somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বালি-পোজনান-কোপেনহেগেন-কানকুন: কান্নাকাটির ইতিবৃত্ত

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৭ এ জ্বলবায়ু বিষয়ক বালি সম্মেলনের পরে ২০০৮ এর পোজনান সম্মেলন নিয়ে কারো কোন আশা ছিলনা। কোন কোন ক্ষেত্রে পোজনান সম্মেলনকে মনে হয়ে হচ্ছিল নিয়মরক্ষার আনুষ্ঠানিকতা। আবার কোন কোন ক্ষনে মনে হচ্ছিল বালি সম্মেলনের সাফল্যোর প্রত্যাশার ঢেকুর। সবারই আচরন বলে দিচ্ছিল যেহেতু ২০০৯ এ তো সব কিছু পেয়ে যাচ্ছি সেহেতু পোল্যান্ডের এই হাড্ডি জমানো ঠান্ডায় অহেতুক কষ্ট করে কি হবে। বসে বসে আড্ডা পিটানো হলো কনফারেঞ্ছ সেন্টারের ভিতরে। ২০০৯ এ কোপেনহেগেন এলো, হাড্ডি কাপানো ঠান্ডা ঠিকই ছিল কিন্তু সাথে ছিল প্রত্যাশার বহর। বহরের ভাবে কোপেনহেগেনের নাম হয়ে গেলো 'হোপেনহেগেন'। প্রত্যাশার শাড়ীর আঁচল ১২ হাত ছাড়িয়ে ইনফিনিটিতে চলে গিয়েছিল। লাখ লাখ কোটি ডলারের প্রত্যাশা, সুবোধ বালকের মত উন্নত বিশ্ব তাদের সব কার্বন নির্গমন বন্ধ করবে সেই প্রত্যাশা, পেটিবুর্জোয়া দেশগুলো অবাধে কার্বন ছড়াবে সেই প্রত্যাশা ইত্যাদি এবং ইত্যাদি। আশার চাপে কোপেনহেগেন সম্মেলন হয়ে গেলো শেষ পর্যন্ত 'ব্রোকেনহেগেন'। কেউ বাড়ি ফিরলেন খালি টাকার বস্তা নিয়ে, কেউ ফিরলেন দির্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে আর কেউ ফিরলেন কিছু একটা করেছি এই স্বমেহনের অনুভুতি নিয়ে।


আর বর্তমান কানকুন সম্মেলন সেই সম্মিলিত হতাশার নির্গমনস্থল।গতবারের মত উত্তেজনা নেই, আবেগ নেই, আহ্বলাদ নেই। মনে হচ্ছে দীর্ঘ এক ব্যার্থ যাত্রাশেষে একদল লোক হতাশাভরা চোখে একে অন্যোর দিকে তাকিয়ে আছে। সেই হতাশার চোখগুলোতে আছে কারো হাযার কোটি টাকা না পাবার বেদনা আবার বিশুদ্ধ পরিবেশবাদীদের রয়েছে 'কিচ্ছু করতে পারলাম না' ধরনের বেদনা। ফলে কানকুন একটি যাত্রাবিরতি সম্মেলন ছাড়া আর কিছুই না। মাঝে থেকে কিছু অতিরিক্ত কার্বন 'চিয়ার্স' বলার সময়ে বেরিয়ে গেলো আর কি। হু কেয়ারস্‌? হাজার হলেও ১৬তম সম্মেলন। ১৬তেই তো ষোড়শী।


লম্বা ভুমিকার কারনে এই নোটের আসল ম্যাসেজটাই হারিয়ে যাবার জোগার। কেনো প্রতিটি সম্মেলন শেষে এই হতাশা? হতাশাটা অবশ্যই আমরা যারা টাকার খালি বস্তা নিয়ে যাই অবশ্য তাদেরই বেশী। কারন কোনবারই ই টাকা পাইনা। প্রতিবারই একই ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো হচ্ছে। উন্নত বিশ্ব তাদের নিজেদের দেশকে উন্নত করার জন্য বেশী বেশী কার্বন খরচ করেছে তাই জ্বলবায়ুর এমন দুর্দশা ব্লা ব্লা। কথা সত্যি কিন্তু নির্বোধের স্বগোতোক্তি ছাড়া আর কিছুই না। তাদের অধিকার আছে, নিজেদের বুদ্ধি খরচ করে নিজেদের উন্নত করেছে। এর কারনে জ্বলবায়ুর চুড়ান্ত সর্বনাশ হলেও অনুন্নত বিশ্ব যে ক্ষতিপুরনের টাকা চাচ্ছে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত দাবী? তাদের মত ক্ষমতা, বুদ্ধি আমার দেশের থাকলে কি আমরা কি আঙ্গুল চুষতাম। আমরা পারিনি এটাই সত্য। ক্ষতিপুরনের টাকা চাওয়াটা নিজেদের দেউলিয়াত্ত্ব প্রকাশ করাটা ছাড়া আর কিছুই না।


এখনো হয়তো কিছু সময় আছে বা যেটুকু আছে সেটুকু নিয়েই আমাদের সামনে আগানো উচিত। বসতরান্তিক হতাশা বাদ দিয়ে নিজেদের পক্ষেই অনেক কিছু করা সম্ভব। সেগুলো ভুলে বসতরান্তে কান্নাকাটি করে ক্রমশ বৃদ্ধিরত সমুদ্রের লোনা পানির সাথে চোখের লোনা পানি এক করে আরেকটু বাড়ানো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নশীল অভ্যাসে রুপ নিচ্ছে। এই কান্নাকাটি বন্ধ করে নিজেরা যদি কিছু না করতে পারলে অর্ধেক দুনিয়া পাড়ি দিয়ে এই কার্বন টোষ্টিং বন্ধ করাই ভালো। আর যদি 'না কাদলে মায়ে দুধ দেয়না' এই নীতি সার্বজনীন হয় তো চলুক।।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×