এক সময় ইন্টারনেটের জন্য সাবমেরিন কেবল সংযোগ দেয়া হয়নি দেশের "গোপন তথ্য" পাচার হয়ে যাবার ভয়ে। এখন শুরু হয়েছে মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশনে আঙ্গুলের ছাপ দেয়া নিয়ে বিতর্ক। এখন যা অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশনের বিরোধীতা করে ফেসবুকে/ব্লগে একটা পোস্ট না দেয়া মানে হলো আমি সচেতন নাগরিকই না... তেমন স্মার্ট না আর কি। যে কম্পিউটারের মাউসই ঠিকমতো নাড়াতে পারেনা, সেও দেখি পোস্ট দিচ্ছে ফেসবুকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির বিরোধীতা করে! সিম রেজিস্ট্রেশনের সময় আঙ্গুলের ছাপতো আগেও দিয়েছে সবাই ফরমে, তবে সেটা কালির ছাপ, ডিজিটাল না। তখন কোন সমস্যা হয়নি, এখন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখন যেটা করা হয়, আঙ্গুলের ডিজিটাল ছাপ ন্যাশনাল আইডির ডেটাবেজের সাথে মিলিয়ে দেখা হয়, মিলে গেলে সিম ওনারের প্রোফাইলটা ভেরিফাই করে দেয়া হয়, ছাপটা আর স্টোর করা হয়না কোথাও। আগে বরং ফরমে আঙ্গুলের কালির ছাপটা থেকে যেতো অপারেটরের কাছে। তাহলে আঙ্গুলের ছাপের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কোনটা বেশি নিরাপদ, ডিজিটাল না কালির ছাপ? আমার ন্যাশনাল আইডি দিয়ে আমি সিম কিনলাম, দোকানদার ইচ্ছা করলে সেই আইডি কপি করে একজন সন্ত্রাসীর কাছেও সিম বিক্রী করতে পারতো। বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ফলে এই কাজটা কিন্তু সে করতে পারবেনা। এটা আমাদের ভালোর জন্যই।
আমাদের এখন অবস্থা হয়েছে "ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়" টাইপের। ভালো কিছু দেখলেও ডরায়, খারাপ কিছু দেখলেও ডরায়। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে এরকম যেকোন তত্ত্ব খুব দ্রুত ছড়ায় আমাদের মধ্যে, এটা আমরা খুব উপভোগ করি, ভালো-মন্দ বিচারের ধার ধারিনা। কাউকে ফাঁসাতে চাইলে আঙ্গুলের ছাপ ছাড়াও অনেক ভাবেই তাকে ফাঁসানো সম্ভব। বার বার সিম রেজিস্ট্রেশন অবশ্যই খুব বিরক্তিকর, তবে সরকার একটা ভালো কাজ করছে, আমার মনে হয় আমাদের উচিৎ সেটাতে সহযোগীতা করা।