somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকের ধর্মকথার বিশ্বকাপ ফুটবল দরশন ২ ..... (গ্রুপ পর্বের পর)

২৭ শে জুন, ২০১০ সকাল ১১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গ্রুপ পর্বের রিভিউ দিয়ে শুরু করছি .......
স্পেন: আগের পোস্টে স্পেনের কথা বিশেষ করে বলেছিলাম। বলেছিলাম- এবার স্পেন যেরকম দল নিয়ে আফ্রিকা গিয়েছে- তাতে তাদের বিশ্বকাপ না জেতাটাই চরম অঘটন।

কিন্তু ১ম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হারার পরে অনেকে টিটকারি করে উঠেছিল, ভাবটা এমন - বিশ্বকাপ ফুটবলের মঞ্চটা কখনো স্পেনের জন্য ছিল না, এবারেও নেই। যাহোক পরবর্তী দুটো ম্যাচে স্পেন তার জাত চিনিয়ে ঠিকই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২য় রাউন্ডে। যদিও আমার ধারণা- এখনও স্পেন তার আসল সমার্থ্যের পুরোটা ঢেলে দিতে পারেনি...
মূল অস্ত্র, কারিগর জাভি এখনো আসল চেহারায় আসেনি। ইনিয়েস্তা, রামোস ছাড়া বাকিদের এমনকি ডেভিড ভিয়ার আসল খেলা এখনও দেখিনি বলেই মনে হয়।

ইতালি/ ফ্রান্স: এদের ১ম রাউন্ডে বিদায়টা খুব স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছে। চরম নড়বড়ে দুটো দল নিয়ে এরা এসেছিল- ফলাফল এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। যদিও ইতালী-স্লোভাকদের খেলার শেষ ১৫ মিনিটের খেলাটা এ পর্যন্ত এ বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠ। অসাধারণ টানটান খেলা খেলেছে দুদল শেষ ১৫ মিনিটে।

ইংল্যান্ড ইংল্যান্ড সবচেয়ে হতাশ করেছে। অন্য কয়েকবারের তুলনায় এবারের ইংল্যান্ডের দলটা কিছুটা শক্তপোক্ত মনে হচ্ছিল। কিন্তু, কেউই আশানুরূপ খেলতে পারছে না। এদের বেশীদূর এগুতে পারার কথা নয়।

জার্মানি: জার্মানির খেলা আমার কখনোই ভালো লাগে না, কিন্তু বিশ্বকাপের জার্মানিকে আলাদা গুরুত্ব দিতেই হয় সবসময়। এবারেও ১ম ম্যাচেই জার্মানি আবার সে কথা মনে করে দিয়েছিল। কিন্তু একইভাবে ২য় ম্যাচে সার্বিয়ার কাছে হেরে- হতাশ করেছিল। ঘানাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ২য় রাউন্ডে গেলেও- জার্মানি এবার খুব বড় কিছু করবে বলে মনে হচ্ছে না।

পর্তুগাল/ আইভরি কোস্ট: রোনালদো আর দ্রগবার জন্য এই দুটো দলের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। হাত-ভাঙ্গা দ্রগবা ছায়া হয়েই ছিল। রোনালদোর কিছু ঝলক দেখা গেলেও- পর্তুগালের খেলা তেমন আহামরি কিছু মনে হয় নি।

হল্যান্ড: হল্যান্ড নীরবে নিভৃতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ২য় রাউন্ডে গেলো। তারপরেও হল্যান্ডরে নিয়ে উচ্চকিত হওয়ার কিছু নেই- গ্রুপে সব কটাই দুর্বল দল ছিল।

আর্জেন্টিনা: আর্জেন্টিনার খেলা ভালো লেগেছে। মেসির খেলা দেখাটা খুবই দৃষ্টিসুখকর বিষয়। ফলে, আর্জেন্টিনার খেলা দেখাটাও আনন্দের বিষয়। আগের পোস্টে যেটা বলেছিলাম- ভেরনকে দিয়ে গোল বানানোর কাজ সম্ভব নয়- এ কাজটা মেসিকেই করতে হবে। মেসিকে সে ভূমিকাতেই দেখছি। ২য় ম্যাচের লাইন-আপটাই পারফেক্ট মনে হয়েছে। ভেরনের পরিবর্তে রদ্রিগেজ, পাস্তোর, মাচোরানোরাই মেসির যথার্থ সহযোগী হতে পারে। রক্ষণভাগকে খুব বড় পরীক্ষা দিতে না হলেও- বুঝা গেছে এটাতে ভালো সমস্যা আছে। সামনে খবর আছে।

