ঘোষিত সময় ছিল ৮.৪৫, ঐ সময়েই জাদুঘর প্রাঙ্গনে সবার মিলিত হবার কথা। আমি একটু আগেই চলে গিয়েছিলাম, ৮.২০ এর দিকে ওখানে পৌঁছেই প্রথমে দেখা জানা আপুর সঙ্গে। পরে সামহোয়্যার টীম এর অন্যান্য সদস্যদের সাথেও পরিচিত হলাম। ৯.২০ নাগাদ প্রায় অনেক ব্লগার এসেই হাজির হলেন। ৯.৩০ এর দিকে শুরু হল র্যালী শুরু হল। র্যালীটি জাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে ফুলার রোড, শহীদ মিনার ঘুরে আবার জাদুঘর প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। মাঝে চ্যানেল আই আমাদের সেই র্যালী কাভার করেছে। র্যালী শেষ হওয়ার পর আমরা বেশ কয়েকজন মিলে শাহবাগ এর কোহিনুর এর কলিজা সিঙ্গারা খেলাম

। খাওয়া শেষ করে আমরা রওনা দিলাম সামহোয়্যার এর অফিসের দিকে। পথে বিশাল জ্যাম ছিল, আমরা ভেবেছিলাম অফিসে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যাবে আজকে, কিন্তু আমাদের সিএনজি চালক বুদ্ধি করে Wrong Side দিয়ে যাওয়াতে আমরা জ্যামটা পাশ কাটিয়ে তাড়াতাড়ি অফিসে পৌঁছতে পেরেছি। সেখানে পৌঁছার পর প্রথমেই আরিলের বানানো বিশেষ পিঠা খেলাম আমরা সবাই। অনেকেই পিঠার পুরো একটা প্লেট একাই সাবাড় করার চেষ্টায় ছিল

, কিন্তু বাকীদের প্রতিবাদের মুখে তাদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে

। যাই হোক, এর পর শুরু হল আলোচনা অনুষ্ঠান, যেখানে প্রথমে আরিল সামহোয়্যার এর জন্মের ইতিহাস বললেন, পরে অন্যান্য ব্লগাররা মুক্তিযুদ্ধ , বিজয় দিবস নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক অনেককিছু বললেন, অনেকে নিজস্ব ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক, যেগুলো শুনতে বড়ই বেদনাদায়ক ছিল। আলোচনা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে অন্যান্য ব্লগার, যারা সকালের র্যালী তে ছিলেন না, তারা অফিসে এলেন। এর মাঝেই অনেকেই অফিসের পিসি থেকে যার যার নিকে লগিন করে আজকের অনুষ্ঠান নিয়ে
আরিলের পোষ্ট আর
কৌশিক ভাই এর পোষ্ট এ কমেন্ট করলেন। এরই মাঝে চটপটি, ফুচকা, চা এর আয়োজন ছিল। আমি শুধু একপ্লেট চটপটি খেয়েছি আর শুরুতে সেই সুস্বাদু পিঠা খেয়েছি, আর কিছু খেতে পারিনাই

।
যাই হোক, ব্লগের নতুন নতুন অনেক বিভাগ নিয়ে ব্লগারদের আলোচনা, পরামর্শ এগুলো চলতে চলতে একসময় শেষ হল। প্রায় ১.৩০ এর দিকে অনুষ্ঠান শেষে সবাই একে একে বিদায় নিতে শুরু করলেন। বিদায় নিয়ে সবাই যখন লিফট-এ করে নিচে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন কৌশিক ভাই খুব ভাব সহকারে লিফট-এর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, লিফট-এর কাজ চলছে, লিফট যাবেনা (আসলে কৌশিক ভাই একা পুরো লিফটে যেতে চাচ্ছিলেন

)। লিফট-এর দরজা খোলার পর দেখা গেল ভেতরে দুজন কর্মী কাজ করছে , লিফট সত্যিই যায়নি তখন নিচে। শেষে হতভম্ব কৌশিক ভাই পুরা ধরা খাইয়া আমাদের সাথে সিঁড়ি দিয়ে নামতে বাধ্য হলেন

।
পুরো আয়োজনটার জন্য আরিল,জানা আপু এবং সামহোয়্যার টীম এর অন্যান্য সদস্যদের সকল ব্লগারদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানের কিছু ছবিঃ
র্যালী'র মূল ব্যানার
সামহোয়্যার অফিসের ভিতরে
একজন পেটুক ব্লগার
আরেকজন পেটুক ব্লগার
ব্যানার এবং জাতীয় পতাকা, সামহোয়্যার অফিস
আপডেটঃ
কিন্নরী পড়েছিল লাল জামা, আর আইরিন আপু ছিলেন সবুজ শাড়ীতে। এটা নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে একটি মজার কথোপকথন হয় অনুষ্ঠানেঃ
- হাই কিন্নরী ...
- (কিন্নরী অচেনা মানুষ দেখে একটু ইত:স্তত করে)
- বাহ! তুমি লাল আর আমি সবুজ....তুমি আমি মিলে কি হয় বলো তো?
- (কিন্নরী চুপ)
- আইরিন আপুঃ ফ্ল্যাগ হয়, কিন্তু কিসের ফ্ল্যাগ হয়...
- (কিন্নরী বলি বলি করেও বলেনা)
- পাশে জানা আপু বলে, তুমি জানো না আম্মু কোন দেশের ! আইরিন আপু, জানা আপু পরপর বলে "বাংলাদেশ"
এরপর কিন্নরী আইরিন আপুর হাত ধরার জন্যে নিজে থেকেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, "কিচেনে চলো।" এই কথা শুনে আইরিন আপু,জানা আপু দুজনেই অবাক।
কিচেনে একটি টেবিলের সামনে আইরিন আপুকে দাঁড় করিয়ে দিল কিন্নরী। আইরিন আপু দেখলেন টেবিলে একটা বাস্কেটের ওপর বাংলাদেশের পতাকা রাখা।
এরপর কিন্নরী আইরিন আপুকে পাশের আরেকটি রুমে নিয়ে যায়, যেখানে টেবিল টেনিস বোর্ড রাখা। কিন্তু তখন সবাই চলে যাচ্ছিল, আইরিন আপুরও ফেরার তাড়া ছিল। তখন আইরিন আপু কিন্নরীকে বললেন ,
“কিন্নরী আমি এখন যাবো।”
কিন্নরীর প্রশ্ন, “কেন যাবে? ”
- ওই যে, সবাই যাচ্ছে, না গেলে বকবে তো ...
-বাসায় যাবে ?
-হু
-কেন বকবে ?
-দেরী হয়ে যাচ্ছে যে?
-কেন দেরী হবে ?
(

বাচ্চাদের প্রশ্নের শেষ নেই....)
-আসি কিন্নরী, টা-টা
-কিন্নরী মাথা নাড়ে
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৩