দূরপাল্লার বিলাসবহুল অনক বাসের টিকেট আগেই লাপাত্তা
ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে কাল সাত টার্মিনাল থেকে বিক্রি চলবে ৫ দিন
: এবার কুরবানির ঈদে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি পৌঁছে দিতে আগামীকাল বুধবার থেকে দেশের সাতটি টার্মিনালে বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু ঈদ সামনে দূরপাল্লার অনেক পরিবহনের বাসের টিকেটও এখন মিলছে না কোন কাউন্টারেই। তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, বেশি দামে কালোবাজারীর মাধ্যমে এখনো কিছু টিকেট বিক্রি করছে পরিবহন শ্রমিক নামধারী কেউ কেউ। তবে সাধারণ মানের অনেক পরিবহনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি ইতোমধ্যেই শুরু হলেও দাম নেয়া হচ্ছে বেশি। অনেক যাত্রী ভোর রাত থেকেই ছুটছেন নগরীর কাউন্টারগুলোতে। তবে অনেকে ফিরছেন হতাশ হয়ে শূন্য হাতে। বিশেষ করে ঈদের আগের দু'দিনের কোন টিকেটই মিলাতে পারছেন না যাত্রীরা। তবে যারা বাসের কোন অগ্রিম টিকেট পাচ্ছেন না তাদের শেষ ভরসা এখন ট্রেন।
এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হয়ে বিক্রি বিরতিহীনভাবে চলবে আগামী ২২ নবেম্বর পর্যন্ত। আর সরকারি বাস পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি প্রতিবছরের ন্যায় এবার ঈদেও চালু রাখবে তাদের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস। অন্যদিকে নদী পথে যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বেশি ভাড়ায় অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়। আর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে এই বলে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে যে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন কিংবা টিকিটের অতিরিক্ত দাম নেয়া হলে গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হবে। তবে সরকারের ঘোষণার বাস্তবায়ন কতটুকু তা দেখা যাবে কার্যকর ক্ষেত্রে তার প্রয়োগের উপরেই। যাত্রীরা জানান, সরকারের এই ঘোষণা যেন প্রতিবছরের মতো শুধুমাত্র কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ না থাকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, আগামীকাল বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হচ্ছে। সম্ভাব্য ঈদ উদযাপনের তারিখ হচ্ছে ২৮ নবেম্বর। অগ্রিম টিকেট বিক্রি চলবে আগামী ২২ নবেম্বর পর্যন্ত। সূত্র জানায়, প্রথম দিনে বুধবার দেয়া হবে ২৩ নবেম্বরের যাত্রার টিকিট, ১৯ তারিখ দেয়া হবে ২৪ নবেম্বরের তারিখের যাত্রার টিকিট, ২০ তারিখে দেয়া হবে ২৫ নবেম্বর তারিখের টিকিট, ২১ তারিখ দেয়া হবে ২৬ তারিখের টিকিট, ২২ তারিখে দেয়া হবে ২৭ নবেম্বরের তারিখের যাত্রার টিকিট।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কমলাপুর টার্মিনালের স্টেশন ম্যানেজার এম এ জিন্নাহ গতকাল দৈনিক সংগ্রামকে জানান, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির এই সব দিনেও পাশাপাশি ট্রেনের নিয়মিত টিকিটও বিক্রি করা হবে। একজন ক্রেতাকে এক সময়ে সর্বোচ্চ চারটির বেশি টিকিট দেয়া হবে না। আর টিকেট কালোবাজারীদের ধরতে এবছর নেয়া হবে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা। এছাড়া এবার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ৭টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া ঈদে বিশেষ সার্ভিসের অধীনে প্রতিটি ট্রেনের সাথেই অতিরিক্ত বগি বা কোচ সংযুক্ত করা হবে। আর আন্ত:নগর ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হবে কমলাপুর, বিমানবন্দর, গাজীপুর, চট্রগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা স্টেশন থেকে।
সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির এক কর্মকর্তা দৈনিক সংগ্রামকে জানান, বিআরটিসি এবছর ঈদ উপলক্ষে ঈদের আগে ও ঈদ পরবর্তী দশদিনের জন্য ঈদ স্পেশাল সার্ভিস চালু রাখবে। বিআরটিসি তাদের নিয়মিত ভাড়ার চার্ট অনুযায়ীই সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করবে। কোন অবস্থাতেই বিআরটিসি যাত্রীদের নিকট থেকে ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করবে না।
বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, এবার ঈদে লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন কঠোরহস্তে প্রতিরোধ করা হবে। যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ও বন্ধ করা হবে। অতিরিক্ত যাত্রী বহন কিংবা বেশি ভাড়া আদায় কররে অভিযুক্ত লঞ্চ মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।