ব্রাজিল: ব্রাজিলের ১ম ও ৩য় ম্যাচ হতাশ করলেও ২য় ম্যাচে বুঝা গেছে- ব্রাজিল কি জিনিস। ফরোয়ার্ডে সেরকম আহামরি খেলোয়াড় না থাকলেও- ব্রাজিল অসাধারণ কারণ টোটাল টিম ওয়ার্ক। ২য় ম্যাচটা দেখে মনে হয়েছে- একটা পুরো দল খেলছে। নিখুত পাসিং তো ছিলই, ডিফেন্সে লুসিও- আর সিজাররা থাকলে বিপক্ষ দলের আক্রমণ নিয়ে চিন্তার তেমন কিছু থাকেও না।

নক-আউট পর্ব: নকআউট পর্বের ফিকশ্চার দেখে মনে হলো, ব্রাজিল খুব ভাগ্যবান- আর আর্জেন্টিনার পোড়া কপাল। তবে এটাও ঠিক- ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মত কোন দলের ২য় রাউন্ডেই বিদায় নেয়াটা ভালো হতো না, তার তুলনায় সেমিফাইনালে বিদায় নেয়াটা অনেক ভালো।

বুঝতেই পারছেন- কি বলতে চাচ্ছি। ২য় রাউন্ডে স্পেনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না কাউকে। ব্রাজিল হবে ফাইনালে আর আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে। তার আগে অবশ্য ব্রাজিলকে হল্যান্ড আর আর্জেন্টিনাকে জার্মানি বাঁধা পেরুতে হবে।

লাটিন ফুটবল নিয়ে দুটো কথা বলেই শেষ করি- ইউরোপের এক স্পেন ছাড়া এবার সেমিফাইনালের তিনটা দলই লাটিন আমেরিকার হতে যাচ্ছে বলে মনে হয়। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-উরুগুয়ে। অনেকে ফিকশ্চারের দোষের কথা বলছেন (ঘানা- উরুগুয়ে-দ: কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র), কিন্তু আমার মনে হয় উরুগুয়ের এই দলটা ইংল্যান্ড- পর্তুগালের চেয়েও ভালো, অর্থাৎ ঘানা-কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বদলে ইউরোপের এইসব কাগুজে বাঘরা থাকলেও তারা কিছু করতে পারতো বলে মনে হয় না। তবে, সেমি ফাইনালে ৭৫% লাটিন, ফাইনালে ১০০% হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম, এমনকি শেষ হাসিটাও এবার লাটিন নাও হাসতে পারে। কারণ ঐ স্পেন। তবে আপনারা স্পেনকে লাটিন হিসাবে ধরতে পারেন, কারণ সেতো কখনো ঐ ইউরোপের কুৎসিত ঘরানার ফুটবল খেলেনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১০ সকাল ১১:৪৬
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প- ৯৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২৮




দুই ভাইবোন। আপন দুই ভাইবোন।
ভাই-বোন দু'জন আলাদা হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। কথাবার্তা নেই। একজন যেন আরেকজনের শত্রু। বাপের সম্পত্তির কারণে আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:১২


এই উষ্ণতায় ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই নদীতে সমুদ্দুরে
বালুচরে হেঁটে বেড়াই,
ঢেউয়ে থাকি বসে, জল এসে ছুঁয়ে দিক আমায়,
হিম হাওয়া এসে ভাসিয়ে নিয়ে যাক সুখের সপ্ত আসমানে।

এই বৈশাখে ইচ্ছে করে পুকুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি শেষ কবে একটি বই পড়েছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২


আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ্ব বই দিবস। অনেকেই একে বলেন ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বই, লেখক এবং কপিরাইট রক্ষার বার্তা নিয়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেমিট্যান্সযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:১৫

টাকা পাচারকারীদের ধরা খুব মুশকিল বলে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, টাকা পাচারকারীদের যদি কোনোভাবে ধরতে পারেন, তাহলে ছাড় দেবেন না। আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিশুদের গুড টাচ ব্যাড টাচ শেখানো আপনার দায়িত্ব

লিখেছেন অপলক , ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৩৪

বর্তমানে বাংলাদেশে একক পরিবার বেশি। আগের যুগে যৌথ পরিবারে শিশুরা বয়োজৈষ্ঠ্যদের কাছে অনেক কিছু শিখত, নিরাপত্তা পেত। এখন সে সুযোগ অনেকটাই কম। কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ৫ বছরের শিশুও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×