গালের সেই টোল-টা কে
আনমনে খুঁজতে থাকি সুস্মিতার গালে-
আচমকা সম্বিত ফিরে পেয়ে নিজেকে সামলাই-
এ কি করছি আমি!
এ যে দ্বিতীয় প্রতারণা!
অতীত-তাড়িত আমি আবারো
আপ্লুত হতে চাই সুস্মিতার ভালোবাসায়,
কিন্তু গলার কোথায় যেন দলা পাকায় অপরাধবোধ
অশ্রু-শূন্য এই আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ-
সুস্মিতা দেখে না, দেখো না তুমিও...
নিজেকে লুকিয়ে স্বাভাবিক হই বরাবরের মতো
প্রতি মুহূর্তেই... সুকৌশলে...
এ এক নিদারুন অভিনয়-
বেঁচে থাকার... ভালোবাসার... ভুলে থাকার...
প্রত্যাখান করে কে কবে কষ্ট পেয়েছে?
রূঢ়তায় ঠেলে দিয়ে কে কবে কেঁদেছে?
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:১৪